E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

১৫ দিনেও  স্লুইস গেট মেরামত হয়নি,৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী

২০১৫ জুলাই ২৮ ১৬:১৮:৪৩
১৫ দিনেও  স্লুইস গেট মেরামত হয়নি,৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :গত ১৫ দিন ধরে চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের (সিআইপি) আওতাধিন লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের বেড়িবাঁধের স্লুইস গেট অকেজো হওয়ায় প্রকল্পের ভেতরে বাইরের ¯্রােতের বেগে পানি ঢুকে পড়ছে। এতে প্রকল্প এলাকার পৌর শহরসক তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার ১৫ দিন ধরে পানিবন্দি জীবনজাপন করছেন। বিষয়টি সিআইপি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানালেও এখনও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। এছাড়াও রামগঞ্জে দায়িত্বে কর্মকর্তা অফিসেও আসেন না গত ২ বছর ধরে।

এতে ৩টি ইউনিয়নের আমন বীজতলা, পুকুরের মাছ ও মাছের ঘের ডুবে প্রায় অর্ধ লাখ টাকা ক্ষতির দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্থরা। অনেকেই চলে যাচ্ছে বাড়ী ছেড়ে পৌর শহরের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাদঁপুর সেচ প্রকল্পের বড় খালের বাঁধে দাসপাড়া গ্রামের চনখলায় ২০০৫ সালে প্রকল্পের পানি নিষ্কাশনের জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। স্লুইস গেটটি নির্মাণের ২ বছরে মধ্যে একটি ডালা চুরি হয়ে যায়। পাশে থাকা ডালাটি এ বছর নষ্ট হয়ে নিচে পড়ে যায়। এদিকে চলতি মাসের শুরু থেকে টানা বৃষ্টিতে পানি বেড়ে যাওয়ায় ¯্রােতের বেগে ওই গেই দিয়ে প্রকল্পের ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে পৌল শহরের দাসপাড়া, তরনপুর, বাসঘর, আঙ্গারপাড়া ও ৪ নং ইছাপুর, লামচর এবং চন্ডিপুর ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার গত গত ১৫ দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনজাপন করছেন। অনেকই বাড়ী ঘর ফেলে ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে পৌর শহরে গিয়ে ভাড়া বাসায় উঠছেন। এনিয়ে দ্য রিপোর্টসহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমে সংবাদি প্রকাশিত হলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এছাড়াও দায়িত্ব থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ইদ্রিস আলী গত দু’বছর রামগঞ্জ অফিস না করে চাঁদপুর অফিসে বসে বেতন তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

দাসপাড়া গ্রামের মো. নুরুল হুদা বলেন, ‘স্লুইস গেটের ডালার সমস্যার কারণে রাতদিন বাঁধের বাইরের পানি প্রকল্পের ভেতরে প্রবেশ করছে। আমরা একাধিবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে বলেও কোনো লাভ পাচ্ছি না। রামগঞ্জে দায়িত্ব থাকা ইদ্রিস আলী গত দু’বছর রামগঞ্জে আসেন না। আর কত অভিযোগ ও কত গ্রাম ভেসে গেলে তারা এখানে আসবে বলে পারেন কী ভাই?

আঙ্গারপাড়া গ্রামের কৃষক মো. নজরুল ইসলাম জানান, দিন দিন পানি বাড়তে দেখে গৃহপালিত পশু-পাখি নিকট আত্মীর বাড়িতে রেখে পৌর শহরের ভাড়া বাসায় উঠছে।

লামচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মফিজ উল্যাহ বলেন, বিষয়টি চাদঁপুর সেচ প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার অবহিত করার পরও তারা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পানিতে ডুবে মানুষ মরে গেলেও মনে হচ্ছে তাদের কোন কিছু করার নেই। কোন দেশে বসবাস করছি গত ১৫ দিনেও অকেজো স্লুইস গেটি মেরামত করা হচ্ছে না। রামগঞ্জ কার্যালয়েও গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না। এই স্লুইস গেটির জন্য এখন পুরো রামগঞ্জ পানিবন্দি হুমকির মুখে পড়ে আছে।

এ বিষয়ে জানতে রামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ইদ্রিস আলীর বলেন, বাতাস আর পানিকে কেউ আটক করে রাখতে পারে না। ¯্রােতের সারাদেশেই এখন পানি। বিভিন্ন সমস্যার কারণে রামগঞ্জ চাওয়া হচ্ছে না। ফোনে করে ওইস্থানে লোক পাঠানো হয়েছে। এখন পানি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

রামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, আমিও বিষিটি সিআইপি কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার বলিছি। কিন্তু তা কোন কর্ণপাত করছে না। সিআইপির কারনেই এখন হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি।

সিআইপি তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী কামরুর নাহার বলেন, আমাদের লোকবল কম থাকায় যে কোন কাজ দ্রুত করা সম্ভব হয় না। খোজ খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে কুমিল্লা বিভাগের প্রধান মোছাদ্দেক হোসেন জানান, আপনাদের কাছে শুনার পরেই দায়িত্বে থাকা ইদ্রিস আলীকে বলা হয়েছে পানি বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া জন্য।


(এমআরএস/এসসি/জুলাই ২৮, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test