E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কলাপাড়ায় দেবপুর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন

২০১৫ জুলাই ২৯ ১৩:১৪:০১
কলাপাড়ায় দেবপুর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙ্গন

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: বাঁধ ভাঙ্গা আতংকে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চম্পাপুর ও ধানখালী ইউনিয়নের সহস্রাস্রাধিক পরিবার। দুই ইউনয়নের সংযোগ ৫৪ নং পোল্ডারের দেবপুর বেড়িবাঁধের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যে বাঁধের এক তৃতীয়াংশ গত এক সপ্তাহে বিলীন হয়ে যাওয়ায় বাঁধের উপর দিয়ে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রাবনাবাদ নদীর উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে প্রতিদিনই বাঁধ ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেলেও বাঁধ রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সরেজমিনে দেবপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গা বাঁধ রক্ষায় প্রটেকশন বাঁধ করা হলেও সেই বাঁধও ভেঙ্গে যাচ্ছে। বাঁধের সংযোগস্থলে আড়াই হাজার ফুট রিং বাঁধ করা হলেও নিম্মমানের কাজের কারণে সেই বাঁধে সুরঙ্গ সৃষ্টি হওয়ায় অন্তত ১৩ টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। গত এক দশকে এই বাঁধ ক্রমশ ভাঙ্গলেও বাঁধ প্রটেকশনের পরিবর্তে ক্রমশ বাঁধ রক্ষার নামে ক্রমশ লুটপাট হওয়ায় বাঁধ সংলগ্ন মানুষের দূর্ভোগ কাটেনি। এ কারনে বাঁধ ভেঙ্গে বাঁধের বাইরের ও ভেতরের অন্তত তিন শতাধিক পরিবার গৃহহীন হয়েছে।

দেবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য হাবিব মোল্লা জানান, বাঁধের এখন যে অবস্থা তাঁতে যেকোন সময় বাঁধ ভেঙ্গে দেবপুর, চালিতাবুনিয়া, পাটুয়া, মাছুয়াখালী, গোলবুনিয়া, বিনামকাটা এবং ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা, পাঁচজুনিয়া, নিশানবাড়িয়া, মধুপাড়া, দাসের হাওলা, অশোতলা, ছৈলাবুনিয়াসহ ১৩টি গ্রাম রাবনাবাদ নদীর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যেতে পারে।

দেবপুর বাঁধ সংলগ্ন সিদ্দিক মৃধা, রাজ্জাক মৃধা বলেন, “জোয়ার হলেই বাঁধ ভাইঙ্গা যায়। বড় বড় জোয়াল লইয়া মাডি পইড়্যা এ্যাহন আর বান্দের উপর দিয়া হাডতেও ভয় লাগে। আগে ভ্যান, টমটম চলতো এইহান দিয়া। এ্যাহন মানুষ চলতেও ভয় করে। কহন যে জোয়াল লইয়া সব কিছু ভাইঙ্গা পড়ে মোরা এই টেনশনে আছি।

স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, প্রায় দুই হাজার একর জমিতে এবার চাষাবাদ নিয়ে উদ্বিগ্ন কৃষকরা। কারন ২/৩ ফুট বাঁধ ভাঙ্গা বাকি আছে। কিন্তু সেটুকুও রক্ষা করা না গেলে এবার ফসল ও আশ্রয় সবই হারাবে এখানকার মানুষ। তবে এই বর্ষা মেীসুমে বাঁধ মেরামত শুরু হলে আবার লুটপাট হবে এটাও আশংকা করছেন এলাকার মানুষ।

চম্পাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার বলেন, এই দেবপুর বাঁধ রক্ষায় তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা পরিষদের সভায় একাধিকবার আবেদন করলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এ কারণে এখন সর্বস্ব হারানোর আশংকায় এলকার মানুষ উদ্বিগ্ন। জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গা বাঁধ মেরামত করার দাবি জানান তিনি।

কলাপাড়া পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো.আবুল খায়ের জানান, আমরা বিশ্ব ব্যাংকের ইমার্জেন্সী সাইক্লোন রিকভারী এন্ড রেষ্টোরেশন প্রকল্পের অর্থায়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামতের একটি প্রকল্প জমা দিয়েছেন। কিন্তু এখনও অনুমোদন না পাওয়ায় অর্থাভাবে বাঁধ মেরামত শুরু করা যাচ্ছে না।

(এমকেআর/এলপিবি/জুলাই ২৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test