E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের ভাঙনে গ্রাম ও চিংড়ি ঘের প্লাবিত

২০১৫ আগস্ট ০২ ১৪:৫৫:৩৬
কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের ভাঙনে গ্রাম ও চিংড়ি ঘের প্লাবিত

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের চাকলায় কপোতাক্ষ নদের ৭(১) পোল্ডারে প্রায় ২৫০ ফুট বেড়িবাঁধে আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে প্রবল জোয়ারের পানিতে চাকলা গ্রামের ২৫টি চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে।

শনিবার সন্ধ্যায় এ ভাঙন দেখা দেওয়ার পর এলাকাবাসি রোববার সকাল থেকে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। রোববার দুপুরের মধ্যে এ বাঁধ সংস্কার করা সম্ভব না হলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

চাকলা গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ, মনিরুল ঢালী, তৌহিদ ঢালী ও হাবিব বিশ্বাস জানান, আইলা কবলিত ৭(১) পোল্ডার এলাকার কপোতাক্ষ নদের বেশ কিছু বেড়িবাঁধ দুর্বল ছিল। গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম ও মাষ্টার আব্দুল জলিলের বাড়ির সামনে ফাঁকা জায়গায় পুরাতন রিং বাঁধের সামনে বেড়িবাঁধে ফাটল দেখা দেয়। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। একপর্যায়ে গত ২২ এপ্রিল দিবাগত রাত একটার দিকে একই স্থানের বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে চলে যায়। জোয়ারের প্রবল তোড়ে রিংবাঁধ উপচে পানি চাকলা গ্রামের ২৫টি চিংড়ি ঘের ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তড়িঘড়ি করে সেখানে স্বে”ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কার করা হলেও তা ছিল যথেষ্ট দুর্বল।

তারা আরো জানান, বৈরি আবহাওয়ার কারণে সম্প্রতি কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ার ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি হয়। শনিবার সন্ধ্যায় জোয়ারের পানির তোড়ে জাহাঙ্গীর আলম ও আব্দুল জলিলের বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় ২৫০ ফুটেরও বেশি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। ফলে জোয়ারের পানিতে মুহুর্তের মধ্যে তলিয়ে যায় ২৫টির মত চিংড়ি ঘের। পানিবন্দি হয়ে পড়ে দু’ শতাধিক পরিবার। রবিবার দুপুরে জোয়ার আসার আগে বাঁধ সংস্কার করা না গেলে চাকলা, সুভদ্রাকাটি, রুইয়ার বিল, তালতলাসহ কেয়কটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া চাকলা গ্রামের শেষ প্রান্তে একটি ছোট রিং বাঁধ ভেঙে গেলে শ্যামনগরের পদ্মপুকুর ইউনিয়নের খুটিকাটা ও গড় প্লাবিত হবে।

প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, কপোতাক্ষ নদের চাকলা পয়েন্টের বেড়িবাঁধ দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বার বার বলা সত্ত্বেও তারা সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় চলতি বছরের মার্চ ও এপ্রিল মাসে দু’বার ভাঙন দেখা দেয়। যেন তেন প্রকারে বাঁধ সংস্কার করায় শনিবার সন্ধ্যায় একই স্থানের ২৫০ ফুট এলাকা জুড়ে বাঁধ ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তিনি জানান, সেখানে দুই শতাধিক এলাকাবাসীদের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে রিং বাঁধ দিয়ে সংস্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ২২ এপ্রিল নদীবাঁধ ভাঙনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে অনুযায়ি খুলনার নলিয়ানের ঠিকাদার মন্টু হোসেন গত মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করেন। ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও অদ্যাবধি কাজ শেষ করেনি। এমনকি কত টাকার কাজ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে বারবার জানতে চেয়েও তা জানা যায়নি। জুনের মধ্যে কাজ শেষ হলে এ এলাকায় আবার ভাঙতো না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরা- ২ এর আশাশুনির সেকশান অফিসার আ.ন.ম সরোয়ার হোসেন জানান, তিনি রবিবার সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। এলাকাবাসী সেখানে রিং বাধ সংস্কারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। বৈরী আবহাওয়া ও সেখানে বর্ষা মৌসুমে ভাঙন এলাকার কাছাকাছি মাটি না পাওয়ায় বরাদ্দ পাওয়া প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঠিকাদার যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি বলে জানা তিনি। তবে পুরানো রিং বাঁধ ঠিক রেখে ভাঙন কবলিত এলাকা ঠিকাদারের মাধ্যমে অতি দ্রুত সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

(আরকে/এলপিবি/আগস্ট ২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test