E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক তপন বসু বেকসুর খালাস

২০১৫ আগস্ট ০২ ১৮:৪৩:২৯
মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক তপন বসু বেকসুর খালাস

আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আগৈলঝাড়ায় এনজিও’র হয়রানিমুলক মানহানীর মিথ্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেলেন আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক তপন বসু।

রবিবার জুডিশিয়াল ১ম বিচার আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. এনায়েত উল্লাহর আদালত সাংবাদিক তপন বসুকে মানহানীর মিথ্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাসের আদেশ প্রদান করেন।

রবিবার আদালতের ধার্যকৃত পূর্ব নির্ধারিত দিনে আদালতে উপস্থিত ছিলেননা বাদীসহ তার পক্ষের কৌশলী এম ফজলুল হক। বিবাদী পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সিনিয়র আইনজীবি ও বরিশাল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক এসএম ইকবাল, এ্যাডভোকেট বসুদেব দাস, এ্যাডভোকেট আসাদুজাজামান ফিরোজ, এ্যাডভোকেট জগদীশ চন্দ্র শীল।

আদালতের নথি সূত্রে জানা গেছে, জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামে পাঁচবার নাম পরিবর্তন করে একযুগ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন বিহীন বাংলাদেশ মিশন সার্ভিস নাম সর্বস্ব একটি এনজিও’র নামে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ এলাকায় সাথারণ মানুষের জমি দখল, সন্ত্রাসী লালন, দাতা দেশসমুহের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনায় এবং ওই এনজি কর্তৃক এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলায় পুলিশী হয়রানী থেকে বাঁচতে স্থানীয় ৬শ ৪০ জনগনের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দায়ের করা এলাকাবাসীর অভিযোগ ও সরেজমিনে অনুসন্ধান করে ২০০৯ সালের ১৪ জুলাই আগৈলঝাড়ায় এনজিও’র নামে জমি দখল সন্ত্রাসী লালন ও টাকা আত্মাতের অভিযোগ শিরোনামে একটি সংবাদ দৈনিক ডেসটিনি ও স্থানীয় সত্য সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে তথা কথিত এনজিও’র পরিচালক আমেরিকার নাগরিক জন নিহার রঞ্জন বিশ্বাস আমেরিকা থেকে ই-মেইলে এনজিও’র পক্ষে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানালে সংশ্লিষ্ট পত্রিকা কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদক তপন বসু’র বক্তব্যসহ একই বছর ১১ নভেম্বর প্রতিবাদ সংবাদ প্রকাশ করেন।

এনজিও’র মনগড়া প্রতিবাদ বক্তব্যর সাথে সাংবাদিক তপন বসুর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ায় তারা আরও ক্ষিপ্ত হয। একপর্যায়ে সাংবাদিক তপন বসুকে এনজিও’র পক্ষে সংবাদ প্রকাশের জন্য বিভিন্নভাবে প্ররোচিত করেও ব্যর্থ হন তারা।

মুলত এনজিও’র আড়ালে দাতা দেশের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ থেকে রেহাই পেতে ওই এনজিও’র নির্বাহী পরিচালক ও জন নিহারের বড় ভাই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক য্যাকব কান্তি বিশ্বাস ২০০৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আইনের রীতি নীতি অমান্য করে সাংবাদিক তপন বসু’কে একমাত্র আসামী করে হয়রানীর উদ্যেশ্যে তার এনজিও’র ৬ জন ষ্টাফকে সাক্ষী করে ৫০০/৫০১/৫০৬ ধারায় মিথ্যা মানহানী মামলা দায়ের করেন। যার এমপি নং ৯৮/২০০৯। সি আর ২৩/১০।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদালত আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। তৎকালিন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার নন্দি এসআই মাহবুবুর রহমানকে অভিযোগ তদন্তর দ্বায়িত্ব প্রদান করেন। এসআই মাহবুব সাংবাদিক তপন বসু’র কোন বক্তব্য না নিয়ে এনজিও’র দ্বারা বিপুল অংকের আর্থিক লাভবান হয়ে আদালতের আর্জিতে বাদীর মানত ৬ জন স্বাক্ষীর একই রকম স্বাক্ষ নিজ হাতে লিখে শুধু তাতে তাদের স্বাক্ষর নিয়ে ২০১০ সালের ৯ মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেণ। আদালত রিপোর্ট আমলে নিয়ে সিআর ২৩/১০ মালায় তপন বসু’র প্রতি সমন জারি করলেও ওই সাব-ইন্সপেক্টর আদালতের সমন গোপন রাখেন। সাংবাদিক তপন বসু নিজস্ব সূত্রে সমনের কথা জানতে পেরে ২০১০ সালের ২৯ জুলাই আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবির মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করলে বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। ওই বছর ২৩ আগষ্ট আদালত ৫০৬ ধারা বাদ দিয়ে ৫০০ ও ৫০১ ধারায় চার্জ গঠন করেন। মামলায় এনজিও স্টাফ ৬ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ৪ জন আদালতে তাদের স্বাক্ষ প্রদান করেন।

আদালতের নথি সূত্রে জানা গেছে, বাদী য্যাকব মামলায় শুধুমাত্র একজন সাংবাদিকককে হয়রানীর জন্য দীর্ঘ পাঁচ বছরে আদালতে প্রায়ই তার অনুপস্থিতিসহ বিভিন্ন অযুহাতে সময় প্রার্থনা করে সময় অতিবাহিত করেন। অব্যাহত অযুহাতের ফলে আদালতের ধার্য দিনেও বাদী তার স্বাক্ষ্যর দিন আদালতে উপস্থিত হয়েও সময় প্রার্থনা করলে আদালতে বিবাদী পক্ষের স্বাক্ষী ক্লোজের আবেদন মঞ্জুর করায় মামলার বাদী য্যাকব তার নিজের স্বাক্ষ্য প্রদান করতে পারেনি। দেড় বছর পর রায়ের জন্য ধার্য্য দিনে বাদী তার স্বাক্ষ দেয়ার আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। দীর্ঘ দেড় বছর পর বাদী আদালতে তার স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। বিজ্ঞ আদালত সাংবাদিক তপন বসুর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আদালতের ধার্য দিনে রবিবার মিথ্যা মামলা থেকে তপন বসুকে বেকসুর খাল সের আদেশ প্রদান করেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ার সাংবাদিক তপন বসু বলেন, দীর্ঘদিন হয়রানীর পরেও আদালতের রায়ে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হয়রানী ও ক্ষতি পুরনের জন্য তিনি ওই এনজিও’র পরিচালকসহ মামলার বাদী ও সাক্ষীদের বিরুদ্ধে ক্ষতি পূরণ মামলা করবেন বলেও জানান।

(টিবি/এএস/আগস্ট ০২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test