E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিষখালী নদীর বাঁধ ভেঙে অসংখ্য গ্রাম প্লাবিত

২০১৫ আগস্ট ০৭ ১৭:৩৬:১৩
বিষখালী নদীর বাঁধ ভেঙে অসংখ্য গ্রাম প্লাবিত

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় কোমেনের প্রভাবে পানি বৃদ্ধিতে ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালি নদী তীরবর্তী বড়ইয়া ও মঠবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের বাঁধ ভেঙে বীজতলাসহ অসংখ্য গ্রাম প্লাবিত হহয়েছে।

বর্তমানে পানি কমতে শুরু হওয়ায় দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এতে বড়ইয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ইয়া, বড়ইয়া, পালট, নিজামিয়া ও চল্লিশ কাহনিয়া এবং মঠবাড়ি ইউনিয়নের নাপিতেরহাট, মানকি, ডহরশঙ্কর ও বাদুরতলা বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। এতে সাইক্লোন সেন্টার, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার ও সরকারি স্থাপনা হুমকির মুখে রয়েছে। গতকাল রাতে দক্ষিণ বড়ইয়ার মাহাবুব মেম্বারের বাড়ি এলাকায় ভাঙনে ফসলি ও বাগানের গাছপালাসহ প্রায় ৩০ শতাংশ জমি বিষখালি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ওই এলাকার বসবাসরত মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ পর্যন্ত বিষখালী নদীর তীরবর্তী মঠবাড়ি ও বড়ইয়া ইউনিয়নের বহু গ্রাম, শিক্ষা-ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং প্রায় দেড় হাজার একর আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বিগত দিনে সরকার এ ভাঙ্গন রোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ভাঙ্গনকবলিত সর্বহারা মানুষগুলো বাস্তবে কোন কিছুই পায়নি। তাই প্রতিনিয়ত ভেঙ্গেই যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ইয়া ও বড়ইয়া গ্রামের বাঁধ বেঙে আমনের বাজীতলাসহ বড়ইয়া, দক্ষিন বড়ইয়া, পালট, নিজামিয়া ও চল্লিশ কাহনিয়া গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

কৃষকরা আমন বীজতলা রক্ষার জন্য নিজ উদ্যোগে ফসলি জমির মাটি কেটেই বাধ রক্ষার জন্য সংস্কারের চেষ্টা করলেও পানির স্রোতে তা ভেঙে যাচ্ছে। এতে বীজতলা নষ্ট হওয়ার শঙ্কা করছে হত দরিদ্র কৃষকরা। বিষখালীর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ভাঙ্গনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বর্তমানে বন্যার পানি কমতে শুরু করায় দেখা দিয়েছে আকস্মিক ভাঙ্গন। এতে শিশু, বৃদ্ধ ও মহিলারাসহ সবাই আতঙ্কে রয়েছি। রাতে এ ভাঙ্গনের তীব্রতা আরো বেশি হওয়ায় কেউই নিরাপদে ঘরে ঘুমাতে পারছেন না। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানান, বিষখালি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাধ না থাকায় তীরবর্তী এলাকায় প্রতিবছরই পানিতে তলিয়ে চাষকৃত মাছ ভেসে যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উল্লাহ বাহাদুর জানান, বিষখালি নদীতে স্থায়ী বেড়িবাধ না থাকায় বিভিন্ন ফসল ও ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বিষখালি নদীর বর্তমানের এ ভাঙ্গন রোধে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে রাজাপুর উপজেলা পরিষদ থেকে আবেদন করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোঃ মনিরউজ্জামান। আবেদনে তিনি উল্লেখ্য করেন, ভাঙ্গন কবলিত গ্রামগুলোর সম্পত্তি রক্ষাসহ সকল সরকারি বেসরকারি স্থাপনা ও গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ রক্ষার জন্য উপজেলার বিষখালি নদীর পশ্চিম-দক্ষিন তীরবর্তী চল্লিশ কাহনিয়া লঞ্চঘাট থেকে বড়ইয়া হয়ে উত্তর পালট লঞ্চঘাটসহ ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরউজ্জামান জানান, জরুরি ভিত্তিতে বিষখালি নদীর ভাঙ্গন রোধের দাবিতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে লিখিতভাবে আবেদন করেছি। দ্রুত বেড়িবাধ নির্মাণ করে ভাঙনরোধ করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের সুদৃষ্টি কামনা করেছি।

(এএম/এএস/আগস্ট ০৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test