E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক দ্বিগুণ হলেও শতভাগ ফেল

২০১৫ আগস্ট ১৬ ১৪:৪৪:২৩
শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষক দ্বিগুণ হলেও শতভাগ ফেল

নড়াইল প্রতিনিধি: কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৬ জন। কিন্তু শিক্ষক আছেন মোট ১৩ জন। ২০১৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ওই ৬ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহন করলেও অকৃতকার্য হয়েছেন সকলেই।

এই চিত্র নড়াইল সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত মুলিয়া পাবলিক কলেজের।

কলেজ সূত্র জানায়, চলতি বছর এই কলেজের মানবিক বিভাগের ৬ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে ৪ জন ছাত্র ও ২ জন ছাত্রী। যাদের ৪ জনই আবার ছিলেন অনিয়মিত শিক্ষার্থী।

গত ৯ আগস্টে প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায় এ কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থীই কৃতকার্য হতে পারেনি। কলেজটির এমন ফলাফলের কারণ হিসেবে স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ২০০৫ সালে সদরের মুলিয়া ইউনিয়নে গ্রামবাসীর উদ্যোগে কলেজটি গড়ে তোলা হয়। সে সময় এলাকার মুলিয়া, কলোড়া, তুলারামপুরসহ আশপাশের কমপক্ষে ১৫টি গ্রামের শিক্ষার্থীরা এ কলেজে পড়াশোনা করতেন।

প্রথমদিকে কলেজের বেশ সুনাম ছিল। সে সময় এ কলেজ থেকে প্রতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী কৃতকার্য হতেন। ছাত্র-ছাত্রী ছিল প্রায় ২ শতাধিক। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ১০ বছরেও কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তাই একসময় কলেজের শিক্ষকরা নিয়মিত কলেজে আসা বন্ধ করে দেন। এরপর থেকেই শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করে। বর্তমানে শিক্ষার্থী কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬ জনে। আর শিক্ষক অবশিষ্ট রয়েছেন ১৩ জন।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের প্রতিটি কক্ষই তালাবদ্ধ। নেই কোনো শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা কর্মকর্তা-কর্মচারী। লাইব্রেরির খোলা জানালা দিয়ে ভিতরে দেখা যায় শিক্ষা সরঞ্জামগুলো অগোছালোভাবে পড়ে আছে। এখানে-সেখানে মাকড়সা বাসা বেঁধেছে। কলেজের শ্রেণিকক্ষের অবস্থাও নাজুক। অনেক কক্ষেই নেই দরজা-জানালা। ভিতরে খড়ের গাদা দেখেই বোঝা যায় গরু-ছাগলের অবাধ আনাগোনা প্রতিনিয়ত। কলেজের পাশের বাসিন্দা বৃদ্ধ হরিপদ সরকার জানান, একটি লোক ২ মাস আগে তার কাছে ২টি বই রেখে গেছেন অধ্যক্ষকে দিতে। কিন্তু ২ মাসের মধ্যে অধ্যক্ষ না আসায় বইগুলো তার কাছেই রয়েছে।

মুলিয়া পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ খান নজরুল ইসলাম এর সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন ১০ বছর পরেও এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষকরা নিয়মিত কলেজে আসেন না। তাই কলেজের এ বেহাল দশা। কলেজের এই দৈন্য-দশার ব্যাপারে নড়াইল সদর উপজেলা মাধ্যামিক শিক্ষা অফিসার মো. ফজলুল হক বলেন, আমি এখানে মাত্র কয়েকদিন হল এসেছি। কলেজটি পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে, সঠিক দিক-নির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কলেজটির দ্রুত উন্নতি হবে বলে মনে করেন এলাকাবাসী।

(টিএআর/এলপিবি/আগস্ট ১৬, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test