E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বরিশালে বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে শুরুতেই কোন্দল

২০১৫ আগস্ট ২২ ১৪:০৪:২৭
বরিশালে বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে শুরুতেই কোন্দল

বরিশাল প্রতিনিধি: আন্দোলন সংগ্রামের পথ থেকে সরে এসে এবার দল পূর্ণগঠনের কাজ শুরু করেছে বিএনপি।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠনের টার্গেট ঠিক করেছে দলের নীতিনির্ধারক মহল।

কেন্দ্রের এ সিদ্ধান্তের শুরুতেই অভিযোগ উঠেছে, জেলার দশ উপজেলার নিস্ক্রিয় সুযোগসন্ধানী বিএনপির কতিপয় নেতা অর্থের বিনিময়ে পদ পদবী বাগিয়ে নিতে কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার কাছে জোড় তদবির শুরু করেছেন। ফলে নতুন কমিটি গঠনের শুরুতেই দলে কোন্দল শুরু হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসিন দলের কতিপয় প্রভাবশালী নেতার সাথে লিয়াজো করে দলের নেতাকর্মীদের মামলায় জড়ানো, পারিবারিক অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসিন দলের প্রভাবশালী নেতাদের অতিথি করে আপ্যায়ন, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর নেতাকর্মীদের না জানিয়ে বিরোধী প্রার্থীকে সমর্থন দেয়াসহ দলের নিস্ক্রিয় কতিপয় নেতা এখন উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ বাগিয়ে নিতে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। ওইসব নিস্ক্রিয় নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া হলে সু-সংঘঠিত হওয়ার চেয়ে দলে বিশৃংখলার সৃষ্টি বেশি হবে বলেও সূত্রটি নিশ্চিত করেছেন।

দল পূর্ণগঠনের শুরুতেই খোঁদ দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধেই এসব অভিযোগ ওঠায় পুরো প্রক্রিয়াটি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন নেতাকর্মীরা। এছাড়াও যাদের কমিটি গঠনের বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশর বিরুদ্ধেই দলীয় কর্মকান্ডে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ করেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

বিশেষ অনুসন্ধানে জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলা, বাকেরগঞ্জ, মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদী, বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ, উজিরপুর, আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী উপজেলা বিএনপির পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করার খবরে প্রতিটি উপজেলার নেতৃবৃন্দদের সাথে পদ প্রত্যাশী সুযোগসন্ধানীরা কোন ধরনের যোগাযোগ না করেই কেন্দ্রীয় কতিপয় নেতার কাছে লবিং ও তদবির শুরু করেছেন। এতে করে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে কতিপয় সুযোগসন্ধানী নেতা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে রাখার পরেও প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন নিস্ক্রিয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গৌরনদী উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীরা বলেন, উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবুল হোসেন মিয়ার সাথে বর্তমান ক্ষমতাসিন দলের প্রভাবশালী নেতাদের গভীর সখ্যতা রয়েছে। ফলে গত রমজান মাসে তার মায়ের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. হারিছুর রহমান। ওই অনুষ্ঠানে বিএনপির কোন নেতাকর্মীকে দাওয়াত পর্যন্ত দেয়া হয়নি।

সাম্প্রতিক সময়ের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে বর্তমান উপজেলা বিএনপির সভাপতির আহ্বানে তিনি সারা না দিয়ে অসুস্থতার অজুহাতে ক্ষমতাসিনদের সাথে লিয়াজো করে নিস্ক্রিয় থাকেন। তার লিয়াজোর কারণে উপজেলার কয়েক’শ নেতাকর্মীরা মিথ্যে মামলার আসামি হয়ে কারাভোগ করলেও তিনি কখনও তাদের কোন খোঁজ খবর পর্যন্ত নেননি। বর্তমানে তিনি উপজেলা বিএনপির সভাপতির পদ বাগিয়ে নিতে কোমড় বেঁধে মাঠে নেমেছেন। ইতোমধ্যে কতিপয় কেন্দ্রীয় নেতার কাছে তিনি তদবির শুরু করেছেন। তাকে এ গুরুত্বপূর্ণ পদটি দেয়া হলে সু-সংঘঠিত হওয়ার চেয়ে দলে বিশৃংখলার সৃষ্টি বেশি হবে বলেও নেতাকর্মীরা উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট মজিবর রহমান সরোয়ার জানান, সকলদিক বিবেচনা করেই তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। তবে নেতাকর্মীরা কারাগারে থাকায় সকল কমিটি গঠন সময়সীমার মধ্যে সম্পন্ন করা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

(টিবি/এলপিবি/আগস্ট ২২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test