E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

আগৈলঝাড়ায় ছাত্রলীগ নেতা রাসেল হত্যা,নিহতের মায়ের সংবাদ সম্মেলন

২০১৫ আগস্ট ২২ ১৭:১৬:০০
আগৈলঝাড়ায় ছাত্রলীগ নেতা রাসেল হত্যা,নিহতের মায়ের সংবাদ সম্মেলন

আঞ্চলিক প্রতিনিধি(বরিশাল):জেলার গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা রাসেল বেপারীকে নৃশংসভাবে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার ১৬দিন পরেও কোন আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো ঘটনার সাথে জড়িতদের নাম উপজেলা চেয়ারম্যানের নির্দেশে থানা পুলিশ এজাহার থেকে বাদ দিয়েছে বলে নিহতের মা ও মামলার বাদি নুরুন নাহার শনিবার সকালে স্থানীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে গৌরনদী পৌরসভায় একটি শালিস বৈঠকে যাওয়ার জন্য তিনি তার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল বেপারীর মটরসাইকেলযোগে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে তেল শেষ হওয়ায় রাসেল গৌরদীর সেন্ট পিটার ফিলিং ষ্টেশনে গেলে ফিলিং ষ্টেশন কর্মচারী খলিলুর রহমান খালি বোতলে তেল দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এনিয়ে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে উভয়েরমধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ওইঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য একটি সাজানো মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে রাসেল নাঠৈ গ্রামে আত্মগোপন করে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও জানান, একটি মটরসাইকেল ক্রয় করার জন্য তার ছেলে রাসেল প্রতিবেশী ছাত্রলীগ নেতা আতিকের মধ্যস্থতায় পাশ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার সেরাল গ্রামের বাবুল সেরনিয়াবাতের ছেলে সাগর সেরনিয়াবাতকে ২৭ হাজার টাকা প্রদান করে। দীর্ঘদিনেও সাগর মটরসাইকেল না দিয়ে নানা তালবাহানা করে। এক পর্যায় আতিকের উপস্থিতিতেই ১ জুলাই সাগর ২০ হাজার টাকা ফেরত দেয়। বাকি পাওনা সাত হাজার টাকার জন্য ৭ আগস্ট সাগরকে মোবাইল করলে সে (সাগর) রাসেলকে আগৈলঝাড়ার টেমার এলাকার সিরুর দোকানে যাওয়ার জন্য বলে। রাসেল তার বন্ধু রিন্টু সরদারসহ বন্ধু তনুকে সাথে নিয়ে উক্তস্থানে পৌঁছানোর সাথে সাথেই পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাগর ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা রাসেল ও তার বন্ধু রিন্টুকে প্রকাশ্যে ধারালো দা, ছুরি ও ইটদিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে রাখে। পরবর্তীতে স্থানীয়রা রাসেল ও রিন্টুকে মুর্মুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাৎক্ষনিক তাদের বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে রাসেল মারা যায়।

লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, রাসেল মৃত্যুর পূর্বে তার ওপর হামলাকারীদের নাম বলে যায়। সে অনুযায়ী তিনি (নিহতের মা নুরুন নাহার) বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত ওসি এসআই নজরুল ইসলাম নানা তালবাহানা শুরু করে। এছাড়াও এসআই নজরুল আমিনকে বাদ দেয়ার জন্য কয়েক দফা মামলা লেখার পরেও তা আবার বিনস্ট করেন। বিকেলে ঘটনার ঘটলেও ওসির দায়িত্বে থাকা এসআই নজরুল ঘটনাস্থলে যান রাত নয়টার দিকে। ওই সময়ের মধ্যে আসামীদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন তিনি।

উপজেলা চেয়ারম্যানের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি ২৪ ঘন্টারও বেশী সময় পরে মামলা রেকর্ড করান। একপর্যায়ে ৮ তালিখ রাতে নিহতের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হামলাকারীদের মধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তুজা খানের শ্যালক নগরবাড়ি গ্রামের মফসের হাওলাদার ওরফে মফসের ডলারের ছেল আমিন হাওলাদারকে বাদ দিয়ে পুলিশ একটি মামলা গ্রহণ করে।

এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার ১৫দিন পরেও কোন আসামিকেই পুলিশ গ্রেফতার না করার বিষয়টি রহস্যজনক দাবি করে নিহতের মা ও মামলার বাদি নুরুন নাহার বলেন, সেন্ট পিটার ফিলিং ষ্টেশনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার ছেলে রাসেলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যার সঠিক তদন্ত করলে মূলরহস্য বেরিয়ে আসবে। তিনি তার ছেলে রাসেল বেপারীর হত্যার ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনারদিন (৭ আগস্ট) হামলার ঘটনার পর পরই প্রধান অভিযুক্ত সাগর সেরনিয়াবাত সেরাল গ্রামের জনৈক এক ছাত্রলীগ নেতার মটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওইদিন থানার ভারপ্রাপ্ত ওসির দায়িত্বে থাকা এস.আই নজরুল ইসলাম ওই ছাত্রলীগ নেতাকে আসামী পালানো সহায়তা করার জন্য মোবাইল ফোনে একটি ল্যাবটব কম্পিউটার দাবি করেন। অন্যথায় তাকে মামলায় জড়ানোর হুমকি দেয়া হয়।

পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, এজাহারে অভিযুক্ত কোন আসামি বাদ পরলে তদন্তপূর্বক মামলার চার্জশীটে সংযুক্ত করা হবে।

(টিবি/এসসি/আগস্ট২২,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test