E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

উজিরপুরে আট মাসের ঘুমন্ত শিশু হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

২০১৫ আগস্ট ২৪ ১৫:২৫:২১
উজিরপুরে আট মাসের ঘুমন্ত শিশু হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আঞ্চলিক প্রতিনিধি(বরিশাল):জেলার উজিরপুর উপজেলার হস্তিশুন্ড গ্রামের ঘুমন্ত আট মাসের কন্যা শিশু মরিয়ম আক্তারকে হত্যার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। সোমবার সকালে শিশু হত্যার ঘটনায় প্রতিবেশী প্রভাবশালী এক জামায়াত নেতাকে দায়ী করে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণস্বাক্ষর আদায় করেছেন এলাকাবাসী।

সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সাড়ে দশটা পর্যন্ত সানুহার-ধামুড়া সড়কের ঈদগাহ ময়দান নামক বাসষ্ট্যান্ডে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালীন সময় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, স্থানীয় প্রভাবশালী জামায়াত নেতা মাওলানা আবু বক্কর সেলিমের প্ররোচনায় থানা পুলিশ বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্ঠা করছেন। যেকারনে পুলিশ নিহতের পরিবারের ৫ সদস্যকে আটক করে বিভিন্ন ধরনের হয়রানী করেছেন।

মামলার বাদি নিহতের পিতা ইমরান বেপারী অভিযোগ করে বলেন, তার কন্যা সন্তানকে হত্যার ঘটনায় তিনি মাওলানা আবু বক্কর সেলিমসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়েরের জন্য থানায় এজাহার দাখিল করেছিলেন। পুলিশ নাটকীয়ভাবে তার কাছ থেকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে রহস্যজনক কারণে দায়ের করা এজাহার কপি গায়েবের মাধ্যমে অজ্ঞাতনামা আসামি করে নামেমাত্র একটি মামলা রুজু করেন (যার নং-১৯/৮, তারিখ: ২০-৮-২০১৫)।

বিক্ষোভ সমাবেশে বামরাইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গৌরাঙ্গ লাল কর্মকারের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল হোসেন, সংরক্ষিত নারী সদস্য নিলুফা বেগম, ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি হারিছ বেপারী, শাহিন মাষ্টার, নিহতের দাদা নজরুল ইসলাম, সমাজ সেবক বাবুল হোসেন প্রমুখ।

মানববন্ধনে এলাকার নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সর্বস্তরের সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। শেষে এলাকাবাসী জামায়াত নেতা আবু বক্কর সেলিম ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সবশেষে একই দাবিতে গণস্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়।

উল্লেখ্য, ওই গ্রামের নজরুল বেপারীর পুত্র ইমরান বেপারী ঢাকায় চাকুরীরত থাকায় তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম আট মাসের কন্যা সন্তান মরিয়মকে নিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে বাড়িতেই বসবাস করে আসছিলেন। গত ১৮ আগস্ট রাতে প্রতিদিনের ন্যায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে ফাতেমা তার শিশু কন্যাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত দেড়টার দিকে অজ্ঞাতনামা দুবৃত্তরা ঘরের বেড়াকেটে শিশু মরিয়মকে অপহরেণর পর হত্যা করে লাশ বাড়ির পার্শ্বের একটি পুকুরে ফেলে দেয়।

রাত দেড়টার দিকে মরিয়মকে না পেয়ে তার মায়ের ডাকচিৎকারে পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠে অনেক খোঁজাখুজির পর থানার টহল পুলিশকে খবর দেয়। রাতভর খোঁজাখুজি করে ভোররাতে পুলিশ বাড়ির পাশ্ববর্তী একটি পুকুর থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।

প্রাথমিকভাবে নিহতের পরিবার সন্দেহ করছেন পূর্ব শত্রুতার জেরধরে প্রতিবেশী প্রভাবশালী জামায়াত নেতা আবু বক্কর সেলিম ও তার লোকজনে শিশু মরিয়মকে অপহরেণর পর হত্যা করে লাশ পুকুরের পানিতে ফেলে দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে জামায়াত নেতা নিজ ঘরে তালাবদ্ধ করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্মগোপন করেছেন। শিশু মরিয়ম হত্যার মূলরহস্য উদ্ঘাটনের জন্য নিহতের স্বজনেরা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে উজিরপুর থানার ওসি মো. নুরুল ইসলাম পিপিএম জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। নিহত শিশুর লাশের ময়নাতদন্তের রির্পোট হাতে পাওয়ার পরেই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


(টিবি/এসসি/আগস্ট২৪,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test