E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নওগাঁয় সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

২০১৫ আগস্ট ২৪ ১৮:২২:১২
নওগাঁয় সড়ক যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন, ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি

নওগাঁ প্রতিনিধি :সোমবার সকালে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার নওগাঁ আত্রাই সড়কের মির্জাপুর নামক স্থানে সড়ক ভেঙ্গে ৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মির্জাপুরে ছোট যমুনা নদীর বাম তীরে অবস্থিত বাঁধ কাম নওগাঁ-আত্রাই সড়ক অন্তত ২ শ’ ফুট ভেঙ্গে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

পানির তোড়ে সেখানে বিদ্যুতের ২টি খুঁটি উপড়ে পড়ে গোটা আত্রাই এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। অপরদিকে জেলার মান্দায় আত্রাই নদীর কোল ঘেঁষে উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় নির্মিত ৭টি বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। তলিয়ে গেছে আউশ ও আমন ধান। এতে জেলায় পানিবন্দি হয়েছে পড়েছে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। দু’দিন পেরিয়ে গেলেও মান্দায় সরকারি কোনো কর্মকর্তা এখন পর্যন্ত দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন নি। তালিকা তৈরি করা হয়নি দুর্গতদের।

জানা গেছে, রবিবার সকালে ফুলবাড়ী নামক স্থানে বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে সড়ক ও জনপথের আত্রাই-নওগাঁ সড়কের ওপর পানির প্রবল চাপ পড়ে। সড়কের নীচ দিয়ে ইদুরের ছোট ছোট গর্ত দিয়ে পানি বের হতে লাগলে এলাকাবাসী সারাদিন তা বন্ধ করে বালির বস্তা দিয়ে সড়কটি ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা চালায়। কিন্তু সোমবার সকাল ৬টার দিকে সেটি আর রক্ষা হয়নি। সোমবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ২শ’ ফুট ভেঙ্গে রানীনগর ও আত্রাই উপজেলা ৭ ইউনিয়নের অন্তত ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়ন গুলো হলো, আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী এবং রানীনগর উপজেলার গোনা, খট্টেশ্বর রানীগর, বড়গাছা ও কালীগ্রাম। পানির স্রোতে শত শত কাঁচা ঘর-বাড়ি ও গাছ পালা ভেঙ্গে গেছে। হাজার হাজার বিঘা জমির রোপা আমন ধান ও শাক-শব্জি পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক শ’ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে বন্যার পানিতে। এলাকার বেশীর ভাগ বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকেছে। বন্যার্ত মানুষ গুলো গরু- বাছুরসহ বাঁধে বা উচু স্থানে, খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয় ক্ষতির হিসাব নিকাশ নির্ধারন কাজ চলছে। আত্রাই উপজেলা চেয়ারম্যান এবাদুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরুল ইসলাম পাটোয়ারী, থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল লতিফ খান, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন চান্দু ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শন করেছেন। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানায়, ছোট যমুনা ও আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অপরদিকে গত ২৪ ঘন্টায় মান্দার জোতবাজার পয়েন্টে আত্রাই নদীর পানি আরো ২০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে এখন বিপদ সীমার ১শ’ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীর ডান তীরের বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, শহরবাড়ীসহ আরো কয়েকটি স্থান চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বাঁধ টিকিয়ে রাখার জন্য স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এদিকে বরেন্দ্র এলাকার বৃষ্টির পানি ও উজানের ঢলের পানি বিভিন্ন খাল হয়ে মান্দার শিব নদীতে নামছে। এতে এ নদীর পানিও বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শিবনদীর পূর্ব তীরে টেংরা নামকস্থান দিয়ে এ পানি প্রবেশ করায় মান্দা উপজেলার ৫টি ও রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জনপদ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে।

(বিএম/এসসি/আগস্ট২৪,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test