E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কিশোরগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকাণ্ডে গাফিলতি, মিলছে না সার্টিফিকেট

২০১৫ আগস্ট ২৭ ১৯:৪৭:৪৬
কিশোরগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকাণ্ডে গাফিলতি, মিলছে না সার্টিফিকেট

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে যেখানে সরকার স্ব-উদ্যোগে কাজ করে যাচ্ছে। সেখানে কিশোরগঞ্জ শহর সমাজসেবা কার্যালয় ঠিক তার উল্টো পথে চলছে। অফিস আছে, কাজও আছে, নেই শুধু সঠিক সময়ের সঠিক কাজ। ছাত্র-ছাত্রীদের সেশন সমাপনী পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলেও মিলছে না সার্টিফিকেট। দিনের পর দিন সার্টিফিকেটের আশায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। ক্ষয় হচ্ছে পায়ের চপ্পল, তবু মিলছে তার সদুত্তর।

এভাবে দিনের পর দিন বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গাফিলতির ফলে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম এখন লোকমুখে প্রশ্নবিদ্ধ। সূত্রে জানা যায়, শহর সমাজসেবার কার্যালয়ের আওতায় বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, ঋণ বিতরণ, প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রতিবন্ধী জরিপ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। এছাড়াও ২০০৫ সন থেকে এ প্রতিষ্ঠানটি শহর সমাজ সমন্বয় উন্নয়ন পরিষদের সহযোগিতায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, সেলাই প্রশিক্ষণ ও টিভি-রেডিও মেরামত প্রশিক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানটির বেশ সুনাম রয়েছে। প্রতি বছর ৩টি কম্পিউটার ল্যাবে ৬ জন প্রশিক্ষক দ্বারা ২টি সেশনে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী এ প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছে। যে কারণে প্রতি সেশনই প্রশিক্ষনার্থীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
কিন্তু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মনগড়া কর্মকাণ্ডে বন্ধও হয়েছে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। রেডিও-টিভি মেরামত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ছাত্র-ছাত্রী’র সংখ্যা কম দেখিয়ে বন্ধ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির শুরু থেকেই সেলাই প্রশিক্ষণটি ছিল একটি উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। তবে কর্মকর্তার সঙ্গে প্রশিক্ষকের মতের অমিল থাকায় এ কার্যক্রমটিও বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০১৪ সনের ডিসেম্বর মাসে শহর সমাজ সমন্বয় উন্নয়ন পরিষদ কমিটির মেয়াদ উর্ত্তীণ হয়। পরবর্তীতে ৩ মাসের একক দায়িত্ব পেয়ে একটি খোড়া যুক্তি দ্বার করিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পরিচালিত হওয়া কম্পিউটার হার্ডওয়্যার প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও বন্ধ করে দেয়া হয়। এরপর (জুন-ডিসেম্বর/২০১৪) সেশন এর সমাপণী পরীক্ষার পর থেকেই শুরু হয় নতুন টালবাহানা। প্রায় ৮ শত ৫০ জন প্রশিক্ষনার্থীর মধ্যে ৮শত জন প্রশিক্ষনার্থী পরীক্ষা দিয়ে ৭শত ৫৮জন প্রশিক্ষনার্থী উর্ত্তীণ হয়। ইতোমধ্যে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলেও ছাত্র-ছাত্রীরা পাচ্ছেনা তাদের প্রশিক্ষণের বৈধতার সার্টিফিকেট। বর্তমানে জেলা সমাজসেবার উপ-পরিদর্শকের নির্দেশে একজন প্রশাসক নিয়োগ করে শহর সমাজ সমন্বয় পরিষদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একই অফিসে দু’জন কর্মকর্তা থাকায় সেখান থেকেই সকল কর্মকাণ্ডে গাফিলতি শুরু হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মকাণ্ডে গাফিলতির কারণে প্রতিষ্ঠানটির কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কার্যক্রম হুমকির মুখে ও সুনাম ক্ষুন্ন হবার উপক্রম। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যক্তি রেশারেশির ফলে ভুক্তভোগীর শিকার হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ প্রশিক্ষণার্থী।

১৯তম ব্যাচে অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নেয়া মো: আজিজুল ইসলাম জানান, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়েছি, ফলাফলও হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন সার্টিফিকেটের আশায় কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছে ঘুরতে ঘুরতে আমি উদ্বিগ্ন। সকলেই ভিন্ন ভিন্ন কথা বলে আমাদের হয়রানি করছেন। অনেক গুলো সরকারি চাকুরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেয়েও চাকুরিতে আবেদন করতে পারছি না। এমনকি এ অফিসের পিয়ন গুলোও মনে হয় একেকজন অফিসার।

(পিকেএস/পি/অাগস্ট ২৭, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test