E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাতক্ষীরায় ছাত্রীকে গণধর্ষণের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা

২০১৫ আগস্ট ২৭ ২২:১৫:০৪
সাতক্ষীরায় ছাত্রীকে গণধর্ষণের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : অবশেষে ১৬ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের  বার্ন ইউনিটে বৃহস্পতিবার সকালে  মারা গেলেন এইচএসসি পরীক্ষায় অনুত্তণী মিনহা ।

গত ১২ আগষ্ট রাত সাড়ে ৭টার দিকে সাতক্ষীরার দেবহাটার কুলিয়া গ্রামের ওই কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষন ও পরে গায়ে কোরোসিন জাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে ঝলসে দেয় চার দুর্বৃত্ত ।

ভূমিহীন আবু সালেক জানান ‘ একই গ্রাম কুলিয়ার খোকন মোল্লার ছেলে মাদকাসক্ত ইব্রাহীম বিবাহিত হয়েও প্রায়ই মিনহা কুপ্রস্তাব দিতো । কয়েক মাস আগে ইব্রাহীম বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে মিনহাকে সীমান্তবর্তী ঘোনা গ্রামে তাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠে । সেখানে তারা স্বামী স্ত্রী পরিচয় দেয়। খবর পেয়ে পাঁচদিন পর মেয়েকে উদ্ধার করে ইব্রাহীমকে মারপিট করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ ছিল ইব্রাহীম।

আবু সালেক জানান, মিনহা এবার শ্রীরামপুর মডেল ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে ফেল করে । সে ফেল করেনি বরং নেটে ভুল রেজাল্ট এসেছে এমন মিথ্যা কথা বলে ইব্রাহীম গত ১২ আগষ্ট দুপুরে আবারও নেটে রেজাল্ট দেখার নাম করে প্রথমে দেবহাটার পারুলিয়া ও পরে সাতক্ষীরায় নিয়ে আসে । সন্ধ্যায় কুলিয়ার আশু মার্কেটে নেমে যায় তারা দু’জন। পরে একটি ভ্যানে করে শ্রীরামপুর গুচ্ছগ্রামের দিকে যাবার পথে দাইপাড়া তিন রাস্তার মোড়ে নেমে যায় তারা। ইব্রাহীমের পরিকল্পনা অনুযায়ী আগে থেকেই তিন যুবক মুখে মুখোস বেঁধে সেখানে অপেক্ষা করছিল । সুযোগ বুঝে তারা চারজন তাকে পাশের একটি বেগুন খেতের মধ্যে নিয়ে উপর্যুপরি ধর্ষন করে । এরপর তার দেহে কোরোসিন জাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। মিনহা প্রাণ বাঁচাতে রাস্তার পাশে একটি পুকুরে ঝাঁপ দেয় । চিৎকার শুনে গ্রামবাসী তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসক বৃন্দাবন ডাক্তারের ক্লিনিকে নিয়ে যায়। রাত ১১ টার দিকে মিনহাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । ডাঃ শরিফুল ইসলামের ভাষ্য অনুযায়ি মিনহার নাভিসহ তার দেহের ৩৫ শতাংশ পুড়ে যায় । তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। ১৬ আগষ্ট তিনি বাদি হয়ে ইব্রাহীমসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ১৭ আগষ্ট চিকিৎসকের উপস্থিতিতে মুমূর্ষ মিনহার মৃত্যুকালিন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

একপর্যায়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদদুল হক শেখের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়ে গত সোমবার মিনহাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বৃহষ্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিনহার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে ।

(আরএনকে/এসসি/আগস্ট২৭,২০১৫)


পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test