E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিবচরে বন্যা ,পদ্মায় ভাঙ্গণ

২০১৫ সেপ্টেম্বর ২০ ১৮:৪২:২৭
শিবচরে বন্যা ,পদ্মায় ভাঙ্গণ

মাদারীপুর প্রতিনিধি :মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় বন্যার পাশাপাশি পদ্মা নদীতে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গণে সবচেয়ে বেশি হুমকি মধ্যে রয়েছে জনবিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল চরজানাজাত ইউনিয়নবাসী। গত ১০ দিনের ভাঙণে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে তিনটি প্রাথমিক ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় সাড়ে তিনশ ঘরবাড়ি।

অপরদিকে ভাঙণ কবলিতরা যে জমিগুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন সেখানে ইতিমধ্যে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সেখানকার কয়েক হাজার মানুষের জন্য জরুরিভিত্তিতে ত্রাণের দরকার হয়ে দাড়িয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত, স্থানীয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ পদ্মা নদীতে প্রায় ৪০ বছর আগে জেগে উঠা এই বৃহৎ জন-বিচ্ছিন্ন চরজানাজাতে নদী ভাঙনের খেলা অনেক পুরনো। তবে গত তিন বছর ধরে ব্যপকভাবে নদী ভাঙনে আক্রান্ত হচ্ছে এই চর এলাকাটি। গত তিন বছরে প্রায় ১৫টি গ্রাম পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে প্রায় দেড় সহস্রাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা গেছে, গত ১০ দিনের ভাঙ্গণে পদ্মা নদী আগ্রাসি রূপ নেয়। এতে ২৪ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতল ভবন, ২৭নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন ও সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এছাড়া ২৫ নং প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় তলা ভবনটি নদী থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরত্বে অবস্থান করায় নিলাম দিয়ে অপসারণ শুরু হয়েছে। নদী ভাঙন এতটাই প্রকট যে স্কুল ভবন সরিয়েও নেয়া যাচ্ছে না। একদিকে ভাঙণ অপরদিকে বন্যার পানির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। এদিকে জনবসতিপূর্ণ এলাকার পরিস্থিতিও আরো ভয়াবহ।

গত ১০ দিনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশ ঘরবাড়ি ও কয়েকশ একর জমি। নদী ভাঙন আক্রান্তরা কোনোমতে চরের যে সকল স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন সেখানেও বন্যার পানি ঢুকে গেছে। খাবার, বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে চরজুড়ে। সেখানে জরুরিভিত্তিতে ত্রাণ সরবারহ জরুরি হয়ে দাড়িয়েছে।

কমলি, শিউলি, সিমা, রানা, বাতেন, কাকলিসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের পড়াশুনা হচ্ছে না। স্কুল নদীতে বিলিন হয়ে গেছে।

জয়নাল বেপারী, আবু বকর, কাইয়ুমসহ স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, এখানে অসহায় মানুষগুলোর দুর্ভোগ লাঘবে ত্রাণ তৎপরতা জরুরি ভিত্তিতে দরকার। তাছাড়া বন্যার পানিতে ঘরবাড়িসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। স্কুল ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। ঘরে খাবার নেই। সরকারি সাহায্যও নেই। অনেকের আশ্রয় এখন রাস্তার উপর।

শিবচরের চরজানাজাত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বজলুর রহমান বলেন, আমরা সরকারের কাছে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণের আবেদন জানানো হয়েছে।

শিবচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইমরান আহমেদ বলেন, বন্যা কবলিত ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বন্যার শুরুতেই চাল, ডাল নগদ টাকাসহ অন্যন্যা সাহায্য করা হয়েছে। আরো সাহায্য দেয়ার জন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরি আবেদন জানিয়েছি।
মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো. কামাল উদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ দেয়া হয়েছে। জরুরিভাবে আরো ত্রাণ দেয়া হবে।

(এএসএ/এসসি/সেপ্টেম্বর২০,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test