E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হজ্ব হলো না ১৭৬ জনের,এজেন্সির নেতাকে গণধোলাই

২০১৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৯:২৫:০৯
হজ্ব হলো না ১৭৬ জনের,এজেন্সির নেতাকে গণধোলাই

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর জান্নাতুল খুলুদ ট্যুর এ্যান্ড ট্রাভেলস নামের এক হজ্ব এজেন্সির কাছে রাণীনগর, আত্রাই, আদমদীঘি ও নওগাঁ সদর এলাকার ১৭৬ জন হজ্বযাত্রী এবার হজ্বে যেতে পাররোনা। উর্রেখিত এলাকার ২২৫ জন হজ্ব যাত্রী এজেন্সির চাহিদা মতো যথা সময়ে হজ্বে যাওয়ার টাকা পরিশোধ করে।

কিন্তু সময় মত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হজ্বে গমন ইচ্ছুক যাত্রীদের হাতে না দিয়ে অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে গত ২১ সেপ্টেম্বর সরকারি বিশেষ কোঠায় ৪৯ জন যাত্রী হজ্বে যেতে পারলেও যেতে পারেনি ১৭৬ জন হজ্ব যাত্রী। ঢাকার উত্তরার আশকোনা হজ্ব ক্যাম্পে রাণীনগর-নওগাঁর বেশ কিছু হজ্ব যাত্রীদের এজেন্সি কর্তৃপক্ষ দুই দিন ধরে বসে রেখে অনেক আশার বানী শোনালেও শেষ মহুর্তে তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে। এঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা হজ্ব এজেন্সির দলনেতা আজাদুরকে গনধোলাই দেয়।
জানা গেছে, নওগাঁ জেলা সদরে ইসলামপুর রোড জমজম প্লাজায় অবস্থিত জান্নাতুল খুলুদ ট্যুর এ্যান্ড ট্রাভেলস নামের হজ্ব এজেন্সির পরিচালক মুফতি রাশেদ ইলিয়াছ নওগাঁ জেলা সদর, রাণীনগর, আত্রাই, বগুড়ার আদমদীঘি সহ বেশ কয়েকটি উপজেলায় তার নিয়োগকৃত দলনেতার মাধ্যমে ২২৫ জন হজ্ব গমন ইচ্ছুক ব্যক্তিদের কাছ থেকে তাদের চাহিদা মত টাকা নেয়। দীর্ঘদিন ধরে হজ্ব এজেন্সির দলনেতারা হজ্বে গমন ইচ্ছুক ব্যক্তিদেরকে নানা ধরণের আশ্বাস দিলেও শেষ মহুর্তে ২০ সেপ্টেম্বর হজ্ব যাত্রীদের ফ্লাইট হবে মর্মে তাদের তালিকাভূক্ত সকল যাত্রীদের শেষ আশ্বাস দিলে হজ্ব যাত্রীরা মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বন্ধবসহ পরিচিত জনদের কাছ থেকে দোয়া নিয়ে হজ্বের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বিদায় নেয়।
হজ্ব এজেন্সি জান্নাতুল খুলুদের দলনেতা রাণীনগর উপজেলার আবাদপুকুর হাসানকুড়ি মাদ্রাসার মাওলানা আজাদুলের মাধ্যমে ওই এলাকা থেকে প্রায় ৩৭ জন যাত্রী আজাদুলের কথা মতো হজ্বে যাবার জন্য শুক্রবার বিকেলে আবাদপুকুর বাস স্ট্যান্ডে জড়ো হয়। আছর নামাজের পর যাত্রীবাহি বাস আসার কথা থাকলেও মাগরীব নামাজের পরও বাস না আসায় যাত্রীরা তার কাছে বাস না আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বিভিন্ন টাল বাহনা করতে থাকেন। এসময় স্থানীয়রা তাকে গনধোলাই দিতে শুরু করলে আজাদুল পালিয়ে যায়। এর পর যাত্রীরা অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেও নিরাশ হয়ে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান।
ঘটনার পর থেকে আজাদুলের সঙ্গে মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সে রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এজেন্সির অপর দলনেতা রাণীনগর সিম্বা আল-মাদ্রাসাতুল কাশিমীয় বায়তুল এহসান মাদ্রাসার মহতামিম মাওলানা আনোয়ার হোসেন জানান, তার মাধ্যমে প্রায় ৩৫ জন হজ যাত্রীরা টাকা জমা দিয়েছেন। তার মধ্যে দুই জন যাত্রী হজ্বে যেতে পেরেছেন। বাকিদের টাকা-পয়সা আমি খুব তারাতারি ফেরত দিব।
জান্নাতুল খুলুদ ট্যুর এ্যান্ড ট্রাভেলস’র পরিচালক মুফতি রাশেদ ইলিয়াছ জানান, আমার প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনায় ২২৫জন হজ্ব যাত্রী যাওয়ার কথা ছিলো। অসাধু সিন্ডিকেটের অপতৎপরতার কারণে আমার মাধ্যমে শুধু মাত্র ৪৯ জন হজ্ব গমন ইচ্ছুক যাত্রী শেষ মহুর্তে সরকারি বিশেষ কোঠায় হজ্বে যেতে পেড়েছে। বাকিদের টাকা খুব শিঘ্রী স্ব-স্ব ব্যক্তিদের কাছে ফেরত দেয়া হবে।
এব্যাপারে হজ্বযাত্রী ভেটি গ্রামের এচাহক আলী জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী হজ্বে যাবার জন্য আজাদুলকে ৫লাখ টাকা জমা দিয়েছে। কিন্তু তার প্রতারণার খপ্পরে পরে আর হজ্বে যাওয়া হলো না। আদমদিঘী উপজেলার চেরাগাড়ী গ্রামের আব্দুর রহমান জানান, তারাও স্বামী-স্ত্রী এক সঙ্গে হজ্বে যাবার জন্য ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু প্রতারক আজাদুলের খপ্পরে পরে আর হজ্বে যেতে পারলেন না তারা।

(বিএম/এসসি/সেপ্টেম্বর২৩,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test