E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুয়াকাটায় নিখোঁজ মেডিকেল ছাত্রের সন্ধান মেলেনি

২০১৫ অক্টোবর ০৯ ১৮:৪৯:৩৬
কুয়াকাটায় নিখোঁজ মেডিকেল ছাত্রের সন্ধান মেলেনি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে সমুদ্রস্নানে নেমে নিখোঁজ বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্র মাহামুদুল হাসান মামুনের গত ২৭ ঘন্টায়ও খোঁজ মেলেনি।

সাঁতার না জানার কারণে সমুদ্রের ভাটার টানে তাকে গভীর সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এ ধারনা নিয়ে সাগরে বিভিন্ন মোহনায় তার সন্ধানে উদ্ধার অভিযান শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ছেলের সন্ধানে গাজীপুর থেকে মামুনের পিতা আবুল হাসেম ও তার স্বজনরা শুক্রবার দুপুরে কুয়াকাটা এসেছেন। ছেলের সন্ধানে তারাও সৈকতের বিভিন্ন মোহনায় খুঁজে ফিরছেন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বন্ধুদের সাথে কুয়াকাটা ভ্রমনে এসে সাগরে গোসল করতে নেমে নিখাঁজ হয় শেবামেক’র ৪৫ তম ব্যাচের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মামুন। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।

মামুনের কাকা সুরুজ মিয়া জানান, শ্যামপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিএসসি শিক্ষক আবুল হাসেম মিয়ার দুই সন্তানের মধ্যে বড় মামুন। তার ছোট ছেলে ফাকা কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। মামুন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়ে তিন বছর আগে বরিশাল মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়।

মামুনের মামা সাদিউল ইসলাম জানান, প্রতিদিন সকালে মামুন তার মা মাহমুদা বেগম কে ফোন করতে। ১০/১৫ মিনিট কথা বলতো। শারীরিক খোঁজ খবর নিতো। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে মামুন আর ফোন করেনি। এতো বিচলিত তার মা কয়েকবার মামুনকে ফোন করলেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন পায়। কিন্তু বিকালে জানতে পারে মামুন কুয়াকাটায় বন্ধুদের সাথে ঘুরতে গিয়ে সাগরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়। তিনি বলেন, ছেলে নিখোঁজের সংবাদ পাওয়ার পর থেকে তার মা শয্যাশায়ী। পুত্র হারানোর শোকে একটু পরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।

জানাযায়, বরিশাল মেডিকেল কলেজের রেডক্রিসেন্ট ইয়ুথ ক্লাবের বার্ষিক ট্যুরে ৫১ জন ছাত্র ও ৪ জন ষ্টাফ কুয়াকাটা আসে বৃহস্পতিবার। ক্লাব সভাপতি সাজিদুল করিম সাজিদ এ ট্যুরের নেতুত্ব দেন। কিন্তু সাগরে গোসল শেষে অধিকাংশ ছাত্র হোটেলে ফিরে গেলে মামুন কয়েকজন সঙ্গীর সাথে বিকাল তিনটা পর্যন্ত সৈকতেই ছিলো। তারা গাড়ির চাকার টিউব নিয়ে সাগরে ভাসতে ছিলো।

ক্লাব সভাপতি সাজিদুল করিম সাজিদ জানান, তাদের এ সফল ছিলো পূর্ব নির্ধারিত। কিন্তু কখন কিভাবে মামুন সাগরে ভেসে গেছে তা কেউই জানাতে পারেনি এবং সৈকতে শতশত লোক থাকলেও কেউই বিষয়টি খেয়াল করে নি। তবে কুয়াকাটা সফরের আগে তারা কলেজ অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে বলেন এই সফরে কোন অফিসিয়ালি অনুমতি নিতে হয় না।

বরিশাল শেবামেক’র অধ্যক্ষ ভাস্কর সাহা সাংবাদিকদের জানান, কুয়াকাটা সফরে যাওয়ার আগে রেডক্রিসেন্ট ক্লাবের পক্ষ থেকে কেউ অনুমতি নেয়নি। ছাত্র নিখোঁজ হওয়ার পর মোবাইল ফোনে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বর্তমানে ঢাকায় আছেন। বরিশাল এসে বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।

কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘ বছর ধরে মাছ শিকার করেন এমন জেলে আলী হোসেন ও আলমগীর হোসেন বলেন, কুয়াকাটা সৈকতের এক দেড় কিলোমিটারের মধ্যে বিশাল চর জেগে উঠেছে। এ কারনে ভাটার সময় স্রোতের টান বেশি থাকে। তাদের ধারনা সাগরে তলিয়ে থাকায় মামুনের দেহ হয়তো গঙ্গামতি কিংবা কোন নদী মোহনায় ভাসিয়ে নিতে পারে। সে যদি সাগরে তলিয়ে থাকে তাহলে আগামী ১০/১৫ ঘন্টার মধ্যে যে কোন স্থানে তার দেহ ভেসে উঠবে।

কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশের এএসপি মীর ফাসিউর রহমান ও নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সঞ্জয় মন্ডল জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে সৈকতের জিড়ো পয়েন্ট থেকে অন্তত ২০ কিলোমিটার এলাকা পুলিশ,ট্যুরিষ্ট পুলিশ,কোষ্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা খুঁজেছেন। কিন্তু নিখোঁজ মামুনের সন্ধান পান নি। তাদের উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(এমকেআর/এএস/অক্টোবর ০৯, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test