E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শ্যাল্লের বিল জবরদখলের অভিযোগ

মান্দায় মৎস্যজীবী ও দখলবাজরা মুখোমুখি, সংঘর্ষের আশঙ্কা

২০১৫ নভেম্বর ২২ ১৬:৪৫:৩৬
মান্দায় মৎস্যজীবী ও দখলবাজরা মুখোমুখি, সংঘর্ষের আশঙ্কা

নওগাঁ প্রতিনিধি:নওগাঁর মান্দা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শালদহ মৌজার উন্মুক্ত জলমহাল শ্যাল্লের বিল জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মসলেম আলী ও বিহারোল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান বিলটি দখলে নিয়ে তাদের অনুগতদের দিয়ে প্রতিদিন মাছ শিকার করে যাচ্ছেন।

প্রভাবশালী এ দুই ব্যক্তির হুমকির মুখে মান্দা উপজেলার চার গ্রামের তিন শতাধিক মৎস্যজীবী ওই বিলে মাছ শিকার করতে পারছেন না। রবিবার মৎস্যজীবীরা বিলে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নেয়ায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দখলবাজ ও মৎস্যজীবীরা মুখোমুখি অবস্থান নেয়ায় সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তানোর উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানকে ওই বিলে মাছ শিকারের মৌখিক অনুমতি দিয়েছে মান্দা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আয়নাল হক। এতে ভরা মৌসুমেও বিলে নামতে না পারায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। ঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ তাদের। এদিকে গত চারদিন ধরে অফিস ছেড়ে লাপাত্তা রয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আয়নাল হক। তার ব্যবহৃত মোবাইলফোনটিও বন্ধ রয়েছে।

উপজেলার রুয়াই গ্রামের মৎস্যজীবী দেবেন চন্দ্র হালদার, শালদহ গ্রামের শ্রীবাস চন্দ্র হালদারসহ আরো অনেকে জানান, শালদহ মৌজায় ৩৫ দশমিক ২৬ একর আয়তনের শ্যাল্লের বিলটি একটি উন্মুক্ত জলাশয়। স্থানীয় মৎস্যজীবীদের স্বার্থে বিলটি উন্মুক্ত রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ মৌসুমে হঠাৎ করেই রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মসলেম আলী ও বিহারোল গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নানসহ তাদের অনুগতরা বিলটি জবরদখল করে মাছ শিকার শুরু করে।

এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার শালদহ, রুয়াই, পলাশবাড়ী ও ভারশোঁ গ্রামের মৎস্যজীবীরা বিলে মাছ শিকার করতে গেলে চেয়ারম্যান ও সাবেক মেম্বারের ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা লাঠি-সোটা নিয়ে ধাওয়া দিলে সংঘর্ষ এড়াতে পিছু হঠেন তারা। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান মসলেম আলী ও সাবেক মেম্বার আব্দুল মান্নানের নিকট থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়ে তাদের বিলে মাছ শিকারের মৌখিক অনুমতি দিয়েছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা। ঘটনায় জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে তাদের অভিযোগ।

স্থানীয়া জানান, উপজেলার শালদহ, রুয়াই, পলাশবাড়ী ও ভারশোঁ গ্রামের মৎস্যজীবীরা রবিবার ওই বিলে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নেয়ায় এলাকাজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যেকোনো মুহুর্তে মান্দার মৎস্যজীবীদের সঙ্গে দখলবাজদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

বিলে মাছ ধরার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় দাবি করে কামারগাঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মসলেম আলী বলেন, বিলটি বিহারোল গ্রামের মৎস্যজীবীরা মান্দার ভারশোঁ গ্রামের মৎস্যজীবীদের নিকট থেকে লীজ নিয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিনামা তার দপ্তরে সম্পাদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান জানান, বিলটি ৪৭ হাজার টাকায় ভারশোঁ মৎস্যজীবীদের নিকট থেকে লীজ নেয়া হয়েছে। ভারশোঁ মৎস্যজীবী সমিতি লীজ দেয়ার এখতিয়ার রাখে কি-না জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান। মৎস্য কর্মকর্তা অফিসে উপস্থিত না থাকার বিষয়ে ইউএনও সাইফুর রহমান খান কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। মৎস্য কর্মকর্তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। শ্যাল্লের বিল জবরদখল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মৎস্যজীবীদের স্বার্থে বিলটি উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। বিলটি কেউ জবরদখল করে মাছ শিকার করে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


(বিএম/এসসি/নবেম্বর২২,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test