E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

প্রচারণার ডামাডোলে ভাসছে বাগেরহাট শহর 

২০১৫ ডিসেম্বর ২৪ ১৭:৫২:২০
প্রচারণার ডামাডোলে ভাসছে বাগেরহাট শহর 

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট  : হযরত খানজাহানের পূণ্যভুমি বাগেরহাট পৌরসভা নির্বাচনে শীতকে উপেক্ষা করে মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রচারণার ডামাডোলে ভাসছে বাগেরহাট পৌর শহর। প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো পৌর এলাকা। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থীরা নানামুখী উন্নয়ন ও সমস্য সমাধানের বার্তা নিয়ে ছুটছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। আর দুপুর থেকে চলে ঢাকঢোল পিটিয়ে প্রচারণা, চলছে গভীর রাত পর্যন্ত।

নৌকা প্রতীকে ভোট দিলে এলাকার হবে উন্নয়ন, সুযোগ সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। সুপেয় পানির সু-ব্যাবস্থা, উন্নত ড্রেনেজ ব্যাবস্থা সহ বাড়বে নাগরিক সব সুবিধা। ভোটারদের এভাবেই প্রভাবিত করে ভোট প্রার্থনা করছেন সরকার দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র খান হাবিবুর রহমান । এছাড়া গত এক যুগ এই পৌরসভা পরিচালনার অজ্ঞিতাকে কাজে লাগিয়ে সহজেই সকল সম্যাস্যা দুরকরতে পারবেন বলে আশ্বাস দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী। অন্যদিকে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা, ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কিনা, সামগ্রিক পরিবেশ শান্ত থাকবে কিনা, ইত্যাদী নানামুখী আশঙ্কা নিয়েও প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী মিনা হাসিবুল হাসান শিপনসহ অন্য প্রার্থীরা। প্রার্থীরা হাতে লিফলেট নিয়ে বাগেরহাট পৌর এলাকার পাড়া মহল্লাায় চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচারণা। ভোটরদের কাছ থেকে মাথায় বুলিয়ে নিয়ে চেয়ে নিচ্ছেন দোয়া। তবে সব প্রার্থীই বিজয় নিশ্চিত বলে আশা করছেন।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী খান হাবিবুর রহমান নৌকা প্রতীক নিয়ে ছুটছেন ভোটারের বাড়ি বাড়ি। নৌকায় ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করলে বাগেরহাট পৌরসভাকে করা হবে মডেল পৌরসভা। উন্নয়ন করা হবে যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ হাটবাজারের। করা হবে সুপেয় পানির সুব্যাবস্থা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা এমনটাই আশ্বাস তার। খান হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গত এক যুগ বাগেরহাট পৌরসভা পরিচালনার করে বাগেরহাট পৌরসভার উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা দিয়ে যেভাবে পৌরবাসীর সাথে রয়েছি আসন্ন নির্বাচনে আমার সেই কর্মকান্ডের মুল্যায়ন করে পৌরবাসীও পুনরায় নির্বাচিত করে সেবার সুযোগ দিবে।’

তবে বাগেরহাটে রয়েছে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের একজন বিদ্রোহী প্রার্থী মিনা হাসিবুল হাসান শিপন। ইতিমধ্যে তাকে সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ হতে বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে তার স্বমর্থনে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সদর উপজেলা চেয়ারম্যান খান মুজিবর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সরদার মাসুদুর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সানিকে দল থেকে বহিস্কার ও পৌর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষনা দেওয়া হয়েছে। এতেও থেমে নেই আওয়ামী লীগের এই বিদ্রোহী প্রার্থী প্রচারনা। প্রার্থী (শিপন মিনা) স্বদলবলে লিফলেট হাতে প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন জোরেসোরে।

মিনা হাসিবুল হাসান শিপন জানান, পৌরবাসীর কাছ থেকে যে সড়া তিনি পেয়েছেন তাতে জয়ের ব্যপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। পৌরসভার নাগরিক সেবা বাড়াবার লক্ষে তার সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচিত হলে সকলকে সাথে নিয়ে পৌরবাসীর সেবায় নিয়েজিত থাকবেন। তিনি বলেন, ‘জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস, মানুষ পরিবর্তন চায়। আর তাদের প্রতিনিধি হয়ে নির্বাচনে দাড়িয়েছি। কারচুপি না হলে বিজয়ী পৌর পিতা না হয়ে তাদের সেবক হয়ে জনগনের পাশে থাকবো।’

এদিকে বাগেরহাট পৌর নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী আব্দুল হাই ও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। তবে নির্বাচন কতটুকু অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে এ আশঙ্কা তাকে সারাক্ষণ তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। তার কর্মীদের গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়ে তিনি বড্ড চিন্তিত। তিনি বলেন, ‘দল তার হাতে ধানের শীষ তুলে দিয়েছে ,নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত। বাগেরহাট পৌরবাসীসহ দলের নেতাকর্মীরা তার পাশে রয়েছে।’

বসে নেই কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। তাদের নির্বাচনী এলাকার আয়তন কম হলেও প্রচার প্রচারনা চলছে জোড়েসোড়ে। তবে কিছুটা বিড়ম্বনায় ভোটারা, ইতোমধ্যে একেকজন ভোটারের কাছে প্রার্থীরা ৩/৪ পর্যন্ত গিয়ে নিয়েছেন দোয়া, চেয়েছেন ভোট।

বাগেরহাট পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি প্রথম সারির কোন নেতা দলীয় প্রার্থী না হওয়ায় নামকা ওয়াস্তে একজন প্রার্থী দিতে হয় সেভাবেই একজন নবিনকে প্রার্থী করেছে। খোদ বিএনপি অনেক নেতাসহ বাগেরহাট পৌরসভার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, বিএনপির এই প্রার্থী বাছাই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাদের বিদ্রোহী প্রার্র্থীর মধ্যে মুল প্রতিদ্বন্দিতা হবে বলে ধারনা করছেন সাধারন ভোটাররা। বাগেরহাটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর ভেতর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এটা এখন প্রায় নিশ্চিত।

১৯৫৮ সালের পহেলা এপ্রিল যাত্রা শুরু করা বাগেরহাট পৌরসভা বর্তমানে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। বাগেরহাটের পৌরসভায় ভোটার রয়েছেন ৩৫ হাজার ৭শ ৮৭ জন। এর মধ্যে পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারদের সংখ্যা বেশি। নারী ভোটার ১৮ হাজার ১ শত ৩৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৬শত ৫৪ জন। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন ৪ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ৩২ জন সাধারন কাউন্সিলর এবং ৩টি সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদের জন্য লড়ছেন ৯ জন প্রাথী।



(একে/এস/ডিসেম্বর২৪,২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test