E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভূমিকম্পে নড়াইলে স্কুল ভবনে ফাটল, ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষ বর্জন

২০১৬ জানুয়ারি ০৫ ১৫:০৪:১০
ভূমিকম্পে নড়াইলে স্কুল ভবনে ফাটল, ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষ বর্জন

নড়াইল প্রতিনিধি : নতুন বইয়ের আনন্দ কিছুটা হলেও ফিকে হয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের। নড়াইলে ভূমিকম্পে একটি প্রথমিক বিদ্যালয়ের ভনে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। খসে পড়ছে দেয়ালের প্লাস্টার ও পলেস্তারা। ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষ বর্জন করে আতঙ্কগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা মাঠেই চলছে পাঠদান। দ্রুত সংষ্কারের দাবি স্থানীয়দের।

সদ্যপ্রাপ্ত নতুন বইয়ের গন্ধে উৎসবে যখন স্কুলের আঙ্গীনা। ঠিক তখনি আকষ্মিক ভূমিকম্পে হতাশ হতে হল শিক্ষার্থীদের। নতুন বই নিয়ে আর বেঞ্চে বসা হলনা । নড়াইল জেলা শহর থেকে পূর্বদিকে প্রায় ৪০ কিঃমিঃ দুরত্বে চরাঞ্চলের দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে স্থাপিত হয়। পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলা সীমারেখার চতুর্দিকে নদীবেস্টিত হওয়ায় বিচ্ছিন্ন এ জনপদ অনেকাংশেই অবহেলিত।

তারপর গত ৪ জানুয়ারির ভূমিকম্পে এ জনপদের একমাত্র ৮৮ নং চরপাচাইল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। খসে পড়ছে দেয়ালের প্লাস্টার ও পলেস্তারা।বিমের রডগুলোও মরিচা ধরে ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এ অবস্থায় পাঠদানের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষ বর্জন করে আতঙ্কগ্রস্থ শিক্ষার্থীদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রধান শিক্ষক ও অত্র বিদ্যালয়ের এসএমসি।

১৯৯৮ সালে মশিউর রহমান (বাবু) নামে এক ব্যাক্তির ঠিকাদারিত্বে বিদ্যালয়ের ভবনটি নির্মান করেন। স্থানীয়দের অভিযোগ অত্যন্ত নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী হওয়ায় সামান্য ভূমিকম্পের ঘটনায় ভবনের এমন অবস্থা হয়েছে। যা নড়াইলসহ অন্য কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন ধসের ঘটনা শোনা যায়নি। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি তদন্তের দাবিও জানান স্থানীয় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

বিদ্যালয়টি প্রাক্তন প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক আবুতাহের লস্কর, এসএমসি সভাপতি ফরিদ আলী খান এবং জনপ্রতিনিধি ইউপি সদস্য মোঃ ফায়েক আলী খান বলেন আকষ্মিক ভূমিকম্পে বিদ্যালয়ের বর্তমানে যে অবস্থা তাতে এর মধ্যে কোনভাবেই ক্লাস করা সম্ভব নয়। সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দ্রুত সংষ্কারের দাবিও জানান তাঁরা।

অভিভাবক আবু তালেব লস্কর ও লিপন খান জানান, নিম্নমানের নির্মাণ সমগ্রী হওয়ায় সামান্য ভূমিকম্পে স্কুলের ভবনটি এভাবে ধসে গেছে। এ ব্যাপারে একটি তদন্তের দাবিও জানান তিনি।

এলাকাবাসীর অভিযোগ নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় সামান্য ভূমিকম্পেই ভবনটির এ দুরবস্থা। অচিরেই ক্ষতিগ্রস্থ বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা তদন্ত করে দ্রুত সংষ্কারের দাবি স্থানীয়দের।

খোলা আকাশের নিচে রোদ আর ধুলাবালিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোমলমতি শিশু-শিক্ষার্থীদের এদুর্ভোগের যেন শেষ নেই। অচিরেই এই দুর্ভোগ নিরসনের দাবী শিক্ষার্থীদের।

স্কুলের চতুর্থ শ্রেনির ছাত্রী মিথিলা খানম, নিরব এবং ৫ম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ জানায়, সকালে স্কুলে এসে ভবনে ধস দেখে তারা ঘাবড়ে যায় পরে শিক্ষকরা এসে অবস্থা দেখে পরে আমাদের নিয়ে খোলা মাঠে ক্লাস নিচ্ছেন।

এব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজা জানান, অত্র বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষককে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদান বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং দ্রুত নিজে পরিদর্শন করে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

(টিএআর/এএস/জানুয়ারি ০৫, ২০১৬)


পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test