E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সুন্দবনের অভয়ারন্য থেকে ফ্লাইং ক্যামেরাসহ ড্রোন আটক

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ০৮ ২০:৩৩:২১
সুন্দবনের অভয়ারন্য থেকে ফ্লাইং ক্যামেরাসহ ড্রোন আটক

শেখ আহসানুল করিম,বাগেরহাট :বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনে কটকা অভয়ারণ্যের আকাশে উড়ানো ড্রোন আটক করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে বন বিভাগ ও বিদেশী তিন সাংবাদিক। সপ্তাহখানেক আগে সুন্দরবনে ড্রোনের সাহায্যে ছবি তোলার সময় বন বিভাগ বিদেশী ওই তিন সাংবাদিককের ব্যবহৃত ড্রোনটি আটক করে। সুন্দরবন বিভাগের পূর্ব অনুমতি না নিয়ে অভয়অরন্যে ড্রোন উড়িয়ে বিপাকে পড়া ফ্রান্সের ‘এআরটিই’ টেলিভিশনের তিন সাংবাদিক এখন বিপাকে পড়েছে।

একই অবস্থা হয়েছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগেরও। বন বিভাগ এখন আটক এই ড্রোনটি বিষয়ে কি সিদ্ধান্ত নিবে তা নিয়ে একবার দৌড়াচ্ছে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আর যোগাযোগ করে চলেছে উর্ধতন বন কর্মকর্তাদের সাথে। এক সপ্তাহেও এই আটক ড্রোন নিয়ে কোন সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারেনি পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ সুত্রে জানাগেছে, পাগমা টুর এন্ড ট্রাভেল্স কোম্পানী এমএল বাওয়ালী লঞ্চে করে অন্যান্যদের সাথে ফ্রান্সের ‘এআরটিই’ টেলিভিশনের তিন সাংবাদিক গাই কিউসি, টিমো এভাম্যান ও নাসিম এলমাউন এত সুন্দরবন ভ্রমণে আসেন। ৩১ জানুয়ারী সকাল ১১টার দিকে এই তিন সাংবাদিক কটকা ওয়ার্ড হেরিটেজ বনের আকাশে ক্যামেরা সমৃদ্ধ একটি ড্রোন উড়িয়ে বন্য প্রানীসহ জীব বৈচিত্র্যের ছবি ধারণ করতে থাকে। বিষয়টি প্রথমে জেলে-বনজীবীদের নজরে এলে কটকা অভয়ারণ্যে সোরগোল পড়ে যায়। পরে কটকা অভয়ারণ্যে কর্মকর্তা ফরেষ্ট রেঞ্জের শাহ নোমান তিন সাংবাদিককে উড়ানো ঐ ড্রোনটি নিচে নামিয়ে আনতে বাধ্য করে। এই অভায়ারণ্যে ড্রোন উড়ানোর জন্য সুন্দরবন বিভাগ থেকে কোন পূর্ব অনুমতি না নেয়ায় ড্রোনটিকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে ঐ তিন সাংবাদিক সুন্দরবন নিয়ে তাদের দেশের টেলিভিশনের জন্য ডকুমেন্টারী করার কথা জানালে ড্রোনটি রেখে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

ফ্লাইং ক্যামেরাসহ আটক ওই ড্রোনটি হচ্ছে ডিজেআই কম্পানীর। যার মডেল নং- পি-৩৩০জেড, সিরিয়াল নাম্বার পিএলএল-৬৩৬১৫৪১২৬। একটি ব্যাটারীসহ ড্রোনটির সাথে একটি রিমোটও রয়েছে। এই ড্রোনটি বাংলাদেশে আনার জন্য কাস্টম্স ক্লিয়ারেন্স ও বাংলাদেশে আকাশে ওড়াবার জন্য বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কোন অনুমতিও দেখাতে পারেনি ফ্রান্সের ঐ তিন সাংবাদিক। পরে আটক ঐ ড্রোনটি বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের অফিসে এনে, নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। জানানো হয় হয় বন মন্ত্রনালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাদের। গত এক সপ্তাহ ধরে আটক এই ড্রোনটির বিষয়ে সুষ্ঠ কোন সমাধানে পৌছাতে পারেনি সুন্দরবন বিভাগ।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক্ষক ( এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ কটকা অভয়ারণ্য থেকে ড্রোন আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এখন এই ড্রোনটির বিষয়ে কি করা হবে তা জানতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে সোমবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রনালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে সে মতে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

অন্যদিকে পাগমা টুর এন্ড ট্রাভেল্স কোম্পানীর মালিক নজরুল ইসলাম দাবি করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে ‘এআরটিই’ টেলিভিশনে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সুন্দরবন নিয়ে ডকুমেন্টারী তৈরি করতে ‘জেড’ প্রোডাকশন কোম্পানী তিন সাংবাদিককে বাংলাদেশে পাঠায়। তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অনুমতি নিয়ে আমাদের মাধ্যমে সুন্দরবন ভ্রমনে যায়। গত ৩১ জানুয়ারি ড্রোনে ফ্লাইং ক্যামেরার সাহায্যে সুন্দরবনে বন্য প্রাণী ও জীব বৈচিত্র্যের ছবি ধারণ কালে বন বিভাগ ঐ ড্রোনটি নিচে নামিয়ে আনতে বাধ্য করে। পরে ডকুমেন্টারীর বিষয়টি জানতে পেরে ড্রোনটি রেখে ঐ তিন সাংবাদিককে বন বিভাগ ছেড়ে দেয়।

সুন্দরবনে ড্রোন উড়াতে বন বিভাগের অনুমতির বিষয়টি ঐ তিন সাংবাদিকের জানা না থাকার কারনে তারা বিড়ম্বনায় পড়েছে। তারা এই বিষয়টি না জানার কারন উল্লেখসহ ভুল স্বীকার করে সুন্দরবন বিভাগের কাছে ড্রোনটি ফেরত চেয়ে আবেদন করেছে। সোমবার পর্যন্ত তারা এ বিষয়ে কোন সুষ্ট সমাদানে পৌঁছানো যায়নি। বিষয়টির সুষ্ট সমাধানের জন্য ঐ তিন সাংবাদিক ঢাকার ফ্রান্স দুতাবাসের হস্তক্ষেপ কামনা করে এখন তার ঢাকায় অবস্থান করছে।

(এসএকে/এস/ফেব্রুয়ারি০৮,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test