E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যশোরে শহীদ মিনারে বোমাবাজি, আটক ১০

২০১৬ ফেব্রুয়ারি ২১ ১৬:৩১:৪৬
যশোরে শহীদ মিনারে বোমাবাজি, আটক ১০

যশোর প্রতিনিধি : যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে বোমাবাজির ঘটনায় পুলিশ এমএম কলেজের আসাদ হলে রবিবার সকালে অভিযান চালিয়ে বহিরাগত ১০ জনকে আটক এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।

আটককৃতরা হলেন- শহরের রেলগেট এলাকার রকি (২২), সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের গাজী হাসান (২০) শার্শা উপজেলার নহিহাটি রাশেদ নিয়াজি (২৪) বেনাপোলের কাগজপুর এলাকার সুমন হোসেন (২১), খুলনার আড়ংঘাটার মিথুন সরকার (২৬), ঝিনাইদহের মহেশপুরের ডালভাঙ্গা গ্রামে এএম আকাশ (২২), কচুয়ার পোতা গ্রামের জেডএ বিজয় (২৫), বাঘাডাঙ্গা গ্রামের তিতাস মিয়া (২৩) কোটচাঁদপুর উপজেলার মানিকদিহি গ্রামের শাহিন (২২) ও মাগুরার শালিখার নাঘোপা গ্রামের মহিদুল ইসলাম (১৯)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০০ গ্রাম গান পাউডারসহ বোমা তৈরির সরঞ্জাম, ১০টি হাতবোমা ও ১৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়।

এ আটকের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল বলেন, ‘শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর এমপি নাবিল আহমেদের সাথে থাকা সন্ত্রাসী ম্যানসেলের নেতৃত্বে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর এমপির গাড়িচালক গুলিবর্ষণ শুরু করে। আর পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীদের আটক করছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে যশোর এমএম কলেজ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করতে যান স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর ও পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান। এর পরপরই পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. শাহাদাৎ হোসেন, এমএম কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মিজানুর রহমান।

এ সময় হঠাৎ করেই মূলগেটসহ প্রবেশপথের পুরোটাই উন্মুক্ত করে দেয় পুলিশ। ফলে শহীদ বেদিতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হট্টগোল করে মিনারের পাদদেশে চলে যায়।

এর পরপরই শহীদ মিনারের উত্তরপাশে একটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর পুলিশ লাঠিচার্জ ও ফাঁকা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এ সময় পুলিশ অন্তত ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। এতে গোটা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা নারী, পুরুষ ও শিশুরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে। তবে বোমা বিস্ফোরণ বা গুলিবর্ষণে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পর ফুল দিতে আসা বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণিপেশার মানুষ ফুল না দিয়েই বাড়ি ফিরে যায়।

এদিকে, শহীদ মিনারে বোমাবাজি ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় পুলিশের দুর্বল নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দায়ী করেছে যশোর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।

সকালে শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর শপথ গ্রহণ শেষে জোট সভাপতি ডিএম শাহিদুজ্জামান বলেন, ‘প্রশাসন শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা তীব্র ভাষায় এর নিন্দা জানাই।’

তবে পুলিশের এএসপি শাফিন মাহমুদ নিরাপত্তা ত্রুটির অভিযোগকে অস্বীকার করে বলেন, ‘সেখানে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। শহীদ মিনারের ভেতরে কেউ বোমা ফেলেনি। বোমা পড়েছে কলেজ প্রাচীরের বাইরে।’

তবে শহীদ মিনার এলাকায় কেন গুলি করা হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্যই পুলিশ গুলিবর্ষণ করে।’

একইসাথে তিনি জানান, হামলায় জড়িত অভিযোগ এমএম কলেজের আসাদ হল থেকে বহিরাগত ১০ জনকে আটক ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

(ওএস/এএস/ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test