E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাটমোহরে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা, অভিযুক্ত শিক্ষকের জেল-জরিমানা

২০১৬ মার্চ ১০ ১৬:১৫:৩৪
চাটমোহরে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা, অভিযুক্ত শিক্ষকের জেল-জরিমানা

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি :পাবনার চাটমোহর উপজেলার চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করার অভিযোগে শিক্ষক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী।

বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। পরে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন ভ্রাম্যমান আদালত। অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলাম উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাখালি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ে ইংরেজী বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক।

স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চড়ইকোল উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজী বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বেশকিছু ধরে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় বিভিন্ন অজুহাতে ছাত্রীদের শরীরে হাত দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত মঙ্গলবার (৮মার্চ) ক্লাস চলাকালীন ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীর শরীরে হাত দেন শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। বিষয়টি বুধবার সকালে জানাজানি হওয়ার পর ফুঁসে ওঠে স্কুলের শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা।

শিক্ষক রফিকুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে চড়ইকোল বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে স্কুল ও আশপাশের এলাকায়। এসময় রোষানল থেকে বাঁচতে স্কুল কক্ষে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটকে রাখেন অন্যান্য শিক্ষকরা।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান পুলিশ নিয়ে স্কুলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষককে আটক করেন। এ সময় তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হয়।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাপস রঞ্জন জানান, আমি কয়েকদিন ছুটিতে ছিলাম। আজ স্কুলে এসে বিষয়টি জানতে পারি। শিক্ষার্থীরা শিক্ষক রফিকুলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছে। আমরা সেটি নিয়ে কিছু করার আগেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানালে তিনি এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়। পরে জরুরী বৈঠকে বসেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। বৈঠকে আলোচনা শেষে অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুলকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মিজানুর রহমান জানান, ভ্রাম্যমান আদালতে স্বাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আটক অভিযুক্ত শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেয়া হয়।

প্রসঙ্গতঃ ইতোপূর্বে ২০০৫ সালে অবৈধ সম্পর্ক ও ছাত্রীদের যৌন হয়রানী এবং আপত্তিকর আচরণের অভিযোগে স্কুলের ম্যােিনজিং কমিটি শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করেন। ২৩ আগষ্ট’২০০৫ তারিখে ম্যানেজিং কমিটির সভায় রফিকুলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে স্থায়ী বরখাস্ত করা হয়। এরপর স্কুলের কমিটি পরিবর্তন হলে মোটা অর্থের বিনিময়ে লম্পট শিক্ষক রফিকুল ইসলামকে পুনরায় নিয়োগ প্রদান করেন। আবারো সে পূর্বের চরিত্রে আবির্ভূত হন।

(এসএইচএম/এস/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test