E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাউফলে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্ণীতির অভিযোগ

২০১৪ জুন ০৩ ১৫:১৩:৫৭
বাউফলে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্ণীতির অভিযোগ

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা শিক্ষাকর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্ণীতি ও শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার অর্ধশত শিক্ষকদের স্বাক্ষরিত এ সংত্রান্ত অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবরে দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে মো. লুৎফর রহমান ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর এ উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি ঘুষ বানিজ্য করছেন। তাঁর দাবীকৃত ঘুষ না দিলে বদলী হওয়া ও টাইম স্কেল পাওয়া যায় না। ঘুষ না দেওয়ায় সদ্য সরকারি হওয়া শিক্ষকের আট মাসের পরিবর্তে এক মাসের বেতন পাশ করেছেন তিনি। দপ্তরী কাম প্রহরী নিয়োগেও তাঁকে ঘুষ দিতে হয়। সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে প্রতি বছর সমাপনী পরীক্ষার প্রশংসা সনদ বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বিভিন্ন প্রয়োজনে শিক্ষকরা শিক্ষাকর্মকর্তার সঙ্গে সাক্ষাত করলে তাঁদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাউফল পৌরসভার এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, তাঁর বদলির জন্য শিক্ষাকর্মকর্তা তাঁর কাছে দশ হাজার টাকা দাবি করে। পরে তিন হাজার টাকা দিয়ে তিনি বদলি হয়েছেন। আরেক শিক্ষক বলেন, পনের হাজার টাকা দিয়ে তিনি বদলি হয়েছেন। এ রকম বদলি বানিজ্য করে শিক্ষাকর্তা আড়াই বছরে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, সমাপনী পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় থেকে প্রশংসা সনদ দেওয়া হয়। ওই প্রশংশা সনদ শিক্ষাকর্মকর্তার কাছ থেকে বিশ টাকা দরে কিনে নিতে তিনি বাধ্য করেন। এ কারণে এ উপজেলার ২২৯ টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা কিনে নেন।
সদ্য সরকারি হওয়া রেজিষ্ট্রি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রধান শিক্ষক বলেন, রেজিষ্ট্রি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে সরকারি ঘোষনার পর প্রতি বিদ্যালয় থেকে শিক্ষাকর্মকর্তাকে দশ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। পরবর্তীতে আবার বেতন পাশের জন্য প্রত্যেক শিক্ষকের কাছে এক হাজার করে ঘুষ দাবি করা হয়। আর তা না দেওয়ায় আট মাসের পরিবর্তে এক মাসের বেতন পাশ করেছেন।
ওই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান বলেন, ‘শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান দুর্ণীতির সাথে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে পড়েছেন। টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না। দ্রুত তাঁর দুর্ণীতির তদন্ত করে ব্যবস্থা না নেয়া উচিত। অন্যথায় উপজেলার সব শিক্ষকরা আন্দোলনে নামবে তার হয়রানি থেকে রক্ষা পেতে।’
এব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক কামরুজ্জামান খান প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক বরাবরে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষক নেতৃবৃন্দেরও ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে ঘুষ দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে সাধারন শিক্ষকরাতো অসহায়। ঘুষ, দুর্ণীতি ও শিক্ষকদের সঙ্গে অশালীন আচরণের কারণে শিক্ষা কর্মকর্তার অপসারন চেয়ে সাধারন শিক্ষকরা বৃহত্তর আন্দোলনের কথা বলছেন।’
বাউফল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষঢ়যন্ত্র হচ্ছে। এক হাজার থেকে ১২০০ শিক্ষক রয়েছে এরমধ্যে স্বার্থান্বেষী কয়েকজন অভিযোগ করেছে। আমি কোন অন্যায় করি নাই। আমি নিয়মের মধ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

(এমএবি/এএস/জুন ০৩, ২০১৪)


পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test