E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হালুয়াঘাটে মাইকিং করে ডাক্তার খোঁজেন রোগী, সেবার নামে বাণিজ্য

২০১৬ মার্চ ২৭ ১৮:৩৭:৩০
হালুয়াঘাটে মাইকিং করে ডাক্তার খোঁজেন রোগী, সেবার নামে বাণিজ্য

হালুয়াঘাট(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : হালুয়াঘাটে মাইকিং করে ডাক্তার খোঁজেন রোগী সেবার নামে চলছে জমজমাট বাণিজ্য। উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চল থেকে শুরু করে প্রতিনিয়ত মাইকিং করে সর্বসাধারণকে ধোকা দিয়ে এক শ্রেণির অসাধু প্যাথলজি ব্যবসায়ী ও কতিপয় ডাক্তারদের সহযোগিতায় সেবার নামে সাধারণ জনগণের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা আংকের টাকা।

অত্র উপজেলায় মুখরোচক ডিজিটাল মাইকিং করে ময়মনসিংহ থেকে আগত এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর একাধিক ডাক্তারের নামকরণ করে। সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার আপামর জনসাধারণ। জানা যায়, অত্র উপজেলায় প্রায় ২৪ টি প্যাথলজি ও ক্লিনিক রয়েছে। এর অধিকাংশের নেই সরকারি অনুমোদন, নেই প্রশিক্ষিত ল্যাব টেকনিশিয়ান। অধিকাংশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর ডাক্তারদের প্রাইভেট প্র্যাকটিসের উপযুক্ত স্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এ সমস্ত প্যাথলজি। বিনিময়ে কতিপয় কিছু ডাক্তার প্যাথলজি মালিকদের সহযোগিতা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন অর্থ এবং আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন কতিপয় প্যাথলজি ব্যবসায়ী। বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষার পার্সেন্টিজ, রোগীদের কাছ থেকে ডাক্তার ফি বাবদ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কোথাও এর চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য যে সমস্ত পরীক্ষার ফি আদায় করা হয় তারমধ্যে অন্যতম ইসিজি-২৫০ থেকে ১০০০ টাকা, আলট্রাসনোগ্রাম- ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, সিবিসি-২৫০ টাকা উয়ডাল টেস্ট ২০০ টাকা, এইচবিএসএজি-৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা ফি হিসেবে আদায় করা হচ্ছে। যদিও কোন প্যাথলজিতে হার্ড স্পেশালিস্ট নেই, অধিকাংশেই রয়েছে ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ান কোথাও ডিপ্লোমা টেকনিশিয়ানও নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, একাধিক প্যাথলজি ব্যবসায়ী জানায়, আমরা ডাক্তারদের নামে মাইকিং করি ওনাদের অনুমতিক্রমে এবং প্রতি রোগীতে, পরীক্ষার জন্য পার্সেন্টিজ দিয়ে থাকেন। অত্র উপজেলার উল্লেখ্যযোগ্য প্যাথলজি গুলো হল- আকন্দ ক্লিনিক, দি পপুলার, আল-শেফা, নিরাপদ, আজাদ, আল-নূর প্যাথলজি এন্ড ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার, বিআরডিবি মার্কেট ও উপজেলা গেইট সংলগ্ন। তিথি জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার, কলেজ গেইট সংলগ্ন, সীমান্ত প্যাথলজি, কামারপট্রি, সোমা প্যাথলজি, আহ্সান ক্লিনিক এন্ড প্যাথলজি, উত্তর বাজার, উর্ণী ও মা,ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার, ধোবাউড়া বাসট্যান্ড, ইফাদ, হাসান, সৃষ্টি প্যাথলজি ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার, ধারা বাজার, বন্ধন ও ভাই ভাই প্যাথলিজ, নাগলা বাজার, আকন্দ ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার, বাঘাইতলা, আবু তালেব, সম্পা প্যাথলজি, সূর্যপুর বাজার, ডাকিয়াপাড়া প্যাথলজি, ডাকিয়াপাড়া, হালুয়াঘাট, শোভা ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার, আলিসা বাজার, নাহিদ প্যাথলজি, কুমুরিয়া, ইসলাম প্যাথলজি, মহিলা মার্কেট প্রভৃতি। একাধিক সেবা নিতে আসা অসুস্থ ব্যক্তির স্বজনরা জানান, ডাক্তারদের নিকট যাওয়া মাত্রই বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষার জন্য কাগজ টুকে দেন এবং তাদের মনোনীত প্যাথলজি ও ডায়গোনোষ্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করার জন্য বলে দেন। অনেক সময় এ সমস্ত পরীক্ষার কাগজপত্রাদি ময়মনসিংহ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদেও দেখানো হলে পূনরায় পরীক্ষা করাতে হবে বলে তারা জানান। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এম.এ কাদের জানান, ডাক্তারদের নামে যে মাইকিং করা হচ্ছে তার লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্যাথলজি মালিকদের সাথে হয়তো ডাক্তারদের সমঝোতা থাকতে পারে। তিনি আরো বলেন, অবৈধ প্যাথলজিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে হবে। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন, ময়মনসিংহ মোঃ মোস্তফা কামাল জানান, তিনি অতি শ্রীঘই অত্র উপজেলায় পরিদর্শনে আসবেন। অবৈধ তালিকায় যাদেরকে পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেলালুজ্জামান সরকার এ প্রতিবেদক কে জানায়, বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে ইতিমধ্যে কথা বলেছেন, প্যাথলজি ও ডায়গোনোষ্টিক সেন্টার গুলির তালিকা প্রণয়নের জন্য অবহিত করেছেন। অবৈধ প্যাথলজি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।


(জেসিজি/এস/মার্চ২৭,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test