E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বড়লেখায় পানি নিষ্কাশনের  নালায় বাঁধ ১ মাস ধরে পানিবন্দী ৪০ পরিবার

২০১৬ এপ্রিল ২০ ২১:০১:৪৬
বড়লেখায় পানি নিষ্কাশনের  নালায় বাঁধ ১ মাস ধরে পানিবন্দী ৪০ পরিবার

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :মৌলভীবাজারের বড়লেখায় রাস্তার পাশের পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ করে দেয়ায় ১ মাস ধরে পানিবন্ধী হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে প্রায় ৪০ পরিবারের মানুষ। এলাকাবাসীর অমানবিক জনদুর্ভোগের অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তর মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন তিন কর্ম দিবসের মধ্যে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সুগম করার নির্দেশ দিলেও প্রভাবশালীরা এর তোয়াক্কা করেনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউপির ঘোলসা রাজারগুল গ্রামের সোনাহর আলী, মহব্বত আলী, এখলাছ আলী প্রমুখের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার পাশের নালা দিয়ে এলাকার পানি নিষ্কাশিত হয়ে আসছে। কিন্তু অভিযুক্তরা গত বছর নালাটি বন্ধ করে দিলে রাস্তা তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে জনসাধারণের রাস্তা দিয়ে চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাপনেও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। পরে এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বাঁধ কেটে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করা হয়।

এদিকে গত প্রায় তিন মাস আগে এসব প্রভাবশালীরা পুনরায় নালায় বাঁধ দেয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে এলাকাবাসী এবারও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। সরেজমিন গত ২২ মার্চ সিনিয়র উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা আবু ইউসূফ তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভুষণ পাল গত ১৭ এপ্রিল অভিযুক্ত সোনাহর আলী গংদের তিন কর্মদিবসের মধ্যে নালার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সুগম করে এরূপ কর্মকান্ডের কারণ লিখিতভাবে ব্যাখ্যাসহ দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনের লিখিত নোটিশ প্রাপ্তির পরও বুধবার বিকেল পর্যন্ত পানি নিষ্কাশন করা হয়নি। ফলে পানিবন্ধী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

গতকাল সরেজমিনে এলাকায় গেলে গ্রামের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা ফারুক আহমদ, অভিযোগকারী নুর উদ্দিন, জইন উদ্দিন, দীপক রঞ্জন দাস প্রমুখ জানান, চারজন ব্যক্তির কারনে গ্রামের প্রায় ৪০ পরিবারের কয়েকশ’ মানুষ ১ মাস ধরে অমানবিক দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল কলেজে যেতে পারছে না। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় সনাতন সম্প্রদায়ের কালাচাঁদ বাড়ির পূজা পার্বন বন্ধ রয়েছে।

অভিযুক্ত সোনাহর আলীর ভাই মাহব্বত আলী জানান, অনেক দিন আগে এখানে গোপাট (নালা) ছিল। পরে এটা ভরাট হয়ে রাস্তার সৃষ্টি হয়। আমরা এখানে জায়গা ক্রয় করে এসেছি। রাস্তাটি আমাদের মালিকানা জায়গায় পড়েছে। রাস্তা হিসেবে এটার কোন রেকর্ডও নেই। এটা নিয়ে সমাধানের জন্য অনেকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সমাধান হয়নি। এ বিষয়ে তদন্তের মাধ্যমে রেকর্ড অনুয়ায়ী সঠিক রাস্তা নির্ণয় করার দাবি জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভুষন পাল বলেন, ‘নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ১৭ এপ্রিল অভিযুক্তদের ৩ দিনের মধ্যে নালার পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা সুগম করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

গতকাল অভিযুক্ত সুনাহর আলী লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ব্যাখ্যায় তিনি আবেদনকারী নূর উদ্দিনকে অভিযুক্ত করেছেন। তাঁর অভিযোগ আবেদনকারী নিজেই মাটি দিয়ে রাস্তা বন্ধ করেছেন। রাস্তার জায়গাটি সুনাহর আলী তাদের নিজের বলেও উল্লেখ করেছেন। তবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করার বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
(বিএম/এস/এপ্রিল২০,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test