E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির নীলকুঠিভবন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দখলে !

২০১৬ এপ্রিল ২৩ ১৩:৫৫:৩৫
রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির নীলকুঠিভবন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দখলে !

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :শাহজাদপুরের প্রানকেন্দ্র দ্বারিয়াপুরে ৪.৬৮ একর জমির উপর রয়েছে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারিবাড়ি,এখানেই রয়েছে নীলকরদের নীলকুঠি, এই নীলকুঠিরটি এখন কাছারিবাড়ির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি আবাসন হিসেবে ব্যবহার করায় রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি দেখতে আসা দেশ বিদেশের দর্শনার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে ইতিহাস গাঁথা নীলকুঠির এ  ভবনটি দেখতে।

কাছারিবাড়ির আঙ্গিনায় কর্মকর্তা কর্মচারিদের আবাসন থাকায় কাছারিবাড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থা হুমকির মুখে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রবীন্দ্র কাছারিবাড়ির কাষ্টোডিয়ান হালিমা আফরোজ। তিনি জানান, কাছারিবাড়ির নিরাপত্তার স্বার্থেই তাদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ নীলকুঠি ভবনটিতে থাকতে হচ্ছে।

এদিকে কাছারিবাড়ির পশ্চিম দিকে অবস্থিত এই নীলকুঠি ভবন তৎকালিন বৃটিশ আমলে নির্মিত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শাহজাদপুরে জমিদারীর দায়িত্ব পাওয়ার পর এই নীলকুঠিতেই খাজনা আদায়ের সেরেস্তা বানিয়েছিলেন। তাই এই ভবনটি তখন থেকেই ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। তাই এটিও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর অধিগ্রহন করে নেয়। বর্তমানে এ ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকলেও ভবনের একটি অংশ মেরামত করে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের লোকজন এখানে বসবাস করছেন।

৯টি পরিবারের প্রায় ৩০জন সদস্য এ জরাজীর্ণ ভবনটিতে মাথা গোজার ঠাঁই করে নেয়ায় ভবনটি দর্শনার্থীদের দেখার সুযোগ আর নেই। এ ভবনের উত্তর পাশে সেমিপাকা একটি ঘরে বসবাস করছেন কুঠিবাড়ির কাষ্টোডিয়ান হালিমা আফরোজ। এই নীলকুঠি নিয়ে কথা হয় কাষ্টোডিয়ান হালিমা আফরোজ এর সাথে।

তিনি জানান, নীলকুঠিটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় এটি একটি ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও জানান, কাছারিবাড়িতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আলাদা একটি আলাদা ভবন হলেই এটি ছেড়ে দেয়া হবে। তবে তিনি জানান, নীলকুঠিরটি পূর্বে অবয়ব ফিরে আনার জন্য উর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে একাধিক চিঠি দেয়া হয়েছে।

গত বুধবার রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি দেখতে আসেন, ঢাকার ইনডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ বিভাগের শিক্ষার্থী তনিমা খাতুন । তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, রবীন্দ্র কাছারিবাড়ি জাদুঘরটি দেখার সূযোগ হলেও নীলকুঠি ভবনটি দেখতে ব্যার্থ হয়েছি। তিনি বলেন, বইপুস্তকে নীলকরদের বিষয়ে জানলেও ভবনটি বেদখল হয়ে থাকায় তা দেখতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।

রবীন্দ্র ভক্তরা দাবি করেন, আগামী ২৫শে বৈশাখ কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিনের আগেই এ ভবনটি দর্শনার্থীদের জন্য উস্মক্ত করা হলে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি ধন্য এ ভবনটিও দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন।

এ বিষয়ে কথা হয় শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আহমেদ এর সাথে, তিনি জানান, বিষয়টি প্রতœতত্ব বিভাগের নিয়ন্ত্রনে। তারাই এ বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে এটি উম্মুক্তর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করা হয়েছে।

এদিকে প্রত্নত্ববিভাগের মহাপরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন জানান, বিষয়টি গত সপ্তাহে জানতে পেরেছি। কয়েকটি পরিবার ওখানে বসবাস করছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এটিপি/এস/এপ্রিল২৩,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test