E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মিথ্যা মামলা ও হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

২০১৪ জুন ০৫ ১৪:০৭:২৫
মিথ্যা মামলা ও হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেওয়ায় ছেলেদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।  এক ছেলেকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে মালামাল লুটের মামলায় চেয়ারম্যান ও আসামীদের দারা প্রভাবিত হয়ে পুলিশ আদালতে মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

এসব ঘটনার প্রতিকার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সস্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এসব অভিযোগ করেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের পিরোজপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেন সরদার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইসমাইল সরদার বলেন, তার সেঝ ছেলে আব্দুর রব খাজরা ইউপি’র ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক। মেঝ ছেলে কামাল হাসান মিলন ২০১০ সালে বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে খাজরা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করার প্রস্তুতি নেয়। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থী ছিল যুদ্ধাপরাধী মামলার আসামী গদাইপুর গ্রামের মোজাহার সরদারের ছেলে জিএম শাহানেওয়াজ ডালিম। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করায় তার (ইসমাইল) পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ডালিম চেয়ারম্যান ও তার লোকজনের সম্পর্কের অবনতি হয়। একপর্যায়ে ডালিম চেয়ারম্যানের লোকজন তার ছেলে আব্দুর রবের কাছে পাঁচ লাখ টাকার চাঁদা দাবি করে। নির্বাচন থেকে কামাল হোসেন মিলনকে সরিয়ে রাখতে ডালিম তার এক আত্মীয় পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে দু’ ছেলেকে কয়েকটি মামলায় জড়িয়ে দেয়। সব কয়টি মামলা থেকে অব্যহতি পেলেও একটি মামলা বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। মামলা হওয়ায় মিলন নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি। ফলে নির্বাচনে জয়লাভ করে জিএম শাহানেওয়াজ ডালিম। নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়া ও চাঁদার টাকা না পেয়ে ডালিম চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টার দিকে সেঝ ছেলে আব্দুর রবকে(৪৫) পিরোজপুর গ্রামের কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের উপর আব্দুল গফুরের দোকানের সামনে লোহার রড, লাঠি ও চাপাতি দিয়ে এলোপাতিাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি ভাঙচুর করে। নগদ এক লাখ টাকা, সোনার চেইন, মোবাইল সেটসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায় ওই চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। স্থানীয় লোকজন আব্দুর রবকে উদ্ধার করে করে অচেতন অবস্থায় খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার জায়গীর মহল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গ্রাম পুলিশ আব্দুর রবের ভাঙচুর করা মোটর সাইকেলটি উদ্ধার করে আশাশুনি থানায় জমা দেয়। বর্তমানে আব্দুর রব মানসিক ভারসাম্য হারানোর পথে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনায় থানা মামলা না নেয়নি। বাধ্য হয়ে গত বছরের ৪ মার্চ একই গ্রাম পিরোজপুরের ওমর আলী সরদারের ছেলে রিপন, দুর্গাপুর গ্রামের আছিরউদ্দিন গাজীর ছেলে লাভলু, করিম বক্স গাজীর ছেলে কামরুল গাজী, আনারুল গাজী, আছিরউদ্দিন সানার ছেলে ডাবলু গাজী, পিরোজপুর গ্রামের গহর আলীর ছেলে সাইফুল্লাহ, ওমর আলী সরদারের ছেলে রায়হান, কালিকাপুর রাউতাড়া গ্রামের মাওলা বক্স গাজীর ছেলে ইব্রাহীম গাজী, আদম গাজীসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা আমাকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি ধামকি দেয়। আদালতের নির্দেশে তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মনোজিৎ কুমার নন্দী বাদি ভিকটিম ও সাক্ষীদের জবানবন্দি না নিয়েই চেয়ারম্যান ডালিম ও আসামীদের দারা প্রভাবিত হয়ে আব্দুর রব গণধোলাইয়ের শিকার ও গণ লুটের শিকার হয়েছে মর্মে দায়সারা ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেন। হামলাকারিদের অধিকাংশদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি রুপসা থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে, ফকিরহাট থানায় অপহরণ ও ছিনতাইসহ আশাশুনি থানায় বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে চেয়ারম্যান ও তার সহযোগিরা ঠিকাদারের কাছে চাঁদার দাবিতে নির্মাণ সামগ্রী লুটপাট শেষে গত ৮ মে তারিখে খাজরা মালোপাড়ার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ বন্ধ করে দেয়। পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন সন্ত্রাসীদের পক্ষে যাওয়ায় আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা আবারো হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আব্দুর রব এর উপর হামলার ঘটনার পুন তদন্ত ও মামলায় বর্ণিত আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসমাইল হোসেন সরদারের ছেলে শহীদুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে ইউপি খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান শাহানেওয়াজ ডালিম জানান, তিনি ও তার কোন সমর্থকের বিরুদ্ধে ইসমাইল সরদারের ছেলেদের মিথ্যা মামলায় জড়ানো, চাঁদা চাওয়া ও হামলার অভিযোগ ঠিক নয়। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা করার বিষয়টি পুলিশ প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মনোজিৎ কুমার নন্দী জানান, কারো দারা প্রভাবিত হয়ে নয়, যথাযথ তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
(আরকে/এএস/জুন ০৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

১১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test