E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ কমাতে চালু হলো “ওয়ানষ্টপ সার্ভিস সেন্টার”

২০১৬ মে ১০ ১৫:০৭:৩৫
বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ কমাতে চালু হলো “ওয়ানষ্টপ সার্ভিস সেন্টার”

মিলন কর্মকার রাজু, কলাপাড়া : পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে ১৩২০ মেঘাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য “ভূমি অধিগ্রহনের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ক্ষতিপূরণের চেক বিতরণ” এবং ভূমি অধিগ্রহন সংক্রান্ত  ‘ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার’ উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার বিকালে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে চেক বিতরণ ও ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারের উদ্বোধন করেণ পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক ছিদ্দিকী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেণ পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বর। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক একেএম শামিমুল হক ছিদ্দিকী বলেন, অধিগ্রহন করা জমির মধ্যে আদালতে মামলা থাকায় ৪৮ ভাগ জমির ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া যাচ্ছেনা। তবে এতটুকু বলা যায়, জমির প্রকৃত মালিকরা ক্ষতিপূরণের টাকা যাতে পেতে পারে সে ব্যাপারে আমি নিজেই তদারক করছি। হয়রানি, বিড়ম্বনা কমানোর চিন্তা থেকেই ধানখালীতে বসে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ হাসান পাটোয়ারী, কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক আবদুল্লাহ আল ইসলাম, ধানখালী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ গাজী, ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি মো. শহীদুল আলম, ইউপি সদস্য মো. ফিরোজ তালুকদার প্রমুখ। এসময় কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দীপক কুমার রায়সহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভূমি অধিগ্রহন কর্মকর্তা লতিফা জান্নাতি।

ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ্য জসিম উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘এ এলাকার অধিকাংশ মানুষ এতদিন কৃষির ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। কৃষির উপার্জিত অর্থ দিয়ে আমরা সংসারের সকল খরচ, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ মেটাতাম। আমাদের ভিটে-মাটিসহ কৃষি জমি অধিগ্রহনের ফলে সে পথ এখন বন্ধ হয়ে গেছে। জমি অধিগ্রহনের জন্য যথাযথ মূল্য দেওয়া হলে আশার আলো দেখতাম।’

এক্ষেত্রে তিনি নতুন করে আর কোনো জমি অধিগ্রহন না করা, জমির ক্ষতিপূরণের মূল্য পূণঃনির্ধারণ, ক্ষতিপূরণের অর্থ সহজভাবে পাওয়ার ব্যবস্থা করা, ক্ষতিগ্রস্থ্য পরিবারের কর্মক্ষম লোকদের প্রকল্প এলাকার কাজে অন্তর্ভূক্ত করার আবেদন জানান।

জানা গেছে, ধানখালী ইউনিয়নের মধুপাড়ায় পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের জন্য ধানখালী ইউনিয়নের মধুপাড়া ও নিশানবাড়িয়া মৌজার মরিচবুনিয়া, দাসের হাওলা, মাছুয়াখালি, গরাৎ খাঁ, মধুপাড়া, চর নিশানবাড়িয়া এবং মধ্য দাসের হাওলা গ্রামের ১৩৮টি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছে। এ ছাড়া ওই গ্রামের অন্তত ১২০০ পরিবারের প্রায় এক হাজার একর কৃষি জমি অধিগ্রহনের ফলে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকার ক্ষতিপূরণ বাবদ শতাংশে ৫ হাজার ৭৮৫ টাকা প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে।

অনুষ্ঠান শেষে অধিগ্রহনকৃত ভূমির মালিকদের ৩১ জনকে ৫৯ লক্ষ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়। উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, অধিগ্রহনকৃত ৯৮২ দশমিক ৭৭ একর জমির ক্ষতিপূরণ প্রদান সহজিকরণের লক্ষ্যে এই ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার চালু করা হল। এখন থেকে প্রত্যেক সপ্তাহের সোমবার এবং বুধবার ধানখালী ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্থ্য ভূমির মালিকরা ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে নাগরিক সেবা পাবেন।

(এমকেআর/এএস/মে ১০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test