E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুয়াকাটায় থেমে গেছে প্রাণের স্পন্দন, সৈকত জুড়ে কংক্রিট ও প্রাকৃতিক জঞ্জাল

২০১৬ মে ২৪ ১৯:০৪:১৪
কুয়াকাটায় থেমে গেছে প্রাণের স্পন্দন, সৈকত জুড়ে কংক্রিট ও প্রাকৃতিক জঞ্জাল

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : যে সৈকতে শিশুদের হৈ-হুল্লোর, স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন যানবাহনে ওঠার বায়না কিংবা সাগরে ভাটার সময় পর্যটকরা বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলায় মুখরিত থাকতো। ঘূর্ণিঝড় “রোয়ানু” তান্ডবে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সেই সৈকতে এখন লন্ডভন্ড হয়েছে। সৈকতের জিড়ো পয়েন্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এখন শুধুই কংক্রিট ও ঝড়ের তোড়ে ভেঙ্গে পড়া গাছের জঞ্জাল।

সাগর পাড়ের প্রাকৃতিক দেয়াল যেমন উপড়ে ফেলেছে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু’র নৃশংশতায়, তেমনি সাগরের জালোচ্ছাসে ভাসিয়ে নিয়ে এসেছে এ প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের জঞ্জাল। মূল সৈকতের জিড়োপয়েন্ট থেকে পশ্চিমের শুটকি পল্লী ও লেম্বুর বনাঞ্চল এবং পশ্চিমে নারিকেল কুঞ্জ, ইকোপার্ক ও ঝাউবাগান এলাকায় এখন শুধুই ধ্বংসস্তুপ। সাগরের ঢেউয়ের উত্তাল ঝাপটায় বালুর সৈকত ক্ষয়ে যেমন মাটির কংকাল বের হয়ে এসেছে তেমনি গিলে খেয়েছে অন্তত ২০ ফুট মূল সৈকত। গতকাল সরেজমিনে কুয়াকাটা সৈকত ঘুরে দেখা যায় রোয়ানু তান্ডবের এ নৃশংশতা। আর এ নৃশংশতায় যেন নিগড়ে নিয়েছে সৈকত ঘেষা কুয়াকাটার সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসা পর্যটক আমানুল ইসলাম, তরিকুল আহমেদ জানালেন, যে ছবির মতো কুয়াকাটাকে তারা দেখেছিলেন আজ তা কেবলই যুদ্ধবিধ্বস্ত কোন ধ্বংসস্তুপের মতো। যেখানে প্রানের স্পন্দন নেই। বালু চাপা পড়ে আছে ক্ষয়ে যাওয়া স্থাপনা, রাস্তা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ধ্বংসাবিশেষ। কুয়াকাটা সেকতে এখন হাঁটার জায়গাও নেই।

সৈকতের নারিকেল বাগানে ঝিনুকের প্রশাধনী সাজিয়ে বিক্রি করতেন নাসিমা বেগম। তিনি দেখালেন, সাগরের ভাঙ্গনে তার সেই বসার স্থানটি সৈকতে গাছ চাপা পড়ে আছে। ঠিক কতটুকু এলাকা ভেঙ্গেছে তা জানাতে না পারলেও জানালেন, সৈকতে যে ভাঙ্গা গাছ পড়ে আছে তারও অনেক দূরে সৈকত ছিলো। মানুষ হাঁটাচলা করতে পারতো।

কুযাকাটার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, কুয়াকাটা সৈকত এমনিতেই ভাঙ্গন কবলিত। শুধু ঝড় না, অমাবশ্যা ও পূর্ণিমার জো’তে সাগরে যখন পানি বৃদ্ধি পায় তখনও ভাঙ্গে। কিন্তু এবার মুহুর্তের মধ্যেই অনেক এলাকা ভেঙ্গে গেছে।

কুয়াকাটায় ভ্রমনে আসা পর্যটকরা জানান, সরকার ২০১৬ সালকে পর্যটন বছর ঘোষনা করলেও কুয়াকাটা সৈকতের উন্নয়ন কিংবা উন্নয়ন পরিকল্পনায় কোন উন্নয়ন কাজ না হওয়ায় ভঙ্গুর সৈকত ক্রমশ ঝড়,জলোচ্ছাসে ভেঙ্গে আরও ধ্বংস হচ্ছে। সাগর গর্ভে বিলীন হচ্ছে সৈকত ঘেষা প্রাকৃতিক বনাঞ্চল, সরকারি ইকোপার্ক ও বাগানের হাজার হাজার গাছ। তাই জরুরী ভিত্তিতে কুয়াকাটা সৈকতের ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা না নিলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নির্ভর কুয়াকাটা সৈকতকে সাগরে গিলে খেতে বেশি সময় লাগবে না।

(এমকেআর/এএস/মে ২৪, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test