E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শাহজাদপুরে ৮টি বাড়ি ভাংচুরসহ প্রতিবন্ধীর দোকান লুট

২০১৬ মে ২৯ ১৫:৪১:১৩
শাহজাদপুরে ৮টি বাড়ি ভাংচুরসহ প্রতিবন্ধীর দোকান লুট

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি :গত শনিবার শাহজাদপুরে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে বাড়িঘর দোকান ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। প্রকাশ্যে লুটপাটের ঘটনায় ৮টি বাড়ি ভাংচুর এসময় ২ নারী সহ ২০ জন আহত হয়েছে।

এলাকাবাসী ও শাহজাদপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবারের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপরই বিজয়ী মেম্বর প্রার্থী আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক লোকজন উপজেলার নরিনা ইউনিয়নের কাংলাকান্দি গ্রামের ওয়াজেদ আলীর বাড়ী সহ ৮টি বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। এসময় মহিলাদের আর্ত চিৎকারের পরেও হামলাকারীদের ভয়ে কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসতে পারেনি।

তবে হামলার কথা অস্বীকার করে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, পূর্বের শত্রুতার জের ধরে কেউ এঘটনা ঘটিয়েছে।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের সূত্রে জানা গেছে, নরিনা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড থেকে আলমগীর হোসেন (টিউবওয়েল) প্রতীক ও মঞ্জুর এলাহী ( মোরগ ) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। কাংলাকান্দি মধ্যেপাড়া গ্রামের ওয়াজেদ আলী, মফিজ উদ্দিন, সাইফুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান, নূর হোসেন ও আকবর আলীরা মেম্বর প্রার্থী মঞ্জুর এলাহীর পক্ষ নিয়ে নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নেয়। এই ঘটনার জের ধরেই নির্বাচনে আলমগীর বিজয়ী হয়ে তার লোকজন নিয়ে এদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক লুটপাট ভাংচুর ও মহিলা সহ বেশ কজনকে মারপিট করে।

এই ঘটনায় সাইফুল ইসলাম (৩৫), এমারত হোসেন (৫৫), রাশিদুল ইসলাম (২৬), রওশনারা (৪০), রাশিদা বেগম (৩৪) সহ প্রায় ২০ জন আহত হয়।

আহতদের মধ্যে এমারত আলীর অবস্থা আশংকা জনক। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হামলাকারীরা এদিন শারীরিক প্রতিবন্ধী উজ্জ্বল হোসেনের দোকানেও ভাংচুর ও মালামাল লুটপাট করে। উজ্জ্বল জানান, ভোট উপলক্ষে দায় দেনা করে দোকানে মাল পত্র তুললেও শনিবারে লুটপাটের ঘটনায় হামলাকারীরা তাকে মারপিট করে দোকান ভাংচুর করে তার দোকানের মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়।

এদিকে ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী শিহবা খাতুন (৫০) জানান, ঘটনার দিন কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই শনিবার বিকালে আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে আব্দুর রউফ (৪০), রায়হান (৩৫), রইচ (৩০) ও রাজু (২৫) প্রথমে তাদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে বাড়িঘর লুটপাট চালায়।

তিনি আরও জানান, এ সময় তারা নগদ ১লাখ ৮০ হাজার টাকা, ১০ ভরি সোনার গহনা, ২০ মণ ধান চাউল লুটপাট সহ ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে নিয়ে যায়। কান্না জনিত কন্ঠে শিহবা খাতুন বলেন,লুটকারীরা ভাত রান্না করার পাতিলটা নিয়ে গেছে। এমন নির্দয় ঘটনা আমি হতবাক।

তিনি আরও জানান, এরপর হামলাকারীরা আব্দুল মান্নান, নূর হোসেন, আকবর হোসেন, নজরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলামের বাড়ি সহ বেশ কয়টি বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। হামলাকারীরা টেলিভিশন, ফ্রিজ, নগদ অর্থ, জামা কাপড়, ১টি গরু ৪টি ভেড়া ও একটি দোকানের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্থ পবিবারের অভিযোগ, শনিবার হামলার বিষয়টি আশংকা করে শাহজাদপুর থানায় সাহায্যের জন্য এমারত আলীকে পাঠানো হয়। তাদের অভিযোগ পুলিশ তাদের হামলার হাত থেকে রক্ষার জন্য কিছুই করেনি। থানায় অভিযোগ করার কারনে এমারত আলী কে হামলাকারীরা পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করেছে।

এদিকে শাহজাদপুর থানার ওসি রেজাউল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলেই পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে হামলা লুটপাট ও মারামারি সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি।

(এআরপি/এস/মে২৯,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test