E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরীয়তপুরে পুলিশ-আইনজীবী সংঘর্ষ, আহত ১৫, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

২০১৬ জুন ০২ ১৭:২৭:৪৯ ২০১৬ জুন ০২ ২০:৩০:০০
শরীয়তপুরে পুলিশ-আইনজীবী সংঘর্ষ, আহত ১৫, পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে আটক করাকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর আদালত চত্বরে পুলিশ-আইনজীবী সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে পুলিশ ও আইনজীবীসহ মোট ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৭ আইনজীবীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিকদের বাধা দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে  ৯ জন পুলিশকে আসামী করে কোর্টে মামলা দায়র করেছে আইনজীবীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাজিরা থানার একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভূক্ত আসামী জাজিরা থানার পশ্চিম সেনেরচর গ্রামের শাহজাহান ঢালীর ছেলে মোঃ শাহেন শাহ ঢালী আদালতে আত্মসমর্পন করতে এলে খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিপি পুলিশ তাকে আটকের চেষ্টা করে। আইনজীবীর চেম্বারের সামনে থেকে আটক করা হলে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী আসামীকে আত্মসমর্পনের সুযোগ দিতে অনুরোধ করে। এসময় গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্যর সাথে আইনজীবীদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশ আইনজীবীদের উপর চড়াও হয়ে তাদের উপর লাঠি চার্জ করে।

এসময় আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, আসাদ খান মিলন, মাসুদুর রহমান মাসুদ, মোঃ মুরাদ মুন্সি, আমিনূল ইসলাম পলাশ, জামাল ভূইয়া, পারভেজ রহমান জন ও বজলুর রহমান আহত হন। আহতদের মধ্যে ৭ জনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর দিকে এস আই কামাল হোসেন, এএসআই সিদ্দিকুর রহমান, কনস্টেবল হাসান, ডিবি পুলিশের সদস্য রাসেল ও সোহেল আহত হন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ-আইনজীবী সংঘর্ষ চলাকালে শরীয়তপুরে কর্মরত কয়েকজন সংবাদকর্মী সংবাদ সংগ্রহরে জন্য সেখানে গেলে আইনজীবীদের সাথে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এসময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা-মোবাইল ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে উত্তেজিত হয়ে কয়েকজন সাংবাদিক আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মিছিল বের করেন।

দেশ টিভির শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি বি,এম ইশ্রাফিল জানান, আমরা সার্টিক হাউজে একটি কর্মশালায় অংশগ্রহন করছিলাম। এসময় কোর্ট এলাকায় হৈচৈ এর শব্দ শুনে সামনে এগিয়ে দেখি পুলিশ-আইনজীবী সংর্ঘষ চলছে। আমরা সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে কয়েকজন আইনজীবী আমাদের বাধা দিয়ে তিন জনের ক্যামেরা-মোবাইল ফেলে দিয়ে ভাংচুর করে। এসময় আমরা এর প্রতিবাদ করলে তারা আমাদের উপর হামলা করে। এক পর্যায়ে উকিলদের সাথে আমাদের ধস্তাধস্তি হয়। আমরা উকিলদের অনৈতিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করি।

এ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান বলেন, আমার মোয়াক্কেল শাহেন শাহ একটি মামলায় পলাতক ছিল। সে আজ আদালতে আত্মসমর্পন করতে এলে পুলিশ তাকে আমার চেম্বারের সামনে থেকে আটক করে। আমরা সিনিয়র কয়েকজন আইনজীবী আসামীকে আত্মসমর্পনের সুযোগ দিকে অনুরোধ করলে আমাদের উপর পুলিশ চড়াও হয়। একপর্যায়ে আইনজীবী সমিতির কর্মকর্তাসহ বেশ কয়েক আইনজীবীর উপর লাঠি চার্জ করে। এতে আমাদের ১০ জন আইনজীবী আহত হন। তাদের মধ্যে ৭ জনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শরীয়তপুর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুব্রত কুমার সাহা বলেন, জাজিরা থানার একজন সাজাপ্রাপ্ত ও ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী কোর্ট চত্বরের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করার খবর পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তায় জাজিরা থানা পুলিশ রাস্তা থেকে তাকে আটক করে। এ সময় কয়েকজন আইনজীবী তাকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টাকালে তাদের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ তাদের উপর কোন লাঠি চার্জ করেনি। আইনজীবীদের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা দেয়া, আসামী ছিনিয়ে নেয়া ও সাংবাদিকদের উপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ শরীয়তপুর সিনিয়র আইনজীবীদের উপর হাত তুলেছে। আমাদের আহত করেছে। আমরা আগামী রবিবার থেকে সমস্ত বিচারিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন থেকে বিরত থাকবো। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। ডিবি পুলিশের রাসেলকে প্রধান করে ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করেছি। পুলিশি নির্যাতনের বিচার না হলে প্রয়োজনে আমরা প্রধান বিচারপতির স্মরনাপন্ন হয়ে পরবর্তি পদক্ষেপ গ্রহন করবো।

(কেএনআই/এএস/অ/জুন ০২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test