শরীয়তপুরে আইনজীবীদের কর্মবিরতি

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : গত ২ জুন শরীয়তপুরে আইনজীবী ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষের কারণে রবিবার থেকে শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির ডাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত ও গ্রেফতারী পরোয়ানা ভূক্ত একজন আসামী আটক করাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল।

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, জাজিরা থানার একটি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এবং একটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানাভূক্ত আসামী জাজিরা থানার পশ্চিম সেনেরচর গ্রামের শাহজাহান ঢালীর ছেলে মোঃ শাহেন শাহ ঢালী আদালতে আত্মসমর্পন করতে এলে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিপি পুলিশ তাকে একজন আইনজীবীর চেম্বারের সামনে থেকে আটক করে। এরপর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী আসামীকে আত্মসমর্পনের সুযোগ দিতে অনুরোধ করে। এসময় গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্যর সাথে আইনজীবীদের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পুলিশ আইনজীবীদের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে আইনজীবী সমিতির সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন হাওলাদার, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ, ১০ আইনজীবী আহত হন। অপর দিকে এস আই কামাল হোসেনসহ, পুলিশের ৫ সদস্য আহত হন।

এ ঘটনায় বৃহষ্পতিবার রাতে প্রথমে আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন এবং পরে জাজিরা থানার উপ-পরিদর্শক শাহিন সরদার বাদী হয়ে পুলিশ বাদী হয়ে শরীয়তপুর সদর পালং থানায় আরেকটি মামলা দায়ের করেন। আইনজীবীদের দায়েরকৃত মামলায় ৯ পুলিশ সদস্যকে আসামী করা হয়। এবং পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম, শরীয়তপুরনারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের পিপিএডভোকেট ফিরোজ আহম্মেদ, সাবেক জিপি এডভোকেট মোতালেব মাদবরসহ মোট ২৫ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে এবং আরো ২০/২৫ কে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটিা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশি হামলা ও মামলার প্রতিবাদে রবিবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য জেলার ১৮টি আদালতের সকল বিচারিক কার্যক্রমে অংশগ্রহন থেকে কর্ম বিরতর শুরু করেছেন জেলার ১ শত ২০ জন আইনজীবী ও তাদের দুই শতাধিক সহকারী মোহরার। আইনজীবীরা সকাল থেকেই শরীয়তপুর কোর্ট চত্বরে কালো ব্যাজ ধারণ করে মৌন মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করতে থাকে। ফলে এক দিনেই জেলার ১৮টি আদালতের ৩ শত ২৪টি মামলার কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের উপর পুলিশি নির্যাতন ও মামলার প্রতিবাদে আমরা রবিবার থেকে কর্ম বিরতির ডাক দিয়েছি । উচ্চ পর্যায়ের অভিভাবকদের মাধ্যমে একটি সমঝোতার কথা চলছে । সন্তোষজনক কোন সরাহা না হলে আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকবো।

শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার সাঈফুল্লাহ আল মামুন বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধানের জন্য সোমবারে একটি সমঝোতা বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। আশা করি সোমবার থেকে সকল পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

(কেএনআই/এএস/জুন ০৬, ২০১৬)