E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরীয়তপুরে আইনজীবী-পুলিশ সমঝোতা, কর্মবিরতি প্রত্যাহার

২০১৬ জুন ০৭ ১২:৪৫:২২
শরীয়তপুরে আইনজীবী-পুলিশ সমঝোতা, কর্মবিরতি প্রত্যাহার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : আইনজীবী-পুলিশ সমঝোতার মাধ্যমে শরীয়তপুরের উত্তাল আদালত প্রাঙ্গনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে । ৪ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা এবং আইনজীবীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করায় সকল বিচারিক কার্যক্রম থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ডাকা কর্মবিরতিও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরের পর থেকেই আইনজীবী ও তাদের সহকারি মোহরারগন নিয়মিত কার্যক্রম শুরু করেছেন।

গত ২ জুন একজন সাজাপ্রাপ্ত ও গ্রেফতারি পরোয়ানাভূক্ত আসামী আটককে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর আদালত এলাকায় পুলিশ-আইনজীবী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে ১০ আইনজীবী ও ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন। এ নিয়ে পাল্টাপল্টি দুটি মামলা দায়ের করা হয়। আইনজীবীদের উপর পুলিশি নির্যাতন ও মামলার প্রতিবাদে ৫ জুন রবিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন আইনজীবী ও মহোরার সমিতি। ফলে জেলার ১৮টি আদালতের বিচারিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে ভোগান্তিতে পরেন শত শত বিচার প্রার্থী।

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা যায়, ৬ জুন সোমবার দুপুর ১টার সময় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জজ মোহাম্মদ আতাউর রহমানের মধ্যস্ততায় তার খাস কামরায় পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে এক সমঝোতা বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়। সমঝোতা বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শরীয়তপুরের বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক, পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল্লাহ আল মামুন, বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মরিয়ম মুন মুঞ্জুরী, বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালতের বিচারক জিনাত জাহান ঝুনু, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলামসহ সমিতির সিনিয়র আইনজীবীগণ।

সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘটনার সাথে জড়িত ৪ পুলিশ সদস্য জাজিরা থানার এএসআই শাহীন, কনস্টেবল বিল্লাল হোসেন, ডিবি পুলিশ সদস্য সোহেল ও রাসেলকে চাকুরী থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। বিজ্ঞ আইনজীবীদের বিরুদ্ধে যে জি,আর মামলা দায়ের করা হয়েছে তার চুড়ান্ত প্রতিবেদন বৈঠকে উপস্থাপন করা হয় এবং তা বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গ্রহণ করেন। শরীয়তপুরজেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাদী হয়ে যে মামলা দায়ের করেছেন তা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।

সহকারি পুলিশ সুপার তানভির হায়দার শাওন জেলার সিনিয়র আইনজীবী আসাদ খান মিলনের হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে নেন। আইনজীবীদের মধ্যে ওই দিনের ঘটনায় যারা জরিত ছিলেন তাদের সম্পর্কেও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহরে সিদ্ধান্ত নেন আইনজীবী নেতারা। সমঝোতা বৈঠকে সকল সিদ্ধান্ত গৃহিত হওয়ার পরে আন্দোলনরত আইনজীবীরা তাদের পরিহিত কালো ব্যাচ খুলে জেলা জজ মহোদয়ের হাতে তুলে দিয়ে আইনজীবী সমিতি ও মোহরার সমিতি কর্তৃক ঘোষিত সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এরপর সোমবার বিকেল তিনটা থেকে শরীয়তপুরের সকল আদালতের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়।

শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের উপর পুলিশি হামলা ও মামলার প্রতিবাদের কর্মবিরতির কর্মসূচি ঘোষনা করেছিলাম। শরীয়তপুরের বিজ্ঞ জেলা জজ, প্রধান বিচারিক হাকিম, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের আন্তরিকতায় একটি সমঝোতা হয়েছে। আমরা আমাদের আন্দোলনে সফল হয়েছি। ন্যায় সঙ্গত সিদ্ধান্ত গ্রহনের পরে আমাদের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. সাঈফুল্লাহ আল মামুন বলেন, একটি অনভিপ্রেত, অপ্রত্যাশিত ও অনাকাঙ্খিত ঘটনার কারনে পুলিশ-আইনজীবীদের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। একটি শান্তিপূর্ণ সমঝোতার মাধ্যমে এর নিরসন হওয়ায় সকলের মধ্যে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

(কেএনআই/এএস/জুন ০৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test