E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বাগেরহাটে আলোচিত ইউএনও’র বদলি, ক্ষতিগ্রস্তদের মিষ্টি বিতরণ

২০১৪ জুন ০৭ ২২:২১:২৩
বাগেরহাটে আলোচিত ইউএনও’র বদলি, ক্ষতিগ্রস্তদের মিষ্টি বিতরণ

বাগেরহাট প্রতিনিধি : অবশেষে বদলি হয়েছে বাগেরহাটের শরণখোলার দুর্নীতিবাজ, নারী নির্যাতনকারী সেই ইউএনও কেএম মামুন উজ্জামানের। এ খবরে শনিবার বিকেলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন। উপজেলার সদর রায়েন্দা বাজারের দোকানে দোকানে ও পথচারিদের মাঝেও তাদেরকে আনন্দ চিত্তে মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ মিষ্টি বিতরণকালে উল্লাস প্রকাশ করতে করতে বলেন, ইউএনও মামুন একজন শ্রেষ্ঠ চাঁদাবাজ। বিত্তবান থেকে শুরু করে দিনমজুর কেউই রেহাই পায়নি তার চাঁদার হাত থেকে। আমরা সরকারের কাছে এই ইউএনও’র ঘুষ, দুর্নীতির তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানাই। এদিকে ইউএনও’র বদলিতে তার চারপাশ ঘিরে থাকা সুবিধাভোগী দালালরা মর্মাহত হলেও শরণখোলার সাধারণ মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন।

গত ২১মে ইউএনও কেএম মামুন উজ্জামানকে শরণখোলা থেকে চুয়াডাঙ্গায় বদলি করার আদেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। এবং শরণখোলার ইউএনও হিসেবে পার্শবর্তী মোরেলগঞ্জ উপজেলার ইউএনও মো. আ. হালিমকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। সে অনুযায়ী ৫জুন বিকেলে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বসে ইউএনও মো. আ. হালিমের কাছে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বদলির আদেশ পাওয়ার পর ইউএনও মামুন শরণখোলায় আরো কয়েক মাস থাকার জন্য উর্ধ্বতন মহলে তদবির শুরু করেন। তার এতদবিরে হয় হিতে বিপরিত । উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জুন ক্লোজিংয়ের আগেই তাকে মোরেলগঞ্জ ইউএনও’র কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।

শরণখোলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আ. হালিমের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি শরণখোলার ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ৫জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বসে দায়িত্ব বুঝে পাই।

উপজেলার খাদা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত হারুন অর রশিদ তালুকদার জানান, পাঁচরাস্তা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়ি বাধের জমিতে বাৎসরিক বন্দোবস্ত (লিজ) নিয়ে সেখানে ঘর তুলে শতাধিক ব্যবসায়ী ক্ষুদ্র ব্যবসা করতেন। সেখানে তারও একটি ঘর ছিল। ইউএনও মামুন সেই জায়গায় বাসস্ট্যান্ড করার কথা বলে সেই গরিব ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করেন। অথচ সেখানে বাসস্ট্যান্ড না করে পরবর্তীতে পাউবোর প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি এলাকার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রভাবশালী নেতা এবং এলাকার বিত্তবানদের কাছে প্লট আকারে ৯৪ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন। সেখানে এখন উপজেলা প্রশাসন মার্কেট নামে ৮৬টি দোকান ঘড়ে উঠেছে। তিনি আরো জানান, সরকারের কোনো সম্পত্তি বিক্রি করা হলে সেই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা দেয়া হয়। ইউএনও মামুন সেই টাকা থেকে একটি পয়সাও সরকারের কোষাগারে জমা না দিয়ে সম্পূর্ণটাই আত্মসাৎ করেছেন। তিনি এব্যাপারে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত দাবি করেছেন।

(একে/অ/জুন ০৭, ২০১৪)
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইউএনও মামুন হুমকি দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। সর্বশেষ গত ১৪ এপ্রিল তিনি ভূমিহীন খাদিজাকে পাউবোর জমি থেকে লাঠিপেটা ও নির্যাতন চালিয়ে অমানবিকভাবে উচ্ছেদ করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন।

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test