E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চাষিদের কাছ থেকে সরকারের ধান ক্রয়

আগৈলঝাড়ায় খাদ্য গুদাম  টাকা না দিলেই ধান খারাপ!

২০১৬ জুন ২৪ ১৪:২১:৩৩
আগৈলঝাড়ায় খাদ্য গুদাম  টাকা না দিলেই ধান খারাপ!

আঞ্চলিক প্রতিনিধি(বরিশাল):টাকা না দিলে ধানে চিটা, আদ্রতা কম ইত্যাদি ইত্যাদি সমস্যা। আর টন প্রতি ধানে খাদ্য নিয়ন্দ্রককে ৫হাজার টাকা দিলেই সব সমস্যার সমাধান ! চিটাওয়ালা, আদ্রতা বিহীন ওই খারাপ ধানও তখন সব ভাল হয়ে যায়। এটাই হচ্ছে আগৈলঝাড়া খাদ্য গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে সরকারের ধান ক্রয়ে বরিশালের আগৈলঝাড়ার হালের চিত্র।

সরকারের গোডাউনে ধান বিক্রি করতে আসা নসিমন, টমটম আর ভ্যান ভর্তি করে গোডাউনের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে রয়েছেণ কৃষকেরা। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক শাহাদাৎ হোসেন সকলের ধান পরিক্ষা করে জানালেন-আদ্রতা কম থাকায় আগত কোন চাষীর ধান নেয়া যাবে না। সকালের এমন খবরে বিমর্ষ হয়ে পরেন দূর দূরান্ত থেকে আগত চাষিরা। তবুও হাল ছাড়েন না চাষিরা। চাষিদের মধ্য থেকে এগিয়ে এলেন একজন বিশেষ ব্যক্তি। তিনি ৫নং রতœপুর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর অজিত শিকারী। সাবেক মেম্বর হওয়ার সুবাদে গোডাউন শ্রমিক ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেনের বিশেষ পরিচিত তিনি। অজিত খাদ্য কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বের করলেন গোডাউনে ধান বিক্রির বিশেষ উপায়।
প্রত্যেক চাষি টন প্রতি ৫ হাজার টাকা দেয়ায় রাজি হওয়ায় সকালের ঘোষিত চাষিদের খারাপ ধানগুলো মুহুর্তের মধ্যে ভাল ধান হিসেবে জমা হয়ে গেল গোডাউনের খামালে। এদিন ধান বিক্রি করলেন রতœপুরের চাষি নাসির, শাহজাহান, সুকদেব বাড়ৈ, বারপাইকা গ্রামের মাইনুল, ননী গোপালের মত অনেক চাষি।

গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৬শ ৫০ মে.টন ধান ক্রয়ের কথা জানিয়েছেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকতৃা শাহাদাৎ হোসেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জায়গা না থাকার কারণে ধান ক্রয় বন্ধ রয়েছে। ঈদের পর আবার শুরু করার কথা জানিয়েছেন ইউএনও।

সরকারীভাবে ধান ক্রয়ের ঘোষণার পর ৫ মে’র পরিবর্তে ১৭ মে থেকে ধান ক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারী নীতিমালায় প্রতি কেজি ধান ২৩ টাকা দরে প্রতি মন ধান ৯২০ টাকায় ক্রয় করছে সরকার। উপজেলায় ১ হাজার ৬শ ৫৮ মে. টন ধান ক্রয় করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ক্রয় কমিটির সভাপতি দেবী চন্দ।

শুরুতে চাষী নামধারী দালাল দালালদের মাধ্যমে ধান ক্রয় শুরু হলেও এনিয়ে লেখালেখির পর মধ্যস্বত্বভোগী, ফরিয়া, দালালদের বিলুপ্ত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবী চন্দ ধান ক্রয় মনিটরিংয়ের জন্য ৫ সদস্যর কমিটি করেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সুশান্ত বালা, বেবী হোম উপ-তত্বাবদায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমবায় কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, একাডেমীক সুপারভাইজার প্রাণ কুমার ঘটক ও সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার নন্দী ওই কমিটির সদস্য রয়েছেন।

ওই কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ে নির্দেশনা থাকলেও মাঝ পথে বস্তার অভাব দেখিয়ে ধান ক্রয় বন্ধ রাখেন সংশ্লিষ্ঠরা। ইউএনও’র তাৎক্ষনিক হস্তক্ষেপে পুনরায় ধান ক্রয় শুরু হলেও এর কিছু দিন পর গোডাউনে জায়গার অভাব থাকায় আবারও ধান ক্রয় বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। নাম না প্রকামের শর্তে ওই মনিটরিং কর্মকর্তারা জানান, প্রথম ধান কেনা বন্ধের পর পুনরায় ধান ক্রয়ের কথা তারা জানেন না। তারা আরও বলেন, জুন মাসে সরকারী দায়িত্ব পালনের সাথে মনিটরিংএর অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সারা দিন তারা গোডাউনে বসে থাকতে পারছেন না। সারা দিন সময় দিতে না পারার সুযোগ নিচ্ছে গোডাউন কর্তৃপক্ষ। এব্যাপারে খাদ্য নিযন্ত্রক কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেনের টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, যারা এমন অভিযোগ করছেন তারা সিন্ডিকেট হিসেবে গোডাউনে ধান দিতে ব্যর্থ হয়েই এমন কথা বলছেন।

(টিবি/এস/জুন২৪,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test