E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

চট্টগ্রামে দুই খুনীর ফাঁসি কার্যকর

২০১৬ জুলাই ১৩ ১৭:১৫:৫২
চট্টগ্রামে দুই খুনীর ফাঁসি কার্যকর

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : মিরসরাইয়ে অটোরিকশা চালককে হত্যার প্রায় ১০ বছর পর মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত দুই খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিয় কারাগারে।ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া দুই খুনি হলেন, মিরসরাই উপজেলার উত্তর হাজী সরাই গ্রামের লেদু মিয়ার বাড়ির কামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ওরফে শহীদ এবং একই উপজেলার মধ্যম সোনাপাড়া গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ।

মঙ্গলবার রাত ১২টার পরে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে পাঁচ জল্লাদ ধারাবাহিকভাবে দুই খুনীর ফাঁসি কার্যকর করেন। একই মঞ্চে দুই খুনির ফাঁসি রায় কার্যকর করতে কারা কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করেন পাঁচ জল্লাদ।

কারা সূত্র জানায়, ১২টার আগে জল্লাদ আবদুল হান্নানের নেতৃত্বে জল্লাদ নাছির, সিরাজ, ইদ্রিছ ও কায়সার যমটুপি পরিয়ে দুই আসামিকে ধারাবাহিকভাবে হাত ধরে ফাঁসির মঞ্চে নিয়ে যান। মঞ্চে তোলার পর তাদের গলায় ফাঁসির দড়ি পরানো হয়। জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিনের সংকেত পেয়ে কারা জেল সুপার ইকবাল কবির চৌধুরী তার হাতে থাকা রুমাল মাটিতে ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে পাঁচ জল্লাদ লিভার টেনে ফাঁসি কার্যকরে সহযোগিতা করেন।

ফাঁসি কার্যকরের আগে রাত সাড়ে ১১টায় দুই খুনির তওবা পড়ান চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারা মসজিদের পেশ ইমাম মো.ইলিয়াছ আজম।

এর আগে তাদের দু’জনকে গোসল করানোর পাশাপাশি রাতের খাবার পরিবেশন করা হয়। পরিবারের সদস্যদের সাথে শেষ সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হয়। রাত দশটার পর স্বজনরা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসার পরই মূলত তাদের ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করে কারা কর্তৃপক্ষ।

সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম কারাগারে প্রবেশ করেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী, নগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আগে থেকে ডিআইজি প্রিজন অসীম কুমার পাল, জেলা সুপার ইকবাল হোসেন চৌধুরী, জেল সুপার মাহবুবুল ইসলামসহ কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, ২০০১ সালের ৩১ মে রাতে মিরসরাই উপজেলা সদর থেকে একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে তিনজন ফটিকছড়ি যায়। ফটিকছড়িতে একটি নির্জন স্থানে চালক নাইনকা রবি দাশকে খুন করে ফেলে রেখে তারা অটোরিকশাটি নিয়ে পালিয়ে যায়।

অসীম কান্ত পাল জানান, সিএনজি অটোরিকশা চালক নিখোঁজের ঘটনায় মিরসরাই থানায় একটি মামলা দায়ের হয়।মামলা নম্বর ০৮ (০৫) ২০০১।মরদেহ উদ্ধারের পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়।মামলায় তিনজনকে আসামি করা হয়েছিল।

২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল তিন আসামিকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছিল। হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে সাজা বহাল থাকে। আপিল বিভাগে একজনের দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন করা হয় বলে জানান অসীম কান্ত পাল।

আপিল বিভাগে ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকার পর সাইফুল ওরফে শহীদ এবং শহীদুল্লাহ ওরফে শহীদ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে ব্যর্থ হন। প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার নথি চট্টগ্রাম কারাগারে এসে পৌঁছানোর পর তাদের ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

(ওএস/এএস/জুলাই ১৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test