E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মেহেরুন্নেসা মহিলা কলেজ সরকারিকরণের প্রতিবাদে উত্তাল টাঙ্গাইল

২০১৬ জুলাই ১৮ ১১:২০:১১
মেহেরুন্নেসা মহিলা কলেজ সরকারিকরণের প্রতিবাদে উত্তাল টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টাকারী একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী, বিএনপির সাবেক উপমন্ত্রী, পলাতক জঙ্গী নেতা মাওলানা তাজ উদ্দিনের বড় ভাই আব্দুস সালাম পিন্টু প্রতিষ্ঠিত মেহেরুন্নেসা মহিলা কলেজ সরকারিকরণের প্রতিবাদে উত্তাল ও বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলাবাসী।

আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরাসহ সর্বস্তরের জনগণ কোন ভাবেই বর্তমান সরকারের এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারছেন না। এদিকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামানের ডিও লেটার ও সুপারিশে বিতর্কিত মেহেরুনেচ্ছা মহিলা কলেজ সরকারিকরণের তালিকাভূক্ত হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় এমপির এ বিতর্কিত কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ স্বর্বস্তরের জনগণ রোববার সকালে দুই দিনের কর্মসূচি শুরু করেছে।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর কলেজ সরকারিকরণের দাবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এবং একই দাবিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা গোপালপুর-টাঙ্গাইল ও ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কলেজ মোড়ে এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রোববার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। অবরোধের কারণে চরম দূভোগে পড়ে যাত্রীরা। দুই দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ সোমবার গোপালপুর উপজেলায় অর্ধ দিবস হরতাল পালন করবে বলে ঘোষণা দেন।

আন্দোলনকারীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টাকারী একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী, বিএনপির সাবেক উপমন্ত্রী, পলাতক জঙ্গী নেতা মাওলানা তাজ উদ্দিনের বড় ভাই আব্দুস সালাম পিন্টু প্রতিষ্ঠিত বিতর্কিত মেহেরুন্নেসা মহিলা কলেজ সরকারিকরণের প্রতিবাদে গোপালপুরের সর্বস্তরের জনগন এ আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে।

তারা আরও জানান, ’৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শান্তি কমিটির সদস্য ছিল মৃত খন্দকার ওসমান আলী। তার স্ত্রী’র নাম মেহেরুন্নেছা। তাদের বড় ছেলে গোপালপুর উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মৃত খন্দকার আব্দুল মান্নান। আর কনিষ্ঠ ছেলে জাহাঙ্গীর আলম রুবেল বর্তমানে গোপালপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক পৌরসভার মেয়র এবং বর্তমানে কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের এই বির্তকিত কলেজকে কিভাবে স্থানীয় এমপি খন্দকার আসাদুজ্জামান ডিও লেটার এবং সরকারিকরণের সুপারিশ করেছে।

গোপালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ইউনুস ইসলাম তালুকদার জানান, মেহেরুনেচ্ছা মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হলেন একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী সালাম পিন্টু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিশ্চিহ্ণ করার ষড়যন্ত্রে জড়িত সালাম পিন্টু ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মেহেরুনেচ্ছা মহিলা কলেজ সরকারিকরণের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ফুঁসে উঠেছে। একটি কুচক্রী মহল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরকে ভুল তথ্য দিয়ে জঙ্গী নেতার কলেজকে সরকারিকরণের ব্যবস্থা করেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যে কোনো মূল্যে বিএনপির দুর্গ বলে পরিচিত মেহেরুনেচ্ছা কলেজকে সরকারিকরণের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে।

অবরোধ কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ইউনুস ইসলাম তালুকদার, পৌরসভার মেয়র রকিবুল হক ছানা, অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আকন্দ, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, উপাধ্যক্ষ মানিকুজ্জামান, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দীন আহমেদ, আনোয়ার হোসেন বুলবুল, অধ্যাপক গোপাল চন্দ্র দাস, মোজাম্মেল হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ফরিদ, নূরন্নবী সোহাগ প্রমুখ।

গোপালপুর কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আকন্দ বলেন, গোপালপুর কলেজ সবচেয়ে পুরনো কলেজ। আমাদের কলেজ সরকারি না হয়ে গোপালপুরে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামী সালাম পিন্টুর কলেজ সরকারিকরণ করা হয়েছে। এতে করে আমরা হতাশ। তাই আজকে আমাদের এ কমসূচি। আমাদের কলেজ সরকারিকরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এ কর্মসূচি চলবে। একাদশ শ্রেণীর নিতু আক্তার বলেন, আমাদের কলেজ সরকারিকরণের পক্ষে থাকলেও সরকারিকরণ হয়নি। আমাদের কলেজের শিক্ষার্থী সংখ্যা বেশি, পড়ারলেখার মানও অনেক ভালো। আমাদের কলেজ সরকারি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে ও আমরা রাজপথে থাকবো।






(এমএনইউ/এস/জুলাই ১৮,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test