E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রুমা সাঙ্গু কলেজ জাতীয়করণ হওয়ায় আনন্দে ভাসছে পুরো উপজেলা

২০১৬ জুলাই ১৯ ২১:০৬:২৫
রুমা সাঙ্গু কলেজ জাতীয়করণ হওয়ায় আনন্দে ভাসছে পুরো উপজেলা

আল ফয়সাল বিকাশ, বান্দরবান :বান্দরবান জেলার অতি দুর্গম ও শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া রুমা উপজেলার সাঙ্গু কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণায় আনন্দে ভাসছে পুরো উপজেলা। আনন্দে উদ্বেলিত কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিবাবকসহ সর্বস্তরের মানুষ। কলেজ প্রতিষ্ঠার স্বল্প সময়ের মধ্য জাতীয়করণ হওয়ায় শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রুমাবাসী। 

পর্যটন সম্ভাবনাময়ী সু-উচ্চু পাহাড় ঘেরা জনপদের নাম রুমা। বান্দরবান থেকে এ উপজেলার দুরত্ব ৪৮ কিলোমিটার। সার্বোচ্চ পবর্বত শৃঙ্গ তাজিংডং ও কেউক্রাডংসহ জেলার অধিকাংশ নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট রয়েছে রুমা উপজেলাতেই। পর্যটনের প্রসার ঘটলেও দুর্গমত্তার কারণে শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে এই উপজেলার শিক্ষার্থীরা। পুরো উপজেলায় রয়েছে ১টি উচ্চ বিদ্যালয় এবং একটি কলেজ।

এলাকাবাসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় রুমা সাঙ্গু কলেজ। ২০০৫ বিএনপি’র শাসনামলে পাহাড়ী সন্ত্রাসীরা আগুন লাগিয়ে দিয়ে পুরো কলেজটি পুড়িয়ে দেয়। বন্ধ হয়ে যায় কলেজের কার্যক্রম। সেই থেকে অর্থ সংকটের কারনে পুনরায় কলেজটি চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। ১৭ নভেস্বর ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রুমা ব্রীজ উদ্বোধনকালে জনসভায় কলেজটি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক ২০১৩ সালে একডেমিক ভবন নির্মাণ করার পর ২০১৪ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ভর্তির মাধ্যমে কলেজের নতুন করে যাত্রা শুরু হয়।

রুমা সাঙ্গু বলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুই প্রু চিং মারমা জানান, ৯ জন শিক্ষকের বিপরীতে মানবিক ও অর্থনীতি বিভাগে বর্তমানে ৯৩ শিক্ষার্থী রয়েছে এবং চলতি বছর ভর্তি প্রক্রিয়াধীন। প্রধানমন্ত্রী’র ঘোষণা এত দ্রুত বাস্তবায়ন হওয়ায় তিনি প্রধানমনস্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং এটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার যে, মাত্র আড়াই বছরের মাথায় জাতীয়করণ করা হয়েছে, আমরা যা আশাও করি নাই।

অনেকের ধারণা যে, কোন শিক্ষা প্রতিষ্টান জাতীয়করণ হয়ে যাওয়ার পরে নির্জীব হয়ে যায়, শিক্ষক থাকে না, ক্লাস ভাল করে হয় না। আমি স্থানীয় হিসেবে এই কলেজে থাকলে ভাল
শিক্ষকদের ধরে রাখার চেষ্টা করবো এবং শিক্ষারমান উন্নয়নে সচেষ্ট থাকবো।

এদিকে কলেজটি জাতীয়করণ হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা আনন্দে আত্মহারা। কলেজ প্রতিষ্ঠার দ্রুত সময়ের মধ্যে জাতীয়করণ হওয়ায় বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য জুয়েল বম ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আধুনিক শিক্ষার প্রবক্তা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি, সম্প্রীতির ধারক ও আধুনিক বান্দরবানের রূপকার পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সফল চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা’র প্রতি রুমাবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

জুয়েল বম আরো বলেন, রুমার ভাগ্য উন্নয়নে আরেকধাপ এগিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী। পাহাড়ে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা লাভে অবারিত দুয়ার খুলেছে। এ ব্যাপারে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

শিক্ষক নাছিমা আক্তার খানম, জেনিফার ইয়াছমিন জানান, আর্থিক টানপোড়নের মধ্যদিয়ে কলেজটি পরিচালিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কলেজে আবাসনসহ নানা ধরনের সমস্য রয়েছে। টুকিটাকি সমস্য গুলো সমাধান করা হলে এই কলেজটি একটি আদর্শ কলেজ হিসেবে সারাদেশে পরিচিতি লাভ করবে এমন প্রত্যাশা তাদের।

এদিকে শোভাযাত্রা শেষে সদর ইউনিয়ন পরিষদে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জ্ঞাপনের লক্ষ্যে এক সভার আয়োজন করা হয়। রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান অং থোয়াই চিং মারমা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসে্েব উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য জুয়েল বম। এসময় অন্যান্যের মধ্যে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুই প্রু চিং মারমা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জিং বঙে ময় বম, সদর ইউপি চেয়ারম্যান শৈ মং মারমা, রুমা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি উহ্লাচিং মারমা, পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উ হ্লা মং মারমা, কলেজ শিক্ষক চিং সা থোয়াই মারমা, নাছিমা আক্তার খানম, জেনিফার ইয়াছমিন এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে মোঃ শাহজাহান, দীপায়ন চাকমা, শৈসা হ্লা মারমা, মে সাই নু মারমা ও সোনিয়া আক্তার বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা সকলেই সাঙ্গু কলেজ প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে জাতীয়করণ হওয়া পর্যন্ত যারা শ্রম, মেধা ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

(এএফবি/এস/জুলাই ১৯,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test