E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নোয়াখালীতে  শিশু মিলন হত্যার ৫ বছরেও বিচার পায়নি তার পরিবার!

২০১৬ জুলাই ২৭ ১২:৩৯:১০
নোয়াখালীতে  শিশু মিলন হত্যার ৫ বছরেও বিচার পায়নি তার পরিবার!

নোয়াখালী প্রতিনিধি :নোয়াখালীর উপজেলা কোম্পানিগঞ্জে আলোচিত মিলন হত্যার পাঁচ বছর পার হলেও বিচার বঞ্চিত তার পরিবার। মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশের ৯ মাস পরও আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়নি সিআইডি।

এছাড়া, বারবার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে মামলার কার্যক্রম। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ববান হওয়ার তাগিদ আইনজীবী ও নাগরিক সমাজ। পরিবারের দাবি, আর্থিক অস্বচ্ছলতায় মামলা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা।

২০১৫ সালের জুলাই মাসে শিশু মিলন হত্যার চুড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকতা আতাউর রহমান ভুঁইয়া।কিন্তুু সে প্রতিবেদনে কোনো আসামীর নাম উল্লেখ না থাকায় গত ৫ নভেম্বর আবারও তদন্তের নির্দেশ দেন ফারহানা ভুঁইয়া।

এরপর কেটে গেছে প্রায় ৯ মাস।কিন্তুু সিআইডির দল তদন্তের প্রতিবেদন জমা না দেয়ায় শুর হচ্ছে না মামলার শুনানী।

অন্যদিকে ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মিলনের পরিবার।আর্থিক সংকটের অভাবে আর পারছেন না মামলা টানতে।

মিলনের মা অভিযোগ করে বলেন,”আমি এই পর্যন্ত আদালতের দ্বারে দ্বারে বহুবার ঘুরেছি।তারা কোনো বিচার করেনা।সিইডি আমাকে বলছে'দেখেন মামলা আপনার হাতে নয়,আপনি চাইলেই মামলা তুলতে পারবেন না”।মিলনের বাবাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন"বাদী পক্ষের জনও থাকন লাগে, বলও থাকন লাগে ,পয়সাও লাগে। আমাদের তো এ তিনটা জিনিসের অভাব। এ তিনটা জিনিস থাকলে বিচার ঠিকই পেতাম”।

বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাডভোকেট কল্পনা রানী দাস জানান,"আগামী ৫ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

দ্রুততর সময়ের মধ্যে মামলার তদন্ত জমা হোক এবং বাদী যেন ন্যায় বিচার পায় সেই প্রত্যাশাও করেন এ আইনজীবি।

অন্যদিকে, পাবলিক প্রসিকিউসন এটি এম মহিবুল্লাহ জানান,”সিআইডির দেয়া তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরই বুঝা যাবে মামলার ভবিষ্যৎ”।

উল্লেখ্য,২০১১ সালের এই দিনে নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জের চর ফকিরা'র গিয়াসউদ্দিনের ছেলে শামছুদ্দিন মিলনকে চর কাকড়া এলাকায় আটকের পর স্থানীয় ইউপি সদস্য জামালউদ্দিন ও এক ইউপি সদস্যা'র স্বামী নিজাম উদ্দিন মানিক ডাকাত সাজিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

স্থানীয়ভাবে মোবাইলে ধারণকৃত চিত্রে দেখা যায়, তৎকালীন কোম্পানিগঞ্জের এসআই আকরামউদ্দীন, কনস্টেবল আব্দুর রহিম ও হেমা রঞ্জন চাকমা জনতার হাতে তুলে দিলে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে থেতলে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় মিলনকে।

এ ঘটনায় মামলা হলেও ভিডিও দেখে গ্রেফতার ৯ জন ও সংশ্লিষ্ট পুলিশদের নাম বাদ দিয়েই গত বছরের ৫ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে গোয়েন্দা পুলিশ। পরে বাদীপক্ষের আপত্তিতে গত ০৫ নভেম্বর সিআইডিকে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। কিন্তু এখনো তদন্ত শেষ করতে পারেনি সংস্থাটি।

এ বিষয়ে বারবার যোগাযোগ করেও তদন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার সাড়া পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় ন্যায় বিচারের স্বার্থেই দ্রত তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিলের আহ্বান জানিয়েছেন সুশীল সমাজ ও আইনজীবীরা। এদিকে নিহত মিলনের পরিবারের দাবি, অর্থ সঙ্কটে ছেলে হত্যার মামলা চালাতে হিমশিম খেলেও কারো সহযোগিতা পাচ্ছেন না তারা।

হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার এক আসামির জবানবন্দি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে চার পুলিশসহ ৩২ জন শনাক্ত করা হয়। অথচ, অভিযুক্তদের নির্দোষ উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের পর আটক ৯ আসামি জামিনে মুক্তি পেয়েছে।




(এটিএইচ/এস/জুলাই ২৭,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২১ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test