E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লোহাগড়া পৌরনির্বাচনে বেকায়দায় আ’লীগ প্রার্থী

২০১৬ জুলাই ২৭ ১৫:২৭:৩৯
লোহাগড়া পৌরনির্বাচনে বেকায়দায় আ’লীগ প্রার্থী

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : জমে উঠেছে নড়াইলের লোহাগড়া পৌর নির্বাচন। আগামি ৭ আগস্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে জমজমাট প্রচার-প্রচারণা। শ্রাবণের বর্ষা আর পানি কাদার মধ্যেও থেমে নেই প্রার্থীসহ সমর্থকদের প্রচার-প্রচারণা। সকাল থেকে রাত অবধি প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী  মাঠে থাকলেও আওয়ামী লীগের দুই বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে, জলাবদ্ধতায় ঘেরা পৌরবাসী চাচ্ছেন যোগ্য ও কর্মপরায়ণ প্রার্থীকে মেয়র নির্বাচিত করতে।

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তৃণমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন সঠিক না হওয়ায় এখানকার দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা যারপরনাই ক্ষুদ্ধ হয়েছেন। ফলে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আশরাফুল আলম। এক্ষেত্রে বেকায়দায় পড়েছেন আ’লীগের নতুন মুখ লিপি খানম।

লোহাগড়া পৌর নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন লিপি খানম। তিনি সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে সকাল থেকে রাত অবধি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি। লিপি খানম বলেন, ‘এতো বড় পৌরসভা হওয়া স্বত্ত্বেও এখনো ‘গ’ শ্রেণিতে রয়েছে। তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি। বিজয়ী হলে আধুনিক এবং ডিজিটাল পৌরসভা গঠন, লোহাগড়া বাজার উন্নয়নসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জলাবদ্ধতা নিরসন করব। এছাড়া সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করব। আশা করছি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবো।’

এদিকে, আ’লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী লোহাগড়া উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আশরাফুল আলম (জগ প্রতীক) এবং যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শরিফুল ইসলাম (নারকেল গাছ) নির্বাচনী মাঠ সরগরম করে রেখেছেন। ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির একক প্রার্থী নেওয়াজ আহম্মদ ঠাকুর নজরুল নিরবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

মেয়র প্রার্থী শরিফুল ইসলাম জানান, মেয়র নির্বাচিত হলে পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, সব এলাকায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থাসহ পৌরসভাকে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নতিকরণে কাজ করব।

অপর মেয়র প্রার্থী আশরাফুল আলম বলেন, পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ১০বছরেও জনগণের আশা- আকাঙক্ষার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। আমি বিজয়ী হলে রাস্তা, কালভার্ট, ব্রিজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সাধারণ মানুষের যেসব চাহিদা তা পূরণ করব ইনশাল্লাহ। বর্তমানে পৌরসভার এতটাই দুরবস্থা যে, বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার পাশাপাশি লোহাগড়া বাজারে হেঁটেও যাওয়া যায় না। নেই সড়ক বাতি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। এসব সমস্যা সমাধান করে ডিজিটাল পৌরসভা গঠনে কাজ করব বলে আশা করি।

বর্তমান মেয়র বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নেওয়াজ আহম্মদ ঠাকুর দাবি করে বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণ এবারও আমাকে বিজয়ী করবে।
এদিকে লোহাগড়া বাজারের ব্যবসায়ীসহ ভূক্তভোগীরা বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই বাজারে হাঁটু পানি জমে যায়। ক্রেতারা ঠিকমত বাজারে আসতে পারেন না। এতে ব্যবসায়িক ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া গোপীনাথপুর, জয়পুর, চোরখালী, কলেজ মাঠ, মদিনাপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে খেলাধূলা বন্ধ রয়েছে। চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে চলাচল করতে হচ্ছে। ভোটারসহ ভূক্তভোগীরা বলেন, যে প্রার্থী আমাদের দুর্ভোগ লাগবে কাজ করবেন, আমরা তাকেই মেয়র হিসেবে বিজয়ী করতে চাই।

রিটার্নিং কর্মকর্তা সেখ আনোয়ার হোসেন জানান, ২০০৩ সালে গঠিত পৌরসভায় ভোটার রয়েছে ২০ হাজার ৬৩৬ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১০ হাজার ৫৯২ এবং পুরুষ ১০ হাজার ৪৪ ভোটার। এবারের নির্বাচনে চার মেয়র প্রার্থী ছাড়াও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১২ নারী কাউন্সিলর প্রার্থী এবং সাধারণ ওয়ার্ডে ৩৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন সম্পন্ন করতে সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

(আরএম/এএস/জুলাই ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test