E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

২০১৬ জুলাই ২৯ ১৬:১৩:৩৫
যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি : যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত। টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাটসহ প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। চলতি বর্ষায় যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদ সিমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাস্তা-ঘাট, আবাদি ফসল ও ঘরবাড়ীসহ প্রায় তিন লক্ষ মানুষ পানি বন্ধি হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এ পর্যন্ত কোন প্রকার ত্রাণ সহায়তা পাননি বলে ইউপি সূত্রে জানা যায়। বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দি পরিবারের লোকজন তাদের গৃহপালিত পশু গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও তাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছে।

বর্ষার পানিতে উপজেলার সদর ইউনিয়ন বট তলা থেকে শাহজানী ভায়া চৌহালী (জার্মান প্রজেক্ট) সড়ক, নাগরপুর-সলিমাবাদ (বেকড়া) সড়ক, নাগরপুর ধুবড়িয়, ভাদ্রা, দপ্তিয়র সড়ক, উপজেলা সদরে সাথে যোগাযোগের একমাত্র দৃষ্টিনন্দন রাস্তা পানিতে তলিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হযে পড়েছে।

বেকড়া আটগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নের নাগরপুর হইতে সলিমাবাদ (বেকড়া) সড়ক বর্ষার পানিতে তলিয়ে বর্ষার স্রোতে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া এ ইউনিয়নে সহাস্রাধিক পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। এবং গ্রাম-গঞ্জের প্রতিটি রাস্তা তলিয়ে গেছে। আমি নিয়মিত বন্যাকবলিত মানুষের খোঁজখবর নিচ্ছে। সরকারিভাবে কোন প্রকার ত্রাণ আসেনি। ত্রাণ আসলে প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে পৌছে দেওয়া হবে।

দপ্তিয়র ইউপি চেয়ারম্যান এম ফিরোজ সিদ্দিকী জানান, আমার ইউনিয়ন উপজেলার সিমান্তবর্তী যমুনা নদী সংলগ্ন হওয়ায় বর্ষার পানির স্রোতে এ ইউনিয়নের ইউনিয়ন সদর থেকে সমেতপুর, দৌলতপুর সড়কসহ নাগরপুর উপজেলা সদরের প্রধান সড়কে পানি উঠে এবং বর্ষার স্রোতে রাস্তার বিভিন্ন জায়গা ভেঙ্গে উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া আমার ইউনিয়নে প্রায় ২৫শ পরিবার পানি বন্ধি হয়ে গেছে। নিয়মিত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছি।
ভাদ্রা ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, আমার ইউনিয়নের চাষাভাদ্রা, বাধেবিহালী ও টেপরী রাস্তায় পানি উঠেছে। এবং সহাস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

গয়হাটা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান আসকর বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় রাস্তা-ঘাট পানির নিচে। এ ইউনিয়নে প্রায় ২হাজার পরিবার বন্যাকবলিত হয়ে গেছে। এছাড়া গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামাবাদ আলীম মাদ্রাসা সংলগ্ন মৃত নইমুদ্দিনের ছেলে মো. সৈইমুদ্দিনের (সমু) বসত ঘর বন্যার স্রোতে ভেঙ্গে গেছে।

সবচেয়ে বেশি বন্যা কবলিত ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে উপজেলার ভাড়রা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষজন। এ ইউনিয়নে প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়েছে।

এছাড়াও উপজেলার ধুবড়িয়া ইউনিয়নে প্রায় ১হাজার, সহবতপুর ৩ হাজার, মোকনা ২হাজার, পাকুটিয়া ও নাগরপুর সদর ইউনিয়নসহ ১২টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে।

যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদ সিমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির অভাবে এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে ডায়রীয়া, সর্দি, কাঁশি জ্বরসহ নানা রোগ ব্যাধি। সরেজমিনে উপজেলার সরিষাজানী গ্রামের একটি বাড়িতে বন্যার পানি উঠায় ওই বাড়ীর ওঠানে জাগ আসা পাট ধৌত করছে। এবং উপজেলার দৃষ্টিনন্দন রাস্তায় পানি উঠায় রাস্তার মধ্যে জাগ আসা পাট ধৌত করছে এবং দোয়ার ও জাল পেতে মাছ স্বীকার করছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) পুলক কান্তি চক্রবর্তীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ বন্যায় পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে। আমি ধুবড়িয়া ও সহবতপুর ইউনিয়নসহ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিদর্শন করে বন্যা কবলিত মানুষের খোঁজখবর নিয়েছি। প্রায় ১০ বছরের মধ্যে নাগরপুরে এধরনের বন্যা হয়নি। আকস্মিক বন্যা হওয়ার ধরন বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ পৌছানো সম্ভব হয়নি। ত্রাণের জন্য জেলায় যোগাযোগ করা হয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ পৌছে দেওয়া হবে।

(টিএ/এএস/জুলাই ২৯, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৩ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test