E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হালুয়াঘাটে জেএসসি ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের হিড়িক

২০১৬ জুলাই ৩১ ১২:৫৯:২৭
হালুয়াঘাটে জেএসসি ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের হিড়িক

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : হালুয়াঘাটে সরকারী নির্দেশ অমান্য করে জেএসসি ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের হিড়িক পড়েছে অত্র উপজেলার সকল মাধ্যমিক ও মাদরাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে।

জানা যায়, উপজেলায় ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১৩ টি দাখিল মাদরাসা এবং ২টি আলিম মাদরাসা সহ সর্বমোট ৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জেএসসি/জেডিসি ২০১৬ শিক্ষাবর্ষে ফরম পুরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, মডেল টেষ্ট পরীক্ষা এবং বার্ষিক চার্জ, ৫ মাসের অগ্রিম বেতন সহ বিভিন্ন প্রকার চাঁদা আদায়ের মহোৎসবে মেতে উঠেছে উপজেলার প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ।

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বোর্ড কর্তৃক বোর্ড ফি ১ শত টাকা কেন্দ্র ফি ১ শত ৫০ টাকা যা সর্বমোট ২ শত ৫০ টাকা নির্ধারণ করার থাকলে সমপরিমাণ টাকায় জেএসসি/জেডিসি ফরম পূরণে উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোথাও এ চিত্র দেখা যায় নি।

একাধিক পরীক্ষা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ সাংবাদিকদের জানায়, রশিদবিহীন অগ্রিম বেতন সহ বিভিন্ন চার্জের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩ শত টাকা থেকে শুরু করে সর্বনিম্ন ৫ শত টাকা আদায় করে নিচ্ছেন বলে জানায়। উপজেলার বিভিন্ন প্রধানগণের অতিরিক্ত অর্থ আদায় করায় খেটে-খাওয়া হত-দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জেএসসি পরীক্ষায় ফরম পূরণে অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এখানে শেষ নয় যারা উপবৃত্তির আওতায় নেই তাদেরকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত পরীক্ষার ফি’র পাশাপাশি বাড়তি টাকাও গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে উপজেলার সেন্ট এন্ড্রুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ললিত দ্রং বলেন, আমাদের পাওনা থাকে অনেক ছাত্র/ছাত্রীদের নিকট ৩ হাজার টাকা হিসেব হলে ২ হাজার টাকা দেন অভিভাবকগণ। জেএসসিতে ১৪৮ জন শিক্ষার্থী ফরম পূরুণ করেছেন ইতিমধ্যে। পরীক্ষার ফিস ৩ শত টাকা বেতন ১ হাজার ২ শত টাকা (১২ মাস) বাৎসরিক চাঁদা ৮ শত টাকা হিসেবে আদায় করা হচ্ছে।

হালুয়াঘাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক এস্তেহারুল ইসলাম মাসুদ বলেন, এ পর্যন্ত ২০৭ জন শিক্ষার্থী ফরম পুরণ করেছেন বোর্ড কর্তৃক ২ শত ৫০ টাকা পরীক্ষা ফিস এছাড়াও মাসিক বেতন আনুষাঙ্গিক খরচ আদায় করছেন বলে তিনি জানান।

বনপাড়া স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত ৮০ জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরুণ করা হয়েছে এবং ৪ শত ৫০ টাকা করে পরীক্ষার ফি আদায় করা হচ্ছে। যদিও অফিস সহকারী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ১ হাজার টাকা করে শিক্ষার্থীদের নিকট আদায় করা হচ্ছে এবং এ বিষয়টি প্রধান শিক্ষক কে প্রশ্ন করলে রশিদবিহীন টাকা গ্রহণ করেছেন তার কোন প্রমাণ নেই।

কুতিকুড়া করুয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু ছালেক ইব্রাহিম জানান, ১৮৬ জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ করা হয়েছে। অভিভাবকদের নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে ৮ শত করে আদায় করা হয়েছে। ধারা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাদেকুর রহমান বলেন, ১৫৮ জন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণ করেছেন এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুযায়ী ৬ শত টাকা ফি আদায় করা হয়েছে। শাকুয়াই বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৫ শত ৫০ টাকা হারে এবং উপবৃত্তি আওতায় নেই এমন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১ হাজার ৭ শত ৩০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এখানে ২ শত ততোধিক পরীক্ষার্থীর ফরম পূরুণ করেছেন বলে বিশ্বস্থসূত্রে জানা যায়।

শাকনাইট এম এল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহরাব আলী বলেন, ১০৪ জন পরীক্ষার্থীর ফরম পূরণ করেছেন। মডেল টেষ্ট পরীক্ষাসহ জেএসসি পরীক্ষার ফি বাবদ সর্বমোট ৫ শত টাকা আদায় করেছন।

এছাড়াও মাদরাসায় ৬০০-৮০০ এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫০০-১০০০ টাকা করে আদায় করার অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাবুল হাছান জানান, নির্ধারিত ফি’র আদলে যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।







(জেসিজি/এস/জুলাই ৩১,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test