E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরীয়তপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, মানুষের হাহাকার

২০১৬ আগস্ট ০১ ১৫:৪৮:২৪
শরীয়তপুরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, মানুষের হাহাকার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চল। ফলে, পদ্মা-মেঘনার পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে শরীয়তপুরের হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে। কঠিন সংকটময় অবস্থার মোকাবেলা করছে শত শত পরিবার। শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদী পশু নিয়ে মানুষ দিশেহারা হয়ে পরেছে। জেলার সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদ সীমার ৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপ্রতুল ত্রান সামগ্রী এসে পৌচেছে জেলা প্রশাসনের কাছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, শরীয়তপুর সদর, জাজিরা, নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ ও গোসাইরহাট উপজেলার ২৫ টি ইউনিয়নে প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে। ঘরে ঘরে পানি প্রবেশ করায় মানুষ এক ঘর থেকে আরেক ঘরে যেতে বশের সাঁকো ব্যবহার করছে।

জেলা প্রশাসন বলছে কিছু নগদ টাকা ও ট্রান সামগ্রী এসে পৌঁছেছে। ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে বিতরণের ব্যবস্থা করা চচ্ছে। বানের পানির সাথে প্রবল বর্ষণের কারনেও শরীয়তপুর জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা, মেঘনা, কীর্কিনাশা ও আড়িঁয়াল খাঁ নদের পানি অব্যাহত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পদ্মা নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টে বন্যার পানি বিপদসীমার ৫০ সেঃ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলার জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডুবা, পালেরচর, বড়কান্দি, বিলাসপুর, কুন্ডেরচর, নড়িয়া উপজেলার চরআত্রা, নওপাড়া, কেদারপুর, ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাঁচিকাটা, তারাবুনিয়া, গোসাইরহাট উপজেলার আলালপপুর, কোদালপুর, কুচাইপট্টি ,শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর, চন্দ্রপুর, চিতলীয়া ও ডোমসার ইউনিয়নের অন্তত ৮০ গ্রামের ২ লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে মারাত্মকভাবে। ভেঙ্গে পরেছে মানুষের পয়োঃনিস্কাসন ব্যবস্থা। মানুষ রান্না করে খাওয়ার মত অবলম্বন টুকুও হারিয়ে ফেলেছে। ফলে, মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে শরীয়তপুর জেলার একটি বৃহত্তর জনগোষ্ঠি। এদিকে গো খাদ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে ব্যাপকভাবে।

চরনড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাইন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী অসিমমদ্দিন মাদবর কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুরত খার কান্দি সরকারী জগৎ জীবনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড় কান্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পালেরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৭৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পানি ডুকে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে বলে জানিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা। এর মধ্যে ১০ বিদ্যালয় পাঠ দান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। এ ছারাও কাজিয়ারচর সলিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যা বিদ্যালয়, মান্নান মল্লিকের কান্দি উচ্চ বিদ্যালয়, ডি, এম পাইলট জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়সহ ৫টি উচ্চ বিদ্যালয়ে পানি প্রবেশ করে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।

বন্যা দূর্গত এলাকার পানি বন্দি আব্দুল হালিম, আব্দুল মজিদ, আজিজুল হক, মোর্শেদা বেগম, পারুল বেগম, রুপবান বিবি, সিরাজ বেপারী, তৈয়ব আলী মোল্য, জব্বার হাওলাদার ও রওশন আরা বেগম, বলেন, আমরা ৭-৮ দিন ধইরা পানির নিচে আছি। গরু ছাগল নিয়ে খুবই সমস্যা হইতেছে। আমাগো কাছে কেউ এহনো কোন সাহায্য নিয়ে আহে নাই। মানুষের খাওন যেমন তেমন গরু ছাগলের ঘাষ কুটা জোগার করাই কষ্ট।

চর নড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমনা আক্তার বলেন, বন্যার পানিতে আমাদের স্কুল ডুবে গেছে। স্কুলে যাওয়ার রাস্তা ও তলিয়ে গেছে। আমরা এখন ¯ু‹লে যেতে পারছি না। তাই স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে।

এদিকে দূর্গত এলাকার জেলা ত্রান কর্মকর্তাদের দীর্ঘ মেয়াদী বুনিয়াদি প্রশিক্ষন চলায় দূর্যোগের পর্যব্ষেন ও পরীবিক্ষনে সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা ত্রন শাখার এক কর্মকর্তা।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, বন্যার পানিতে জেলা নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অসংখ্য মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে। বন্যা মোকাবলার জন্য রবিবার জরুরী সভা করা হয়েছে। দূর্গত মানুষের জন্য ১ শত ২৫ মেট্রিক টন ত্রানের চাউল, ৭ লাখ নগদ টাকা ও শুকনা খাবারের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রান বিতরনের ব্যবস্থা চলছে।









(কেএনআই/এস/আগস্ট ০১,২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test