E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

প্রেমের টানে কারাগারে...

২০১৪ জুন ০৯ ২৩:৪৪:৪৭
প্রেমের টানে কারাগারে...

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : প্রেমের টানে কাঁটাতার পাড়ি দিয়ে বিয়ে হলেও শেষ রক্ষা হলো না তার। অতঃপর তাকে কারাগারে যেতে হলো। অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার দায়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাকে।

জানা গেছে, এপারে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামে আমজাদ আলীর বাড়ি। ওপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার মুরুটিয়া থানার শিকারপুর গ্রামে পম্পা মণ্ডলের বাড়ি। মাঝখানে হাঁটুপানির মাথাভাঙ্গা নদী।

তাদের পরিচয় হয় চার বছর আগে। এরপর মাথাভাঙ্গার দুই পাড়ে মাঝে মাঝে দেখা হতো তাদের। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ছিল নিয়মিত।

এভাবেই কাটে চারটি বছর। গত ১৪ মে পম্পা নদী পার হয়ে দেখা করতে আসেন আমজাদের সঙ্গে। পরে আমজাদ পম্পাকে বাড়িতে নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিক সম্পন্ন করেন। বিয়ে করে শুরু করেন সংসার।

গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় মানবাধিকার কর্মীদের সহায়তায় পুলিশ পম্পাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। অবৈধভাবে সীমান্ত্রের কাঁটাতার পার হওয়ার দায়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

প্রেমিক আমজাদ আলী জানান, বছর চারেক আগে নদী পার হয়ে শিকারপুর গ্রামে দুর্গাপূজা দেখতে গিয়েছিলাম। সেখানে অনুপ মণ্ডলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয় হয় অনুপের একমাত্র ছোট বোন পম্পা মণ্ডলের সঙ্গেও।

পম্পা স্থানীয় করিমপুর পান্না দেবী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সব সময় দেখা না হলেও মোবাইল ফোনে তাদের সম্পর্ক দিন দিন গভীর হতে থাকে।

গত ১৪ মে পম্পা কাঁটাতার পেরিয়ে আমজাদের কাছে ছুটে আসেন। তিনি পম্পাকে বাড়িতে নিয়ে যান। এর দুদিন পর মেহেরপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি কাজী অফিসে পম্পার নাম (আমেনা খাতুন) পরিবর্তন করে বিয়ে করেন আমজাদ। এরপর তারা আমজাদের বাড়ি ফিরে আসেন।

এদিকে পম্পা বাড়ি ছেড়ে চলে আসার পরপরই তার বড় ভাই অনুপ মণ্ডল স্থানীয় মুরুটিয়া থানায় আমজাদের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা করেন। কলকাতায় সংলাপ নামে একটি মানবাধিকার সংগঠনকে বিষয়টি জানান তিনি।

পরে সংলাপ কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতিকে জানিয়ে পম্পাকে উদ্ধারে সহায়তা কামনা করে।

সমিতির কুষ্টিয়া অফিসের কর্মীদের সহায়তায় পুলিশ রোববার পম্পাকে আমজাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কুষ্টিয়া কারাগারে পাঠায়।

আমজাদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভাই, পম্পাকে আমি কত ভালোবাসি তা বলে বোঝাতে পারব না। এটা বিধাতার দান। আমি তাকে বিয়ে করেছি। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কও হয়েছে। আমি কারাগারে গিয়ে ওর সঙ্গে থাকতে চাই। যেকোনো মূল্যে আমি পম্পাকে ফেরত চাই। এর জন্য আমি আইনি লড়াই করতে প্রস্তুত।’

এদিকে পম্পার পরিবারও একমাত্র মেয়েকে যেকোনোভাবে ফেরত নিতে চান। আগামী আগস্টে পম্পার প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা।

মহিলা আইনজীবী সমিতির কুষ্টিয়ার প্রকল্প কর্মকর্তা আইনজীবী কামরুন্নাহার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মেয়েটি ছেলেটিকে খুবই ভালোবাসে। এ দেশেই থাকতে চায় পম্পা। তবে মোবাইল ফোনই তার সর্বনাশ করেছে বলেও জানায় পম্পা। ভুল শোধরাবার কোনো উপায় নেই বলেও জানায়। সে সংসার করতে চায়।

পম্পাকে আইনি সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে জানান কামরুন্নাহার। পম্পাকে আইনি প্রক্রিয়ায় কারাগার থেকে বের করে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
(ওএস/এএস/জুন ০৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test