E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

নাগরপুরে রাস্তা-ঘাট আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি 

২০১৬ আগস্ট ০৭ ১৩:২৮:৪৮
নাগরপুরে রাস্তা-ঘাট আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি 

নাগরপুর (টাঙ্গাইল)প্রতিনিধি :যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানি কমতে শুরু করায় ঘরে ফিরতে শুরু করেছে বন্যাদূর্গত টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মানুষজন। জীবিকার তাগিদে ঘরে ফিরলেও অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে বেশ বেগ পেতে হবে উপজেলাবাসীর কারণ বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ী পুকুকের মাছ ও আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এবারের বন্যায় উজেলার ৪শ কি.মি. কাঁচা রাস্তার বেশির ভাগ রাস্তা বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ৬১ কি.মি. পাঁকা রাস্তার বেশির ভাগই বন্যার ¯স্রোতে ভেঙ্গে খানাখন্দকে পরিণত হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এবং উপজেলার প্রায় পুকুর প্লাবিত হয়ে বন্যায় মাছ ভেসে গেছে। পানি নামতে শুরু করার সাথে অনেকের ঘর-বাড়ী ভাঙ্গন ধরেছে। এছাড়া ধান, পাট শাক-সবজিসহ বিভিন্ন আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার বি এম রাশেদুল আলম জানান, উপজেলায় ৩৫শ হেক্টর বোনা আমন, রুপা আমন ১৩৫ হেক্টর, পাট ১৫০ হেক্টর, সবজি ১২৫ হেক্টর, কলা ১৪০ হেক্টর ও ৩০ হেক্টর লেবু বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পাটের ভাল আবাদ হয়েছে। কিন্তু অনেক পাট বন্যায় প্লাবিত হয়েছে এবং জাগ দেওয়া অনেক পাট বন্যায় ভেসে গেছে। বন্যার পানি যদি দ্রুত নেমে যায় তাহলে কৃষক অনেক ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যাবে। বন্যায় উপজেলার বেশির ভাগ পুকুর তলিয়ে পুকুরের মাছ বন্যায় ভেসে গেছে।

এব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অঃদাঃ) মো. সুলতান মাহমুদের কাছে বন্যায় প্লাবিত পুকুর ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেশির ভাগ পুকুর তলিয়ে পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমান তিনি বলতে পারেননি।

ভারড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুস এ প্রতিবেককে জানান, ভাড়রা ইউনিয়নের প্রায় ৯৫ ভাগ পরিবার এবার বন্যায় পানিবন্ধি। এছাড়া যমুনার ভয়াভহ বন্যার ¯স্রোতে ইতিমধ্যে ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড দুটি প্রায় অংশ রাক্ষসে যমুনা গ্রাস করে নিয়েছে। এবার বন্যার যে অবস্থা হয়তো বা ওয়ার্ড দুটির বাকী অংশটুকুও যমুনায় গ্রাস করে নিবে। তিনি আরো বলেন, এবার বন্যায় ক্ষতির তুলনায় ত্রাণ বরাদ্দ কম হওয়ায় সকল বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ পৌছানো সম্ভব হয়নি। তবে উপরে যোগাযোগ করে পরিমাণ মতো ত্রাণের ব্যাবস্থা করে সকল বন্যার্তদের ত্রাণ সামগ্রী পৌছিয়ে দেওয়া হবে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এবন্যায় উপজেলা সদর থেকে ধুবড়িয়া, ভাদ্রা, দপ্তিয়র, বেকড়া, সলিমাবাদ,গয়হাটা, মোকনা, পাকুটিয়া, সহবতপুর ও ভারড়া ইউনিয়নের প্রায় কাঁচা-পাঁকা প্রায় রাস্তা-ঘাট বন্যার ¯্রােতে ভেঙ্গে খানাখন্দকে পরিণত হয়ে প্রায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে কলিয়া, সরিষাজানী, পুগলী ও সিংজোড়া গ্রাম এবং ইসলামাবাদ আলিম মাদ্রাসার লোকজন শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের উপজেলা সদরের সাথে একমাত্র যোগাযোগের দৃষ্টিনন্দন রাস্তাটি বন্যার ¯্রােতে ভেঙ্গে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তা-ঘাট দ্রুত সংস্কার না করা হলে উপজেলার সদরের সাথে গ্রাম-গঞ্জের মানুষজনের যোগাযোগ ব্যাবস্থা কঠিন হয়ে পড়বে। একাধিক ব্যাক্তি জানান, দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর পর নাগরপুর উপজেলা এতো বড় বন্যার কবলে পড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় ত্রাণ সামগ্রী অপ্রতুল।

এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জিল্লুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়ায় বন্যার্তদের ত্রাণ পৌছিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং নিয়মিত বন্যার্তদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। প্রযোজনে উপরে যোগাযোগ করে পুনরায় ত্রাণের ব্যাবস্থা করা হবে।



(আরকেএসআর/এস/আগস্ট ৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test