E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নানা সমস্যার মুখে বুড়িমারী স্থলবন্দর!

২০১৬ আগস্ট ২৬ ১৬:২৩:৩৪
নানা সমস্যার মুখে বুড়িমারী স্থলবন্দর!

জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত, লালমনিরহাট : উত্তরাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের সম্ভাবনাময় বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে তিনটি দেশে পণ্য আমদানি-রফতানি হয়। এই বন্দর ব্যবহার করে ভারত, ভুটান ও নেপাল।

বন্দরটি ত্রিদেশীয় বাণিজ্যে ভূমিকা পালন করে আসলেও গুরুতপূর্ণ এই বন্দরটির গুরুত্ব অনুসারে হয়নি উন্নয়ন। আধুনিক ব্যবসা বাণিজ্যে ও প্রযুক্তির যুগে দিন দিন পিছিয়ে পড়ার পাশাপাশি নানা সমস্যার মুখে পড়ছে এ স্থলবন্দরটি। দ্রুত সমস্যা সমাধান হলে বছরে এ বন্দর হতে শতকোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব বলে জানান স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, বুড়িমারী স্থলবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। যে কেউ যখন তখন যেকোন ধরনের অপরাধ করে নিরাপদে স্থান ত্যাগ করতে পারবে। বন্দরে নিজস্ব পুলিশ ফাঁড়ি ও আনছার ব্যাটালিয়নের ফাঁড়ি নেই। বন্দরে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে নিরস্ত্র আনছার সদস্য। বন্দরে কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পরিবার পরিজনে বসবাস করার আবাসিক কোয়াটারও নেই। এছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব ভবন থাকলেও কাস্টম এবং ইমেগ্রেশন কর্মকর্তাদের কোন নিজস্ব ভবন নেই। বন্দর কর্তৃপক্ষের কয়েকটি ছোট ছোট রুমে গাদাগাদি করে কাষ্টম সুপারগণ কাজ করেন। এক কক্ষে একজন করে সুপার পদমর্যাদার কাস্টম কর্মকর্তাগণ দাফতরিক কাজ করার নিয়ম। কিন্তু বুড়িমারী স্থলবন্দরে ছোট রুমে একাধিক কাস্টম সুপার ও ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তারা কাজ করেন। ফলে এতে কাজ কর্মে স্বাভাবিক গতির পরিবর্তে ছন্দপতন ঘটছে।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, বন্দরের কার্যক্রম সচল রাখতে হলে রাস্তাটি ফোর লেন করা প্রয়োজন। পণ্য বোঝাই ট্রাকের ওজন মাপার যন্ত্র ওয়েট ব্রিজ রয়েছে একটি। কমপক্ষে দু ’টি ওয়েট ব্রিজ দরকার। ১৯৮৯ সালে শুল্ক স্টেশন হিসেবে মাত্র ১৮ একর জায়াগা নিয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দর চালু হয়। বর্তমান ব্যবসা বাণিজ্যের পরিধি বেড়েছে। তাই এখন কমপক্ষে ৩০ একর জমি প্রয়োজন বন্দরের জন্য। তবে বন্দরের আশপাশে অনেক জমি খালি পড়ে আছে। যা প্রয়োজনে কাজে লাগাতে পাড়ে সরকার। বুড়িমারী স্থলবন্দরে ট্রান্সশিপম্যান ইয়ার্ড নেই। বন্দরের কার্যক্রমে গতি আনতে পৃথক পৃথক ভবন প্রয়োজন। গত বছর রাজস্ব আয় হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা। এ বছর আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু বন্দরের সকল সমস্যা সমাধান হলে এ বন্দর হতে শতকোটি টাকা রাজস্ব আয় করা সম্ভব।

এ ব্যাপারে বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী কাস্টমস কমিশনার মোঃ এনামুল হক জানান, বর্তমান বন্দরের কার্যক্রম আধুনিক হয়েছে। ট্যাক্স নির্ধারণ ও আদায় কার্যক্রম কম্পিউটারের মাধ্যমে সফটওয়্যারে চলে। পণ্য আমদানি ও রফতানির তথ্য সার্ভারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জানিয়ে দেয়া হয়। তথ্য প্রযুক্তি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক নির্ভর। কিন্তু বুড়িমারী স্থলবন্দরে সর্বক্ষণিক বিদ্যুত ব্যবস্থা চালু নেই। এছাড়া বুড়িমারী স্থলবন্দরে দেশের কোন সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের বুথ বা অফিস নেই। ব্যবসায়ী ও কাস্টম কর্তৃপক্ষকে ব্যাংকিং কার্যক্রম করতে বন্দর হতে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে পাটগ্রাম উপজেলা সদরে যেতে হয়।

এ ব্যাপারে বুড়িমারী স্থলবন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট মোঃ সাঈদ জানান, বুড়িমারী স্থলবন্দরের বিপরীতে ভারতের চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দরে রেললাইন রয়েছে। বুড়িমারী বন্দরে জিরো পয়েন্ট হতে রেল সংযোগ নিতে মাত্র পাঁচশত মিটার রেললাইন বাংলাদেশ রেলওয়েকে বসাতে হবে। সরকার যদি সামান্য রেলপথ টুকু সংযোগ করে দেয়। তাহলে পাথর, কয়লাসহ অপচনশীল পণ্য রেলওয়ের মাধ্যমে পরিবহন করা সহজ হবে। এতে সরকারের যেমন রাজস্ব বাড়বে, তেমনি পণ্য পরিবহনের খরচ কমে আসবে।

(জেআইএস/এএস/আগস্ট ২৬, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test