E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শরীয়তপুর পলিটেকনিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জে আহত ৩০

২০১৬ আগস্ট ২৭ ১৮:৪২:৪৮
শরীয়তপুর পলিটেকনিকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জে আহত ৩০

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর পলিটেকনিকেল ইন্সটিটিউট এর শিক্ষার্থীরা  অধ্যক্ষের অপসারণ চেয়ে ১১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও ক্লাস বর্জন করেছে। শনিবার সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ১২ পর্যন্ত শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহা সড়কে বিক্ষোভ করে তারা।এসময় সড়কটি দিয়ে প্রায় দুই ঘন্টা সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে।

সকাল ১০টার দিকে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী কলেজের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি বুড়িরহাট বাজার ঘুরে আবার কলেজের সামনে এসে শেষ হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা সড়ক দখল করে বসে থাকলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠি চার্জ করে পুলিশ। পুলিশের সাথে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। পুলিশের নির্মম পিটুনিতে অন্তত ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশি এ্যাকশানের ভয়ে এক সময় ছাত্ররা কলেজের পেছনের দেয়াল টপকে বিলের ভিতর দিয়ে হাটু পানি পেরিয়ে পার্শ্ববর্তি গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নেয় আন্দোলনরত শতাধিক শিক্ষার্থী। গুরুতর আহত অবস্থায় সোহেল (১৭), সোহাগ (২০), আকাশ আহম্মেদ (১৯), মোস্তাফিজ (২২), রিয়াজ হোসেন (১৯), সোহেল মাহমুদসহ ৫জনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশের লাঠিপেটার অন্তত দেড় ঘন্টা পরে সেখানে উস্থিত হন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সাথে একটি সমঝোতা আলোচনার আয়োজন করেন পুলিশ প্রশাসন। সেখানে জেলা প্রশাসকসহ সহকারি পুলিশ সুপার তানভীর হায়দার শাওন, পালং থানার ওসি মো. খলিলুর রহমান ও পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষার্থী নাঈম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, অধ্যক্ষের জন্য সরকারি বাসভবন থাকা সত্বেও দীর্ঘদিন যাবৎ অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর ইনসটিটিউিটের একাডেমিক ভবনকে তার বাস ভবন বানিয়ে সেখানেই বসবাস করছে। তিনি ৮ বছর যাবৎ অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ছাত্রদের অনেক স্বার্থ বিরোধী কাজ করে নিজে লাভবান হয়েছেন।

গত ২ বছর থেকে আমরা ১১ দফা দাবি করে আসছি। দাবি গুলো হলো, কলেজে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠা করা, ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চত করার জন্য ছাত্রী নিবাস, কলেজের নির্দিষ্ট পোশাক দেয়া, কলেজ ক্যান্টিন চালুকরা, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই রাখা, বিজ্ঞান সরঞ্জাদি সচল করা, ম্যাডিকেল সুবিধা চালু করা,সকল বিভাগের ল্যাবের অকেজো যন্ত্রপাতি পরিবর্তন করে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোযন করা, কম্পিটার ল্যাবের সকল কম্পিটার সচল করা, শৌচাগার ব্যবহার উপযোগি করা ইত্যাদি।

আইপিসিটির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সোহেল বলেন, আমরা এগার দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সকালে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করি। মিছিল শেষে কলেজ গ্যাটে অবস্থান করলে পুলিশ আমাদের লাঠি চার্জ করে। এতে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়।

ইনসটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর খান দাবি করেন, তার অপসারিত হওয়ার মত কোন অন্যায় তিনি করেননি। কিছু শিক্ষক, মাহবুব নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের ইন্ধনের কারনে শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীরা বেপরোয়া হয়ে গেছে বলেও দাবি অধ্যক্ষের।

শরীয়তপুরের সহকারি পুলিশ সুপার তানভীর হায়দার শাওন বলেন, শিক্ষার্থীরা সড়ক দখল করে বিক্ষোভ করায় মৃদু লাঠি চার্জ করা হয়েছে।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাহমুদুল হুসাইন খান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের দাবি সমেত সমস্যার কথা শুনেছি। তাদের কিছু কিছু দাবি এখনই পূরণ করার মতো । সে সব দাবি জরুরী ভিত্তিতে পূরণ করার জন্য অধ্যক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাকি সকল বিষয়ে সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে।

(কেএনআই/এএস/আগস্ট ২৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test