E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে ভোগান্তিতে যাত্রীরা

২০১৬ সেপ্টেম্বর ২০ ১৬:৩৫:০৯
গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে ভোগান্তিতে যাত্রীরা

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : প্রিয়জনের সাথে ঈদুল আজহা’র আনন্দ উপভোগ করতে এসে ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, দূর্গাপুর, মোহনগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ এলাকার কর্মস্থলে ফেরা অধিকাংশ মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। মোহনগঞ্জ, জারিয়া, দূর্গাপুর, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ থেকে চট্টগ্রাম যেতে-আসতে গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনে ট্রেন পরিবর্তন করতে হয়। ফলে ট্রেনের জন্য দীর্ঘ প্রতিক্ষার প্রহর গুনতে হচ্ছে এ স্টেশনে।

এসব যাত্রীদের বসার ৩৪টি বেঞ্চ থাকলেও আজ অজ্ঞাত কারণে শূন্য। ১ম শ্রেণির বিশ্রামাগারটি ধারি (বাঁশের তৈরি মাদুর) রেখে ও তালা মেরে থাকচ্ছে সর্বক্ষণ বন্ধ। অপর বিশ্রামাগারটিতে যাত্রীদের প্রকৃতির কাজ সারতে নেই পানি ও গরমে আরাম পেতে নেই ফ্যান। বাধ্য হয়ে রেললাইনের স্লিপার ও গাছতলায় বসে থাকতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবত রেলওয়ে জংশনটিকে রি-মডেল স্টেশনের দাবিতে আন্দোলন হলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর/১৬) সরজমিনে দেখা যায়, বেসরকারি ট্রেনের ৬৫/৭০টাকার টিকেট বিক্রি হচ্ছে এখনও ২শ/৩শ টাকায়। চট্টগ্রামগামী নাসিরাবাদ ট্রেনে টিকেটে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, মালবাহী টিকেট স্টেশনে পরে বিনষ্ট হচ্ছে অথচ তাদের মাল বুকিং করে দিনের পর দিন স্টেশনে ফেলে রাখা হচ্ছে।

৪টি রেলপথের সংযোগস্থল। প্রতিদিন ২৮টি ট্রেনে হাজারো যাত্রীর উঠা-নামা। মল-মূত্র ত্যাগের জায়গা নেই। বসার ঠাঁই নেই। বসে থাকার নিরাপত্তা নেই। দূর্গন্ধে রুমাল আর আঁতর যেন নিত্য সঙ্গী এরই নাম গৌরীপুর জংশন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক শ্রেণির ঠিকাদার ও রেলওয়ে কর্মকর্তা প্রতি বছর সংস্কারের নামে লাখ লাখ টাকা আত্মাসাতের জন্যই এ স্টেশনটি রি-মডেল স্টেশনের প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছরই এ চক্রটি সংস্কারের নামে নামমাত্র রং লাগিয়ে আর দু’এক বস্তার সিমেন্টের কাজ করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। প্রথম শ্রেণী, দ্বিতীয় শ্রেণী ও সাধারণ যাত্রীদের বিশ্রামাগার লেখা আছে। স্টেশনে যাত্রীদের বিশ্রামাগার সংস্কার করা হলেও পানির সংযোগ নেই। বসার আসাবাবপত্র নেই। ২৪ঘন্টা ঝুলছে তালা।

স্টেশন মাস্টার মির্জা মো. শামছুল আলম জানান, টিসি ৬জনের স্থলে ১জন, পয়েসম্যান ৯জনের স্থলে ৪জন কর্মরত, বুকিং সহকারী ৭জনের স্থনে ৩জন কর্মরত রয়েছে। শূন্য রয়েছে ১জন পোর্টার, মালবাবু, ২জন টিআরসি, সুইপার ২জন, ক্যাবিন মাস্টার ১জন। কোন সুইপার না থাকায় মাত্র ১৫শ টাকায় কাজ করেন আঃ জলিল।

যাত্রীর সংখ্যা দিন দিন বাড়লেও বাড়েনি কোচ। বাদুড় ঝোল, ঠেশাঠেশি এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীরা ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। বসার সিট নেই। ট্রেনের জন্যে দোকানের বেঞ্চে নয়ত ফ্লোরো বসে অপেক্ষা করতে হয়। মুসাফিরখানাটি হকারদের দখলে। রেলওয়ে জংশনে গড়ে উঠেছে অর্ধশত অবৈধ দোকানপাট। ৩৫বছর পূর্বে মেয়াদ উর্ত্তীণ ঝূঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে অফিসিয়াল আর হাজারো যাত্রীর উঠানামা।

ময়লা-আবর্জনা আর দূর্গন্ধে পুরো জংশনটি ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে। শত বছরের পুরো রেলওয়ে জংশনের ভবনটি ১৯৮০সনে রেলওয়ে প্রকৌশল অধিদপ্তর ব্যবহার অনুপযোগী ও ঝূঁকিপূর্ণ হিসাবে রির্পোট প্রদান করে। তবু চলছে কাজ।

এ রেলপথে ৯০-৯৫ভাগ যাত্রীই টিকেট করে চলাচল করছে বলে বুকিং অফিস স্বীকার করেন। গৌরীপুর ও পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন প্রান্তের বুকিং করার মালামাল প্লাটফরমে যত্রতত্র পরে আছে। এ গুলো বৃষ্টিতে ভিজে আর রোদে শুকাচ্ছে। মাল সংরক্ষনের গুদামটি ব্যবহার অনুপযোগী। প্রায়ঃশ হচ্ছে চুরি। মাল রক্ষা করতে গিয়ে সম্প্রতি এক লেবার ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হন। স্টেশন মাস্টার মির্জা মো. শামছুল আলম জানান, স্টেশনটি রি-মডেল হয়ে গেলেই যাত্রীদের দুর্ভোগ কমে যাবে।

(এসআইএম/এএস/সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test