E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটে স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত

২০১৬ সেপ্টেম্বর ২১ ১৮:০৮:১২
হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটে স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নামেই ৫০ শয্যা হাসপাতাল জনবল সংকটে স্বাস্থ্য সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে, রোগীদের দুর্ভোগ।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার, এক্সরে, ইসিজি মেশিন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি বিদ্যমান থাকার পরও জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসব যন্ত্রের ব্যবহার চোখে পড়ছে না। সাধারণ জ্বর, সর্দি কাশি ব্যতীত জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলা প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণ। ভর্তিকৃত রোগীদেরও রয়েছে নানাবিধ সমস্যা। ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকলেও খাদ্যপথ্য মিলছে ৩১ জনের ভাগ্যে।

অতিরিক্ত রোগীদের বেলায় সরবরাহ বন্ধ রয়েছে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে। ফলে সেবা নিতে আসা রোগীদের দূর্ভোগের যেন অন্ত নেই। গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে, জেলা সিভিল সার্জন, স্মারক নং- সিএস/ময়মন/দরপত্র/প্রসাশন/২০১৫/২০০৭৭/১/৬ মূলে ৩১ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খাদ্যপথ্য সরবরাহ করার জন্য মেসার্স বি.কে.এম এন্টারপ্রাইজ-এর স্বত্তাধিকারী মোঃ আঃ খালেক কে ১ জানুয়ারি ২০১৬ ইং তারিখ থেকে ৩০ জুন ২০১৬ ইং তারিখ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ভর্তিকৃত রোগী খাদ্য ও পথ্যাদি সরবারাহের জন্য কার্যাদেশ প্রদান করে এবং অনুলিপি মহাপরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সহকারী পরিচালক সমন্বয় সহ উপজেলা শাখা কার্যালয় বরাবর প্রেরণ করে।

উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা যায়, অত্র উপজেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ২৯ হাজার জনসংখ্যা রয়েছে। বিশাল জনসংখ্যার খেটে খাওয়া হতদরিদ্র সহ সর্বস্তরের একমাত্র চিকিৎসাসেবার অবলম্বন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার। তারপরও একাধিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ রয়েছে শুন্য। যথাক্রমে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ১, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ১, গাইনী বিশেষজ্ঞ ১, কনসালটেন্ট এ্যানসস্টেসিয়া ১, সার্জারী বিশেষজ্ঞ ১ মেডিকেল অফিসার ২ ও ডেন্টাল সার্জন ১ জন করে সর্বমোট ৯জন থাকার কথা থাকলেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের একাধিক পদ শুন্য রয়েছে যেমন- সার্জারী, গাইনী ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। ২০১০ সনের ১৭ মে থেকে এ্যানসালটেন্ট পদটিতে যোগদানকৃত ডাঃ মোঃ হারুন অর রশিদ পেশনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করছেন অত্র উপজেলা বেতন কোষাগার থেকে। ৫ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল।

গত ২০১০ সনের ৯ জুলাই স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ নব-নির্মিত ভবনের উদ্বোধন করেন তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত ক্যপ্টেন (অবঃ) ডাঃ মুজিবুর রহমান ফফির ও সদ্য প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালযের প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিন এম.পি, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

উদ্বোধনের ৬ বৎসর পেরিয়ে গেলেও নামেই রয়েছে ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৩১ শয্যার চেয়েও জনবল কাঠামো কম নিয়ে দুক দুক করে চলছে চিকিৎসা সেবা। উদ্বোধনের পর মাস দুয়েক অপারেশন থিয়েটারটি সচল থাকলেও বর্তমানে (কনসালটেন্ট এ্যানসস্টেসিয়া) ডাক্তারের অভাবে বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার না থাকায় এক্স্ররে ও ইসিজি মেশিনটিও বিকল অবস্থায় রয়েছে। এ বিষয়ে মেসার্স বি.কে.এম এন্টারপ্রাইজ-এর স্বত্তাধিকারী মোঃ আঃ খালেক মুঠোফোনে-এ প্রতিবেদক কে জানায়, উদ্বোধনের পর পূর্বের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ন্যয় তিনিও ৫০ শয্যার হাসপাতালের বিধি মোতাবেক খাদ্যপথ্য সরবরাহ করেছিলেন।

সিভিল সার্জনের নির্দেশক্রমে ৩১ শয্যার হাসপাতালের নিয়মানুযায়ী খাদ্যপথ্য সরবরাহ করছেন। পূর্বের বকেয়া প্রায় ৭ লক্ষ টাকা বিল উত্তোলন করতে পাচ্ছেন না। তিনি আরও জানান, পূর্বের ঠিকাদার বাবু চয়ন কুমার সরকার প্রায় ৩ লক্ষ টাকা বিল উত্তোলন করতে পারেন নি। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর.এম.ও. শাহ্ ফয়সাল কাদের চৌধুরী বলেন, সিভিল সার্জনের নির্দেশক্রমে ৩১ শয্যার হাসপাতালের ন্যয় ভর্তিকৃত রোগীদের খাদ্যপথ্য সরবারাহ করা হচ্ছে নিয়মানুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এম.এ. কাদের-এ প্রতিবেদক কে জানায়, ডাক্তারদের শুন্যতায় রোগীদের স্বাস্থ্যসেবায় অনেকাংশে ব্যহত হচ্ছে। বিশেষ করে কনসালটেন্ট এ্যানেসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় অপারেশন থিয়েটারটি চালু হচ্ছে না। যাও একজন ছিলেন তিনি পেশনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছেন। হার্ড স্পেশালিষ্ট না থাকায় ইসিজি করাও সম্ভব হচ্ছে না।

লো-ভোল্টেজের এক্সরে মেশিনটি বিকল হয়ে আছে দীর্ঘদিন যাবত। ৩১ বেডের নিয়মানুযায়ী কমপ্লেক্সটি চলমান রয়েছে যদিও ৫০ বেডে উদ্বোধন করা হয়েছে। এছাড়াও স্টাফ কোয়ার্টার সংস্কারসহ সীমনা প্রাচীর নিমার্ণ করা একান্ত প্রয়োজন উল্লেখ করেন তিনি।

(জিসিজে/এএস/সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test