E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

লোহাগড়ায় মধুমতীর ভাঙনের কবলে সাত বিদ্যালয়

২০১৬ অক্টোবর ০৩ ১৬:২৭:৫১
লোহাগড়ায় মধুমতীর ভাঙনের কবলে সাত বিদ্যালয়

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : মধুমতী নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সাতটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যে কোনো সময় বিদ্যালয়ের ভবনগুলো নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এতে উদ্বেগ ও আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা।

উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘাঘা, চরমঙ্গলপুর, পি চরসুসাইল, টিকরগাতী, মাকড়াইল, তেতুলিয়া ও শিয়েরবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মধুমতীর ভাঙনের কবলে পড়েছে।

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার এসব বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ঘাঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৯৮ সালে চার কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবন তৈরি হয়। এ ভবনেই চলে পাঠদান ও অফিসের কার্যক্রম। ৪০ শতাংশ জমিতে বিদ্যালয়। এর বাইরে রয়েছে লাগোয়া খেলার মাঠ। মধুমতীর ভাঙনে খেলার মাঠ প্রায় বিলীন হয়েছে। নদী থেকে মাত্র ২০ ফুট দূরে রয়েছে ভবনটি। ভাঙন অব্যাহত আছে।

বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুক্তা খানম, সৈকত ও বাদল বলে, স্কুলে আসতে ভয় লাগে। কখন যে নদীতে ভবনসহ চলে যাই। তাই সব সময় নদীর দিকে তাকিয়ে থাকি। খেলার মাঠ নদীতে চলে যাওয়ায় খেলাধুলা করতে পারিনা।

প্রধান শিক্ষক পরিতোষ কুমার পাল বলেন, আতঙ্কের পাশাপাশি আমরা উদ্বিগ্ন। কারণ ভবন নদীতে গেলে এসব ছেলে মেয়ে নিয়ে কোথায় আশ্রয় নিব ? তখন পাঠদান ব্যাহত হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। অনেক লেখালেখিও হয়েছে, কিন্তু কাজ হচ্ছে না।

চরমঙ্গলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, খেলার মাঠ পুরোটাই নদীতে চলে গেছে। নদী থেকে বিদ্যালয় ভবনটির দূরত্ব এখন মাত্র ৩০ ফুট। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাহাবুদ্দিন মোল্লা জানালেন, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নদী ভাঙন বেড়েছে। যেকোনো সময় বিদ্যালয় ভবন নদীতে বিলীন হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। অভিভাবক ফজর আলী মোল্লা বলেন, বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা আতঙ্কে থাকি। ভবন নদীতে গেলে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে এ নিয়েও অমরা উদ্বিগ্ন।

পি চরসুসাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান জানান, খেলার মাঠের অর্ধেকাংশ নদীতে চলে গেছে। ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি এই প্রথম নদী গর্ভে যাবে। শিয়েরবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিপক কুমার বিশ্বাস জানান, ২০১৩ সালে বিদ্যালয় ভবন নদীতে ভেঙ্গে গেলে বাজারের এক পাশে ছাপড়া তুলে কোনোরকম চলছিল পাঠদান কার্যক্রম। আবার নদী এগিয়ে এসেছে। এখন মাত্র ১৫০ ফুট দূরে।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান বলেন, এসব বিদ্যালয়ের ভাঙনের তথ্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোহাগড়া উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ এইচ এম আল জহির বলেন, এসব এলাকার ভাঙনরোধে গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত তিনবার ঊর্ধ্বতন কর্র্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। কিন্তু কোনো খবর আসেনি।

(আরএম/এএস/অক্টোবর ০৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০২ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test