E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জকিগঞ্জ সীমান্তে ১০ বাংলাদেশীকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

২০১৬ অক্টোবর ১৩ ১৮:৫১:৩৪
জকিগঞ্জ সীমান্তে ১০ বাংলাদেশীকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি : ভারতের শিলচর কারাগারে শিশু মহিলাসহ আটক ১০ বাংলাদেশী নাগরিক বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগের পর বৃহস্পতিবার বিকেলে জকিগঞ্জ কাস্টমঘাট দিয়ে বাংলাদেশে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় কতৃপক্ষ।

ভারতের পক্ষে করিমগঞ্জ জাহাজঘাটের বিএসএফ ক্যাম্প কামান্ডার এসি বিনোদ কুমার দেব নাথ ও করিমগঞ্জের ইমিগ্রেশন অফিসার - বাংলাদেশের পক্ষে বিজিবি জকিগঞ্জ ক্যাম্প কমান্ডার আব্দুল লতিফ ও ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ মোশারফ হোসেনের হাতে হস্তান্তর করেন।

বাংলাদেশে ফিরত আসা ব্যক্তিরা হলেন, জকিগঞ্জ পৌর এলাকার হোসনাবাদ গ্রামের জয়দেব লালের ছেলে বাসুদেব রায় (২২), শান্তি লাল বিশ্বাসের মেয়ে অর্চনা বিশ্বাস (৩০) ও তার শিশু গোবিন্দ বিশ্বাস (৬), গোপাল বিশ্বাস (৪), সুলতানপুর ইউনিয়নের খাদিমানের সিদ্দেক আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (২৮), বারঠাকুরী ইউপির উত্তরকুল গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে শামিম আহমদ (২৮), সোনাসার গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে শাবলু আহমদ (২৫), কানাইঘাটের দনা ৯ গ্রামের রইছ আলীর ছেলে বুরহান উদ্দিন (৩২), কসকনপুর ইউনিয়নের আইয়র গ্রামের মতছিন আলীর ছেলে এনাম উদ্দিন (৩৩), মানিকপুর ইউপির মাতারগ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে ওলিউর রহমান (৩৫)।

জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন অফিসের ইনচার্জ মোশারফ হোসেন জানান, অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে বাংলাদেশী এসব নাগরিক গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে করিমগঞ্জ জেলে সাজা ভোগ করে । সকলেই সাজা ভোগের পর অতিরিক্ত দিন শিলচর কারাগারে বন্দি ছিলো।

ভারতের শিলচর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বাংলাদেশে আসা আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে তিনি আমলশীদ গ্রামের শিহাব নামের এক দালালের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে নিলাম বাজার পুলিশের হাতে আটক হন। পরে আদালত তাকে ৩ মাসের সাজা প্রদান করে। সাজা খেটেও তার মুক্তি মিলেনি। অতিরিক্ত ৩৯ মাস কারাভোগ করেছেন।

জকিগঞ্জ পৌর এলাকার হোসনাবাদ গ্রামের বাসু দেব বলেন, আড়াই বছর পূর্বে দালালের মাধ্যমে তিনি, অর্চনা বিশ্বাস ও দুই শিশু সন্তান গোবিন্দ ও গোপালকে নিয়ে বারঠাকুরী সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন। দুইদিন পর ভারত পুলিশের হাতে আটকের পর আদালতের রায়ে ২ মাস ১০ দিন জেল ও ২ হাজার টাকা জরিমানা হয়। এরপর তারা ভারতের শিলচর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন।

এনাম আহমদ বলেন, আড়াই বছর পূর্বে দালালের মাধ্যমে তিনি আমলশীদ সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়ে নিলাম বাজারে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে আদালতের রায়ে করিমগঞ্জ জেলে ১ মাস সাজা শেষে শিলচর জেলে বন্দি ছিলেন।

বুরহান উদ্দিন ও ওলিউর রহমান জানান, কানাইঘাটের দনা সীমান্ত দিয়ে তারা ভারতের মেঘালয়ে অনুপ্রবেশ করে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে আদালতের রায়ে ২ বছর ৩ মাস সাজা খেটে অতিরিক্ত দিন বন্দি ছিলেন।

শামিম আহমদ, শাবলু ও বুরহান উদ্দিন জানান, ভারতের করিমগঞ্জ জেলে তারা ২ বছর সাজা ভোগ করে অতিরিক্ত দিন শিলচর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি ছিলেন।

এদিকে ভারত থেকে ফেরত আসা ব্যক্তিদের আত্মীয় স্বজন খবর পেয়ে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন অফিসে ভিড় জমান। জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন ও বিজিবি ফেরত আসা ব্যক্তিদের অভিভাবক সনাক্ত করে তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। ভারত ফেরতরা জানিয়েছে, তারা ভারতের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সহযোগীতায় দেশে ফিরতে পেরেছে।

ভারতের শিলচর থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসা যুবকরা জানিয়েছে, ভারতের করিমগঞ্জ ও শিলচর জেলে বাংলাদেশের জকিগঞ্জ উপজেলার প্রায় শতাধিক পুরুষ মহিলা বন্দি জীবন যাপন করছে। ফেরত আসা বাংলাদেশীদের মাধ্যমে শিলচর জেলে আটককৃত বাংলাদেশীরা দেশে ফিরতে উর্ধতন কতৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা আরও জানান, আটককৃত বাংলাদেশীদের পরিচয় বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিশ্চিত করলেই ভারত কারাগার থেকে মুক্তি পাবে বাংলাদেশীরা। ভারতের কারারক্ষীদের হাতে বাংলাদেশীরা চরম নির্যাতন শিকার হচ্ছেন বলেও তারা অভিযোগ করেন।

(এসপি/এএস/অক্টোবর ১৩, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test